প্রথমবার এমপি হয়েই মন্ত্রী, কে এই মোমেন?
ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করে নির্বাচিত হয়েছেন ড. আবুল কালাম আব্দুল মোমেন। সংসদ সদস্য হওয়ার পর তাঁকে মন্ত্রীও বানানো হয়েছে। দায়িত্ব পেয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়য়ের।
১৯৪৭ সালের ২৩শে আগস্ট সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন আব্দুল মোমেন। তার পিতার নাম আবু আহমদ আব্দুল হাফিজ। তিনি ছিলেন সিলেট জেলা মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা। তার মা সৈয়দা শাহার বানু ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক এবং সিলেটে নারী জাগরণের অগ্রদূত। সদ্য সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত তার ভাই।
আব্দুল মোমেন ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বি.এ এবং ১৯৭১ সালে উন্নয়ন অর্থনীতিতে এম.এ অর্জন করেন। তিনি হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে ১৯৭৯ সালে এমবিএ পাস করেন। এরপর ঢাকার সেন্ট্রাল কলেজ থেকে আইনশাস্ত্রে ১৯৭৬ সালে এলএলবি অর্জন করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়, বোস্টন, ম্যাসাচুসেটস থেকে ১৯৮৮ সালে অর্থনীতিতে পিএইচডি সম্পন্ন করেন।
কর্মজীবনে তিনি ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত শিল্প, বাণিজ্য, খনিজ সম্পদ ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৮ সালে আব্দুল মোমেন সৌদি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (এসআইডিএফ) এর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা নির্বাচিত হন। ২০০৩ সালে রিয়াদ কম্পাউন্ড বোমা হামলার সময় তিনি সৌদি আরব ত্যাগ করে ম্যাসাচুসেটসে এ ফিরে আসেন। সেখানে তিনি ফ্রেমিংহ্যাম স্টেট কলেজের অর্থনীতি ও ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগে পড়াতেন। ২০০৯ সালের আগস্ট মাসে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি নিযুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি সেখানে শিক্ষকতা চালিয়ে যান।
এছাড়া তিনি মেরীম্যাক কলেজ, সালেম স্টেট কলেজ, নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়, ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়, এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনেডি স্কুল অফ গভর্নমেন্ট এ অর্থনীতি ও ব্যবসায় প্রশাসন পড়িয়েছেন।
২০১০ সালে তিনি ইউনিসেফ কার্যনির্বাহী পরিষদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৭ তম অধিবেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি ২০১৪ সালে জাতিসংঘের দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সভাপতি ছিলেন।
জাতিসংঘ বাংলাদেশ মিশনের সাবেক এ স্থায়ী প্রতিনিধি ব্যক্তিত্ব, জ্ঞান, প্রজ্ঞা, দক্ষতা দিয়েই ধাপে-ধাপে বিভিন্ন সফলতা অর্জন করে শেষ পর্যন্ত মন্ত্রীত্বের আসনে বসেছেন।