শেষ পর্যন্ত অন্যায়ের সমর্থক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেন নেইমার!

263

স্পোর্টস ডেস্ক: ব্রাজিলসহ ও নেট দুনিয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার নেইমারকে নিয়ে। সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর আমন্ত্রণে ইসরায়েল সফরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে এই সমালোচনার জন্ম দেন তিনি। তার এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্রাজিলের ফুটবল ভক্ত, রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও।

গত সোমবার সফররত ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারোকে সঙ্গে নিয়ে জেরুজালেমের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র দেয়ালে (ওয়েস্টার্ন ওয়াল) প্রার্থণায় অংশ নেন নেতানিয়াহু। প্রার্থণা শেষে এক ভিডিও বার্তায় দুই নেতা নেইমার ও দু’বারের সার্ফিং চ্যাম্পিয়ন গ্যাব্রিয়েল মেদিনাকে ইসরায়েল সফরের আমন্ত্রণ জানান। ভিডিও বার্তায় দুই নেতা বলেন, ‘প্লিজ ইসরায়েলে আসো। নেইমার ও মেদিনা, তোমরা দুজনেই আমন্ত্রিত। সবাইকে নিয়ে ইসরায়েলে ঘুরে যাও। জেরুজালেম তোমাদের অপেক্ষায় আছে।’

একদিন পরই এক ভিডিও বার্তায় দুই নেতার আমন্ত্রণ গ্রহণ করে শিগগিরই ইসরায়েল ভ্রমণে যাওয়ার কথা জানান বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার।

ভিডিও বার্তায় নেইমার বলেন, ‘হ্যালো বিবি (নেতানিয়াহুর প্রচলিত নাম) ও বোলসোনারো। আমাদের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ। আমরা আসছি।’

নেইমারের ইসরায়েল সফরের খবরে ক্ষেপেছেন তার সমর্থক শুরু করে ব্রাজিলের অনেক বড় বড় রাজনীতিবিদ এমনকি সাবেক প্রেসিডেন্ট দিলমা রুসেফও।

নেইমারের সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করে সাবেক ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট দিলমা রোসেফ বলেন, ‘যখন ব্রুনা (নেইমারের সাবেক বান্ধবী ব্রুনা মারকেজ) আফ্রিকা সফর করে টর্নেডোতে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের পাশে দাঁড়াচ্ছ, সেখানে নেইমার বোলসোনারো, এমন একজন প্রধানমন্ত্রী যিনি কিনা দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত আর আরেকজন (নেতানিয়াহু) যার সৈন্যরা ফিলিস্তিনের শিশুদের গুলি করছে তাদের কাছ থেকে আমন্ত্রণ পাচ্ছে। সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ায় ব্রুনা কিছুই হারায়নি, বরং সে নিজেকে মুক্ত করেছে।’

ব্রাজিলিয়ান টুইটারে ক্ষোভ ঝেড়ে লিখেছেন, ‘নেইমারের কোনো ধারণাই নেই তিনি কি করতে চলেছেন। তিনি এমন একজন ইসরায়েলপন্থী ব্যক্তিকে (ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট) সমর্থন করছেন যিনি একজন দুর্নীতিবাজ ও খুনি নেতানিয়াহুর পক্ষে কাজ করছেন।’

আরেকজন টুইটারে লিখেছেন, ‘নেইমার আর মেদিনা শেষ পর্যন্ত অন্যায়ের সমর্থক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেন।’

ক’দিন পরেই ইসরায়েলে সাধারণ নির্বাচন। ফলে নেইমারের ঘুরতে যাওয়া নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাছাড়া এর আগে নয়া ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্টের প্রতি সরাসরি সমর্থন জানিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন নেইমার। ডানপন্থী ও ইহুদী ধর্মের অনুসারী বোলসোনারো তার নিজ দেশ ব্রাজিলে দুর্নীতি আর নারী বিদ্বেষের কারণে তুমুল সমালোচিত। 

তবে নেইমার এই প্রথম ইসরায়েল ভ্রমণ করছেন বিষয়টা মোটেই এমন নয়। এর আগে ২০১৩ সালে ইসরায়েলে শান্তি সফরে গিয়েছিল বার্সেলোনা। সেই দলে মেসি, জাভিদের সঙ্গে ছিলেন নেইমারও। সেবার ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের হাজারো মানুষ তাদের একনজর দেখতে রাস্তায় নেমে এসেছিল।

তবে গত বিশ্বকাপের আগে এক প্রীতি ম্যাচ খেলতে ইসরায়েল যাওয়ার কথা ছিল আর্জেন্টিনা দলের। কিন্তু সমালোচনার মুখে সেই ম্যাচ বাতিল করে দেন মেসিরা। এজন্য ইসরায়েল ক্ষুব্ধ হলেও সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছিলেন তারা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.