‘ফাহিম ছিলেন পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠির ভাগ্য উন্নয়নের কারিগর’
যুক্তরাষ্ট্র: পাঠাও, গোকাডা, পিকআপের প্রতিষ্ঠাতা এবং তথ্য-প্রযুক্তি জগতের মেধাবি উদ্ভাবক ফাহিম সালেহ’র হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২২ জুলাই বুধবারও নিউইয়র্কে মানববন্ধন হলো। বাংলাদেশিদের এ আয়োজনে ভিনদেশীরাও অংশ নেন স্বতস্ফূর্তভাবে। অংশগ্রহণকারি সকলেই দিপ্ত প্রত্যয়ে উচ্চারণ করেন ফাহিমের মত আর কোন পরিশ্রমী-মেধাবি স্বপ্নবাজ যুবকের প্রাণ যাতে এভাবে না ঝরে।
কর্মসূচি থেকে বলা হয়, মানবতার সামগ্রিক কল্যাণে মেধার বিনিয়োগ ঘটাতে যাওয়া ফাহিম শুধু একজন মানুষ ছিলেন না, তিনি ছিলেন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির ভাগ্য উন্নয়নের অন্যতম অবলম্বন।
উল্লেখ্য, লোয়্যার ম্যানহাটানে ইস্ট হিউস্টন স্ট্রিটে নিজ এপার্টমেন্ট থেকে ফাহিমের (৩৩) খণ্ড-বিখণ্ড লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর তিনদিন পর ১৭ জুলাই শুক্রবার সকালে ফাহিমের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারি টাইরেস ডেভন হ্যাসপিল (২১)কে তদন্ত কর্মকর্তারা গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে সেকেন্ড ডিগ্রি হত্যা মামলার চার্জশিট প্রদান করা হয়েছে ক্রিমিনাল কোর্টে।
পুলিশ জানায়, ফাহিমের একাউন্ট থেকে ৯০ হাজার ডলার চুরির জন্যে ইতিপূর্বে হ্যাসপিলকে বরখাস্ত করা হয় এবং চুরিকৃত অর্থ কিস্তিতে ফেরৎ দানের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু হ্যাসপিল সে অনুযায়ী অর্থ ফেরৎ না দিয়ে ফাহিমকেই নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
ফাহিমের এই হত্যাকান্ডে ক্ষুব্ধ তরুণ-সমাজের পক্ষ থেকে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানে শোক-প্রতিবাদ র্যালি হচ্ছে। ভার্চুয়াল মিটিংয়ে ফাহিমের স্মৃতিচারণের পাশাপাশি এমন একজন মেধাবি-পরিশ্রমী উদ্যোক্তা হত্যার ফলে এগিয়ে চলা অভিবাসী সমাজকে থামিয়ে দেয়ার জঘন্য অপচেষ্টা করা হলো বলে অভিমত পোষণ করা হচ্ছে।
২১ জুলাই মঙ্গলবারের র্যালি হয় ফাহিমের এপার্টমেন্টের নিকটবর্তী স্থানে। আয়োজনে ছিল মণিকা হকের নেতৃত্বাধীন ‘স্ট্রং উইমেন কমিউনিটি এ্যাম্পাওয়ারমেন্ট’। তরুণ-তরুণী ছাড়াও ছিলেন বয়স্ক আমেরিকানরাও। সকলের হাতেই ছিল ফাহিমের ছবি সম্বলিত প্লেকার্ড। গভীর শ্রদ্ধা আর ভালাবাসার আকুতি। কর্মসূচির সময় থমকে যায় সরব টাইমস স্কোয়ার। এহেন নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞে লিপ্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন সকলে। ১৭ আগস্ট ম্যানহাটান ক্রিমিনাল কোর্টের সামনে এই মামলার শুনানীর দিন বড় ধরনের একটি র্যালির প্রয়োজনীয়তার কথাও বলা হয় এখান থেকে।