সবার সহযোগিতায় নিউইয়র্কে জালালাবাদ ভবন হবে ইনশাল্লাহ : মাহতাবুর রহমান নাছির

656

নিউইয়র্ক: বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবী, গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সিআইপি মর্যাদায় ভূষিত, আল-হারামাইন পারফিউম গ্রুপ অব কোম্পানী এবং এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড-এর চেয়াম্যান মাহতাবুর রহমান (নাছির) বলেছেন সিলেটের মানুষ অনেক উপরের মানুষ, সিলেটীরা সম্মান দিতে জানেন, সম্মান করতে জানেন। আর সিলেটীরাই পৃথিবীতে বাংলাদেশকে পরিচিত করেছে। আমরা সিলেটীরা আগেও ভালো ছিলাম, এখনো ভালোই আছি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সিলেটবাসীদের প্রাণের দাবী ‘জালালাবাদ ভবন’ সবার সহযোগিতায় নিউইয়র্কে হবে ইনশাল্লাহ। জালালাবাদ ভবন দাবী নয়, প্রয়োজন। সবাই মিলেই এই ভবন ক্রয় করবো। খবর ইউএনএ’র।

শিল্পপতি মাহতাবুর রহমান (নাছির)-এর সাথে প্রবাসী জালালাবাদবাসীদের মতবিনিময় সভায় তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। গত ৪ আগষ্ট শনিবার সন্ধ্যায় সিটির এস্টোরিয়াস্থ জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইনক অফিসে এই সভার আয়োজন করা হয়। সংগঠনের সভাপতি বদরুল হোসেন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভা মঞ্চে ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক’র সভাপতি কামাল আহমেদ, সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন কুনু, এসোসিয়েশনের ট্রাষ্টি বোর্ড সদস্য এম এ সালাম ও সাবেক সভাপতি আব্দুল বাসেত, বদরুন নাহার খান মিতা, উপদেষ্টা আব্দুস শহীদ ও আজিজুর রহমান, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রানা ফেরদৌস চৌধুরী, বিশিষ্ট শিল্পপতি জহিরুল ইসলাম। সভা পরিচালনা করেন এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চৌধুরী।

সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মওলানা ছয়ফুল হক সিদ্দিকী। এরপর এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে শিল্পপতি মাহতাবুর রহমান (নাছির) কে পুষ্পস্তবক দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। পরবর্তীতে শুরু হয় বক্তৃতা পর্ব। এছাড়াও অনুষ্ঠানে শিল্পপতি মাহতাবুর রহমান (নাছির)-কে এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে প্ল্যাক এবং সংগঠনের আজীবন সদস্য পদ প্রদান করা হয়।

আলোচনা পর্বে আলোচনায় অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল ও মুজাহিদুল ইসলাম, সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক ও টাইম টেলিভিশন-এর সিইও আবু তাহের, ফিলাডেলফিয়া থেকে আগত জিলকারনাইল জায়গীরদার, বাংলাদেশ বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতি ইউএসএ’র সভাপতি মস্তফা কামাল, ওয়েল কেয়ার-এর সিনিয়র ম্যানেজার সালেহ আহমেদ, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম ও সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক সিরাজউদ্দিন আহমেদ সোহাগ, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট চৌধুরী সালেহ, নজমুল ইসলাম চৌধুরী, আব্দুর রহীম বাদশা, মিনহাজ আহমেদ সাম্মু, নূরে আলম জিকো, গোলাম রব্বানী চৌধুরী, এসোসিয়েশনের সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা তাদের বক্তব্যে শিল্পপতি মাহতাবুর রহমান (নাছির)-কে শুধু সিলেট বা বাংলাদেশ নয়, বক্তরা তাকে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের একজন সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সত্যিকারার্থেই তিনি একজন আন্তর্জাতিকভাবে বরেন্য মানুষ। তার সম্মানে আমরাও সম্মানিত। তিনি তার মেধা, যোগ্যতা আর সততা দিয়ে ব্যবসায় যেমন সফল হয়েছেন, তেমনী ব্যক্তি জীবনেও একজন সফল মানুষ। পাশাপাশি একজন পারিবারিক বন্ধুন সম্পন্ন সমাজকর্মী। এজন্যই তিনি পরিবারের সদস্যদের কথা ভেবে, সবাইকে পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ রাখতে সিলেটে সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রসাদসম বাড়ী তৈরী করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সফল ব্যবসায়ী আর সফল মানুষ হিসেবে তিনি সবার পথ প্রদর্শক।

বক্তারা বলেন, শিল্পপতি মাহতাবুর রহমান (নাছির) একজন জনদরদী, সমাজসেবী মানুষ। তিনি দেশ ছাড়াও প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য সাধমত সহযোগিতা করে চলেছেন। তার গর্বে আমরাও গর্বিত। বক্তারা তাদের বক্তব্যে শিল্পপতি মাহতাবুর রহমান (নাছির)-কে একজন সৎ, সমাজসেবী, মানবতাবাদী আর সিংহ পুরুষ হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং নিউইয়র্কে ‘জালালাবাদ ভবন’ নির্মাণে শিল্পপতি মাহতাবুর রহমান (নাছির)-কে পাশে চান, তার সার্বিক সহযোগিতা চান।
সভায় শিল্পপতি মাহতাবুর রহমান (নাছির) আরো বলেন, আমি আপনাদেরই লোক। কেননা, ১৯৮১ সালে নগদ ৮৭ হাজার ডলার সাথে নিয়ে ব্যবসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলাম। তখন একমাস ১০দিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করার পর ফিরে যেতে হয়। কিন্তু পরবর্তীতে আবার যুক্তরাষ্ট্র আসি এবং ১৯৯১ সাল থেকে এই দেশের নাগরিক হিসেবে যাতায়াত করছি। আর তাই আমি মনে করি আমি আপনাদেরই লোক।

তিনি বলেন, আমার কোন ব্যাংক লোন নেই। যা করেছি বাবার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে পরিশ্রশ করে সততার সাথেই করেছি। মধ্যপ্রাচ্যে কোন বাংলাদেশী মারা গেলে তার প্রতিষ্ঠান থেকে ঐ ব্যক্তির মরদেহ বাংলাদেশে পাঠানোর খরচ বহন করা হয়। বলেন, আমার মায়ের মৃত্যুর পর সিলেটে হোটেল না বানিয়ে ১১তলা হাসপাতাল তৈরী করেছি মানুষের সেবার জন্য। যে হাসপাতালে ইন হাউজ ডাক্তার পাওয়া যায়। সকল সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। এই হাসপাতালে অপ্রয়োজনে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলবে না। তিনি বলেন, আমরা সবাই মিলে নিউইয়র্কে জালালাবাদ ভবন নির্মাণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবো। যাতে অন্যেরা উৎসাহিত হন, অনুপ্রাণিত হন। আর এই কাজ একা করা সম্ভব নয়। সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে বাংলাদেশ আমাদের। তাই দেশের জন্যও সবার করনীয় রয়েছে। জালালাবাদ এসোসিয়েশন তাকে সম্মানিত করায় তিনি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বক্তব্য শেষে তিনি নিজেই বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন।

সভায় বদরুল হোসেন খান তার বক্তব্যে দুবাই-তে শিল্পপতি মাহতাবুর রহমান (নাছির)-এর সাথে প্রথম সাক্ষাতের কথা স্মরণ করে বলেন, আমি যাকে দেখিনি, চিনিনা, জানিনা, তারপরও জালালাবাদবাসীদের কথা ভেবে যখন দুবাই যাই এবং সাক্ষাৎ পাই তাতে আমি অভিভুত। কেননা, তিনি সেখানে আমাকে যে সম্মান দিয়েছেন, তা আমার প্রাপ্র ছিলো না, সেই সম্মান ছিলো জালালাবাদবাসীদের সম্মান। তিনি বলেন, যে মানুষ সকালে এক দেশে ব্রেকফাস্ট করেন, আরেক দেশে দুপুরে লাঞ্চ করেন আর আরেক দেশে রাতে ডিনার করেন, তার মতো লোককে পাওয়া কঠিন থাকার পরও বিয়ানীবাজারের লোক হিসেবে তিনি যে ব্যবহার দেখিয়েছেন তাতেই বুঝা যায় তিনি একজন ভালো মনের মানুষ, সত্যিকারের মানুষ। আমার বিশ্বাস তিনি নিজের মতো করেই জালালাবাদ ভবন ক্রয়ে যা করার তাই করবেন।

সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চৌধুরী বলেন, জালালাবাদ ভবন ক্রয়ের ব্যাপারে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা সভার সহযোগিতায় জালালাবাদ ভবন-কে একটি কমিউনিটি সেন্টারে পরিণত করতে চাই। এব্যাপারে তিনি সবার সার্বিক সহযোগিতা কামননরা করেন এবং মতবিনিময় সভাটি সফল করায় উপস্থিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সভায় এসোসিয়েশনের সাবেক কর্মকর্তা ও উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ্যরে মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পেট্রোন বদরুল হক, মোস্তফা কামাল, জয়নাল আবদীন ও শামসুল আবদীন, সাবেক উপদেষ্টা একলিমুজ্জামান নুনু, দি অপ্টিমিস্ট-এর প্রতিষ্ঠাতা রানা চৌধুরী, মৌলভীবাজার ডিষ্ট্রিক্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী ফজলুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা তফাজ্জল করিম, মনিরুজ্জাম চৌধুরী ও আবু বকর, ফেঞ্চুগঞ্জ অর্গানাইজেশনের সভাপতি আব্দুস শহীদ দুদু, এমসি কলেজ এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি বেলাল উদ্দিন, ওসমানী স্মৃতি পরিষদের সভাপতি নাজমুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট কবি ও গীতিকার গৌছ উদ্দিন, বিশিষ্ট রাজনীতিক লুৎফুর রহমান হেলাল, রাজনগর উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি হেলালুর রহমান খান, কমিউনিটি নেতা ছদরুন নূর, হেলিম উদ্দিন, সৈয়দ কামাল হোসেন, মনজুর চৌধুরী জগলু, চমন এলাহী, মিজানুর রহমান, সৈয়দ নাজমুল হাসান কোবাদ, বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম, শাহ গোলাম রহীম শ্যামল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও সংগঠনের বর্তমান কর্মকর্তাদের মধ্যে সহ সভাপতি শফি উদ্দিন তালুকদার, সহ সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ, কোষাধ্যক্ষ আতাউল গণি আসাদ, কার্যকরী সদস্য সৈয়দ লোকমান মিয়া, মহিলা সম্পাদিকা সুতিপা চৌধুরী, ক্রীড়া সম্পাদক বোরহান আহমেদ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, সভায় বক্তারা সভাপতি বদরুল হোসেন খান ও সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চৌধুরীর নেতৃত্বে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের বর্তমান কমিটি কর্মকান্ডের বিশেষ করে শিল্পপতি মাহতাবুর রহমান (নাছির)-এর সাথে চমৎকার ব্যবস্থাপনায় মতবিনিময় সভার আয়োজনের ব্যাপক প্রশংসা করেন এবং জালালাবাদ ভবন ক্রয় বা নির্মাণে এই সভা মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। দলমত নির্বিশেষে নেতৃস্থানীয় বিপুল সংখ্যক জালালাবাদবাসী সভায় যোগ দেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.