এ সময় সুস্থ থাকতে কী খাবেন !

224

বিশ্ববাসী নাজেহাল করোনাভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে । এই রোগের COVID-১৯ নাম দেওয়া হয়েছে । এই রোগী শনাক্ত হয়েছে আমাদের দেশেও এবং তাদের চিকিৎসা চলছে। এই রোগ থেকে বাঁচার জন্য ও চিকিৎসার জন্য চীনা চিকিৎসকরা সঠিক খাদ্য গ্রহণ ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণকে ২য় স্থানে রেখেছেন । প্রথমত, প্রতিরোধ নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই, এক্ষেত্রে দুটি বিষয় মুখ্য- ১। পরিপাকতন্ত্রের অণুজীবীয় পরিবেশ ঠিক রাখা এবং ২। ইনফ্লামেশন প্রতিরোধ করা।

আমাদের অন্ত্রে যে অণুজীবগুলো বিদ্যমান তাদের কার্যক্রম চালিয়ের যাওয়ার জন্য অন্ত্রের পরিবেশ ঠিক রাখা খুবই জরুরি। তা না হলে এ অণুজীবগুলো ট্রান্সলোকেশনের মাধ্যমে রক্তে চলে আসতে পারে ফলে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের ইনফেকশনের ঝুঁকি থেকে যায় ।

তাই এই বিষয়টিতে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের ব্যবহার খুব উপকারী ভূমিকা রাখতে পারে। প্রোবায়োটিকের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হলো – দই, যা ঘরেও বানানো সম্ভব। তাই প্রতিদিন ১/২ কাপ দই খাওয়া যেতে পারে। ইনফ্লামেশন রোধে এন্টি-ইনফ্লামেটরি ডায়েটের ভূমিকা অনেক। কোষের ক্ষতি রোধে আমরা নিত্যদিনের তালিকায় যা যা রাখব তা হলো-

আদা : আদা পানি, আদার রস , কাঁচা আদা কুচি খাওয়া যাবে।
৫ মিলি আদার রসের সঙ্গে ১ চা চামচ মধু ও ২/৩ টা তুলসী পাতা খুব ভালো পানীয় হতে পারে সব বয়সী সদস্যদের জন্য ।

জিঙ্ক : প্রতিদিন ন্যূনতম ১২ মিলি গ্রাম জিঙ্ক দেহের চাহিদা তা পূরণ হতে পারে ১ মুঠো যে কোনো বাদাম, ডার্ক চকোলেট ৪ কিউব অথবা, ২০ গ্রাম মুগ।

রসুন : রসুনে আছে এলিসিন যার এন্টি-মাইক্রোবিয়াল গুণাগুণ ভাইরাসের আক্রমণকে মন্থর করতে সক্ষম। খালি পেটে ৩/৪ কোষ কাঁচা রসুন খান।

তুলসী পাতা : খুসখুসি কাশি প্রতিকারে ৫টি তুলসী পাতা সেদ্ধ গরম জল খেতে পারেন।

কালিজিরা : কালিজিরা আমরা প্রতিদিন খাবারে রাখতে পারি, শুধু ধর্মীয় দিক থেকে না, বিভিন্ন গবেষণাতেও প্রমাণিত এর ঔষধি গুণাগুণ। এর আছে antioxidant properties, এছাড়াও এটি immunomodulator, analgesic, antimicrobial, antiinflammatory, spasmolytic, bronch odilator, hepatoprotective, antihypertensive. তাই প্রতিদিন অন্তত ৫ গ্রাম (১ চা চামচ) কালিজিরা খাওয়া উচিত।

ভিটামিন সি : এই ভিটামিন প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৫০০ মিলি গ্রামই যথেষ্ট। প্রয়োজনের অধিক ভিটামিন সি গ্রহণের ফলে পাতলা পায়খানা হতে পারে । তাই প্রতিদিন ১টা কমলালেবু, ১টা সবুজ আপেল অথবা, যে কোনো টক ফল ১৫০ গ্রাম গ্রহণ করলেই চলবে।

ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড : বাসায় ভালোভাবে রান্না করা যে কোনো মাছ খেতে হবে প্রতিদিন একবেলা অন্তত তবে তা সামুদ্রিক হলে ভালো হয় । তবে যারা জোগাড় করতে পারছেন না তারা ১ মুঠো অঙ্কুরিত ছোলা খেতে পারেন। সবচেয়ে সহজলভ্য হলো তিসি। ১ চা চামচ তিসি শুকনো ভাজা ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎস।

টমেটো : এতে আছে লাইকোপেন যা antioxidant তাই ইনফ্লামেশন রোধে বিশেষ উপকারী। টমেটো কাঁচা বা স্যুপ করে খাওয়া যাবে।

সজনে পাতা বা শাক : ইনফেকশন প্রতিরোধে সজনে পাতা সেদ্ধ গরম জল বা স্যুপ তা না হলে দেশীয় পন্থায় শাক হিসেবে খান। যদি পাতলা পায়খানা থকে তবে জিঙ্ক, সোডিয়াম, পটাশিয়াম সাপ্লিমেন্ট করতে হবে ও আর এস, ডাবের পানি থেকে। তখন টক ফল বা ফলের রস খাওয়ানো যাবে না। যারা ইন্টেন্সিভ কেয়ারে থাকবেন তাদের টিউবের মাধ্যমে খাওয়াতে হবে। কো-মরবিডিটি মাথায় রেখে ক্যালরি, প্রোটিনের সমতা রাখতে হবে। যে কথাগুলো লিখলাম তা Chines Hand Book of COVID-১৯ Prevention and Treatment-এর আলোকে। তাই এ সময় আমাদের যথেষ্ট সচেতন ও যতœবান হতে হবে। মনে রাখতে হবে প্রতিকার নয় প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম।

Leave A Reply

Your email address will not be published.