রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে জাতিসংঘের স্পষ্ট রোডম্যাপের প্রয়োজন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

205

ঢাকা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেছেন, মানবিক বিবেচনায় বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে তবে তাদের প্রত্যাবর্তন বিষয়ে জাতিসংঘের স্পষ্ট একটি রোডম্যাপ তৈরি প্রয়োজন।

তিনি বলেন, এর মাধ্যমেই এই সঙ্কটের সমাধানে মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও স্থায়ী ভাবে প্রত্যাবর্তন সম্ভব হবে। কিন্তু গত চার এটা বছরে সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জে জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন এস. বার্গনার এর সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠককালে তিনি গতকাল এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কক্সবাজারে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দীর্ঘসময় ধরে অবস্থানের নেতিবাচক দিক বিশেষ করে ঐ এলাকায় বসবাসরত মূল জনগোষ্ঠীর উপর এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। অতিসত্ত্বর প্রত্যাবাসন শুরু না হলে এটি কেবল এই এলাকারই সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটাবে না, বরং তা এতদাঞ্চল ও এর বাইরেও অস্থিরতা তৈরি করবে।

বিশেষ দূতকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভাষানচর প্রকল্পের কথা অবহিত করেন এবং বলেন এখানে রোহিঙ্গাদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। ভাষানচরেও জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রদানের বিষয়টি গুরুত্ব দেয়ার বিষয় তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি কোভিড-১৯ পরিস্থিতির উন্নতি হলে বিশেষ দূতকে ভাষানচর পরিদর্শনে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান।

মিয়ানমারে যাতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের উপযোগী অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা এবং অচিরেই যাতে প্রত্যাবাসন কাজ শুরু করা যায় সেজন্য জাতিসংঘ সদস্যরাষ্ট্রসহ মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ও বাইরের সকল অংশীজনদের সাথে বিশেষ দূত যোগাযোগ ও আলোচনা অব্যাহত রেখেছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন। এছাড়া ভাষানচর পরিদর্শন করতে বিশেষ দূত তার আগ্রহের কথা জানান।

পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘের পিস অপারেশন বিভাগের প্রধান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রুয়া এর সাথে ভার্চুয়াল এক বৈঠক মিলিত হন।

এসময় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন ও অংশগ্রহণের প্রতিশ্রুতি পূনর্ব্যক্ত করেন তিনি। শান্তিরক্ষীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জাতিসংঘের পিস অপারেশন বিভাগকে ধন্যবাদ জানান তিনি। নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকার উদাহরণ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তিরক্ষী বিশেষ করে নারী শান্তিরক্ষীগণের ত্যাগের কথা স্মরণ করেন।

তিনি আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ল্যাক্রুয়াকে অনুরোধ জানান যেন পিস অপারেশন বিভাগ নারী শান্তি রক্ষীগণকে আরও উৎসাহিত করতে বিশেষ ডকুমেন্টারিসহ অন্যান্য প্রচার সামগ্রী প্রস্তুত করে। এছাড়া জাতিসংঘ সদর দপ্তর ও মাঠ পর্যায়ের পিস কিপিং সংশ্লিষ্ট উচ্চ পদসমূহে আরও বেশি বাংলাদেশী সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য জেনারেল ল্যাক্রুয়াকে অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সূত্র: বাসস

Leave A Reply

Your email address will not be published.