করোনা রুখতে যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন
করোনাভাইরাস যেভাবে জাঁকিয়ে বসেছে, সাবধান হয়ে চলা ছাড়া আর কিছু করার নেই। তাই যতটা সম্ভব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তুলতে হবে। যার অন্যতম রাস্তা ঠিক খাবার খাওয়া এবং বেঠিক খাবার যথাসম্ভব বর্জন করা।
যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত- কোমল পানীয়, প্যাকেটের ফলের রস, কফি ও অন্যান্য ক্যাফেইনসমৃদ্ধ খাবার, মিষ্টি-চকোলেট-কেক-পেস্ট্রি, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই-চিকেন উইং অন্যান্য তেলে বা ঘিয়ে ভাজা খাবার, অ্যালকোহল ইত্যাদি।
বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, নিয়মিত এ সব খেলে শরীরে যে ক্ষতি হয় তা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। বৃদ্ধি করে রোগ জটিলতা।
- কোমল পানীয়
কোমল পানীয় এর গায়ে যদি ‘ডায়েট’ লেখা থাকে তাহলে অনেকে খুব স্বস্তি বোধ করেন। আর উপাদানের তালিকায় যদি নানা রকম ভিটামিন-মিনারেলের নাম থাকে তাহলে তো কথাই নেই। কিন্তু কতটুকু কার্যকর এই কোমল পানীয়।
এ বিষয়ে হরমোন বিশেষজ্ঞ সতীনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “১০০ শতাংশ ফলের রস লেখা বোতল বা টেট্রাপ্যাককে বাদ দেয়ায় বুদ্ধিমানের। কারণ গোটা ফল চিবিয়ে খেলে শরীরে সুগার ঢোকে ধীরে ধীরে, সঙ্গে পাওয়া যায় ফাইবার। ফলে শরীর সুগারকে খুব ভাল ভাবে সামলে নিতে পারে। কিন্তু ফলের রস খেলে একসঙ্গে অনেকটা সুগার শরীরে চলে ঢুকে যায়, যার ফলে স্বাস্থ্যকর উপায়ে তাকে সামলাতে হিমশিম খায় শরীর। বেশির ভাগ সময় পারে না। ফলে যারা নিয়মিত বেশি করে ফলের রস খান, তাদের ওজন বাড়ে, ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়। এছাড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে আনে, এর ফলে করোনা সংক্রমণে জটিলতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া প্যাকেটের ফলের রসে মেশানো থাকে কৃত্রিম রং, গন্ধ, সংরক্ষক, যার কোনটাই শরীরের জন্য ভাল নয়।
- কফি ও ক্যাফেইনসমৃদ্ধ খাদ্য
সকালে যাদের কফি না খেলে ঘুম কাটে না, তারা অবশ্যই খাবেন। দুপুরে কাজের মাঝে আর এক কাপ চলতে পারে। তার পর আর নয়। চিনি বা সুগার-ফ্রি মিশিয়ে তো নয়ই। কারণ দুটিই ক্ষতিকর। তা ছাড়া অতিরিক্ত কফি বা ক্যাফেইনসমৃদ্ধ খাদ্য খেলে শরীরে কর্টিজোল হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নষ্ট করে দেয়। এছাড়া বিকেলের পর খেলে রাতে ঘুম হয় না। তাতেও ভেঙে পড়ে প্রতিরোধ ক্ষমতা। অতএব বেশি কফি না খাওয়ায় ভালো।
- মিষ্টি-চিনি-কেক-পেস্ট্রি
দিনে একটা মিষ্টি না খেলে অনেকের ভালো লাগে না। কেক-পেস্ট্রি বা চকোলেট-টফি খাওয়া কারও কাছে নেশার মতো। কিন্তু সমস্যা হল এতে চিনির কোনও গুণ নেই। বরং ক্ষতিই হয় বেশি। প্রদাহের প্রবণতা বেড়ে যায়। পাল্লা দিয়ে কমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। বেশি মিষ্টি খেলে ওজন বাড়ে। অতএব, চিনি বর্জন করুন। এসবের পরিবর্তে ফ্রুট সালাদ, খেজুর, কিশমিশ খেতে পারেন।
- চপ-কাটলেট-ভাজাভুজি
যে কোন উপায়ে তেলে ভাজা খাবার বাদ দিন। কারণ ডুবো তেলে ভাজা খাবারে প্রচুর পরিমাণে লবণ থাকে। আর লবণে কাজ হল শরীরে পানি ধরে রাখা ও উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা থাকলে তা বাড়িয়ে দেওয়া। এছাড়া ভূমিকা আছে ট্রান্স ফ্যাট ও স্যাচুরেটেড ফ্যাটের, এ সব খাবারে যা প্রচুর থাকে। এদিকে নিয়মিত ভাজা খেলে ওজন বাড়ে সাথে বাড়তে পারে কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের আশঙ্কা।
- অ্যালকোহল
অ্যালকোহল একেবারে বাদ দিতে পারলেই ভাল। বাড়াবাড়ি করলেই করোনার যত কো-মর্বিডিটি আছে, ওবেসিটি, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, সবের আশঙ্কা বাড়ে। কমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। মাঝেমধ্যে বেশি খেলেও নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগের আশঙ্কা বাড়ে।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা