আবারও ধরা খেলেন ডা. সাবরিনা, জেকেজি থেকে বেতন নেয়ার স্লিপ পুলিশের হাতে
ঢাকা: করোনার নমুনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণা ও জালিয়াতিতে আলোচিত জেকেজি হেলথকেয়ারের সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করে আসছেন ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী। তবে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের এই চিকিৎসক বিতর্কিত ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে মাসে মাসে বেতন নেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। জেকেজি হেলথ কেয়ারের অফিস থেকে অন্যান্য কাগজপত্রের সঙ্গে সাবরিনার বেতন উত্তোলনের ‘মানি রিসিট’ উদ্ধার করেছে গোয়েন্দারা।
অনুমোদন ছাড়াই টাকার বিনিময়ে করোনার নমুনা সংগ্রহের পর টেস্ট না করেই ভুয়া রেজাল্ট দিয়ে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণার ঘটনায় দায়ের করা মামলা একজন তদন্ত কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ডা. সাবরিনার স্বাক্ষরযুক্ত তিনটি বেতনের স্লিপ তাদের হাতে রয়েছে।
জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট হাসপাতালের রেজিস্টার চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেকেজির চেয়্যারম্যান হয়ে সরকারি চাকরির বিধিমালা ভঙ্গ করায় ডা. সাবরিনাকে এরই মধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ডা. সাবরিনা এবং তার স্বামী জেকেজির সিইও আরিফুল হক চৌধুরী বর্তমানে মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ। দুজনকেই রিমান্ডে নিয়ে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। দুজনের দেওয়া তথ্যে অসঙ্গতি থাকায় বুধবার তাদের মুখোমুখিও করা হয়। ওই সময় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। স্বামী-স্ত্রী একে অ্ন্যকে দোষারোপ করে মারমুখি হয়ে ওঠে। পরে তদন্ত কমকর্তাদের হস্তক্ষেপে তারা শান্ত হয়।
তাদের মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনা সম্পর্কে মামলার একজন তদন্ত কর্মকর্তা জানান, তারা পরস্পরকে তুই-তুকারি করছিলেন এবং একজন অপরজনের জীবন ধ্বংসের জন্য দায়ী করছিলেন।
প্রসঙ্গত, করোনার নমুনা সংগ্রহ করে কোনো পরীক্ষা না করেই প্রতিষ্ঠানটি ১৫ হাজার ৪৬০ জনকে ভুয়া রিপোর্ট সরবরাহ করেছে। একটি ল্যাপটপ থেকে গুলশানে তাদের অফিসের ১৫ তলার ফ্লোর থেকে এই মনগড়া করোনা পরীক্ষার প্রতিবেদন তৈরি করে হাজার হাজার মানুষের মেইলে পাঠায় তারা। তাদের কার্যালয় থেকে জব্দ ল্যাপটপ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর করোনা টেস্ট জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। কেজির টেস্টে জনপ্রতি নেয়া হতো সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা। বিদেশি নাগরিকদের কাছে জনপ্রতি এক শ ডলার। এ হিসাবে করোনার টেস্ট বাণিজ্য করে জেকেজি হাতিয়ে নিয়েছে সাত কোটি ৭০ লাখ টাকা। করোনা মহামারিতে মানুষের জীবন নিয়ে এমন নির্মম বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত জেকেজির চেয়ারম্যান ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও তার স্বামী প্রতারক আরিফ চৌধুরী।