আজ ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’

229
ঢাকা: আজ ১৪ই ফেব্রুয়ারি; সেন্ট ভ্যালেন্টাইনস ডে। বাংলাদেশে দিনটি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হিসেবে পরিচিত। সারাবিশ্বের ন্যায় দেশের তরুণ-তরুণীরাও দিবসটি নানা আয়োজনে উদযাপন করেন। 

পৃথিবীতে বেশির ভাগ গান, গল্প, কবিতা, উপন্যাসের কেন্দ্রবিন্দু ভালোবাসা। ভালোবাসার জন্য কেউ সাম্রাজ্য ত্যাগ করেছে আবার কেউ কেউ দিয়েছে জীবনও। ভালোবাসাকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম স্থাপনা তাজমহল। ধ্বংস হয়েছিল ট্রয় নগরীও। তবে ভালোবাসার প্রত্যয়কে চিরঞ্জীব করে রাখতে ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে এসেছে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ বা ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’।

‘আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল’ এ ভাবনায় কাটে মানব-মানবীর সত্ত্বা। তবে ভালোবাসা দিবসে প্রেমিক-প্রেমিকা মুখ্য নয়। যেকোনো ভালোবাসায় এদিন জড়াতে পারেন যেকেউ।

ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে দেশে নানা আয়োজন হয়। এবার করোনাভাইরাসের জন্য সব আয়োজনে পড়েছে ভাটা।  আজকের এই দিনে মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা, ই-মেইল কিংবা ফেসবুকে জানান দেয়া হবে ভালোবাসার কথা। প্রিয়জনকে দেয়া হবে নানা উপহার।

ইতিহাসের তথ্যানুযায়ী, খ্রিস্টান পাদরি ও চিকিৎসক ফাদার সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নামানুসারে দিনটির নাম করা হয় ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’। অনেকের মতে ভ্যালেন্টাইনের নামানুসারেই পোপ প্রথম জুলিয়াস ৪৯৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইনস ডে হিসেবে ঘোষণা করেন। 

জানা যায়, ২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ই ফেব্রুয়ারি খ্রিস্টানবিরোধী রোমান সম্রাট গথিকাস আহত সেনাদের চিকিৎসার অপরাধে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে ফাঁসিতে ঝুলান। মৃত্যুর আগে ফাদার ভ্যালেন্টাইন তার আদরের একমাত্র মেয়েকে একটি চিঠি লিখেন, যেখানে তিনি নিজের নাম সই করে লিখেছিলেন ‘ফ্রম ইওর ভ্যালেন্টাইন’। সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের মেয়ে এবং তার প্রেমিক মিলে পরের বছর থেকে বাবার মৃত্যুর দিনটিকে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ হিসেবে পালন শুরু করেন। যুদ্ধে আহত মানুষকে সেবার অপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে ভালোবেসে দিনটি বিশেষভাবে পালন করার রীতি কালক্রমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।

একই বিষয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে কিছুটা ভিন্ন মতও আছে। অনেকের মতে খ্রিস্টান ধর্ম প্রচারের অভিযোগে রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস খ্রিস্টান পাদরি ও চিকিৎসক সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে বন্দি করেন। কারণ, তখন রোমান সাম্রাজ্যে খ্রিস্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। বন্দি অবস্থায় ভ্যালেন্টাইন জনৈক কারারক্ষীর দৃষ্টিহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এতে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের জনপ্রিয়তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই দিনটি ছিল ১৪ই ফেব্রুয়ারি। একসময় ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে পোপ সেন্ট জেলাসিউও প্রথম জুলিয়াস ভ্যালেন্টাইনস স্মরণে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইনস দিবস ঘোষণা করেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি সমগ্র ইউরোপ এবং পরবর্তীতে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।

এদিকে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মসূচি পালন করবে। এছাড়া টেলিভিশন, পত্রিকাসহ নানা মাধ্যম দিবসটি উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.