অস্ট্রেলিয়ায় এক বাংলাদেশি নবজাতককে ঘিরে উচ্ছ্বাস
আঞ্চলিক স্বাস্থ্য অধিদফতরের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেজে ছবি পোস্ট দিতেই অভিনন্দনের জোয়ার। স্থানীয় সাংসদ কমেন্টে বলে দিলেন, এই ছেলে উওলিনগন হাসপাতালের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বার্থ ইউনিটের ম্যানেজার তো রীতিমতো ফুল-মিষ্টি পাঠিয়ে দিয়েছেন। যাকে ঘিরে এত আলোচনা তার বয়স মাত্র দুদিন। নাম আন্দালিব রহমান।
ঘটনার এখানেই শেষ নয়। অস্ট্রেলিয়ার উপকূলীয় শহর উওলিনগনের শতবর্ষী পত্রিকা ইলাওয়ারা মারকুরিতেও বুধবার সকালে জন্ম নেয়া বাচ্চাটিকে নিয়ে খবর প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু কেন?
বাগেরহাটের বাসিন্দা তাহেরা উর্মি এবং মাহবুবুর রহমানের ছেলের যেখানে জন্ম হয়েছে, সেটি অস্ট্রেলিয়ার বহুল আলোচিত একটি বিলাসবহুল হাসপাতাল। একবার দেখলেই পাঁচতারকা হোটেলের মতো মনে হবে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে হাসপাতালটির বার্থ ইউনিট সম্প্রতি নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, এমন আধুনিক বার্থ ইউনিট অস্ট্রেলিয়ায় তো বটে; গোটা পৃথিবীতে বিরল। এই ইউনিট চালুর পর আন্দালিবেরই প্রথম জন্ম হলো।
গত মঙ্গলবার নতুন ইউনিটের কার্যক্রম শুরু হয়। সেদিন কোনো গর্ভবতী ডেলিভারির জন্য হাসপাতালে যাননি। বুধবার স্থানীয় সময় রাতে মাহবুবুর রহমান তার স্ত্রী তাহেরাকে নিয়ে সেখানে যান। তাদের সন্তান পৃথিবীতে আসে গভীর রাতে, সাড়ে তিনটার দিকে।
ডাক্তারদের আয়োজন দেখে নতুন মা হওয়া উর্মি রীতিমতো উচ্ছ্বসিত। ইলাওয়ারাকে তিনি বলেন, ‘অনেক ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে নিজেকে। খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু নতুন ইউনিটে ঢোকার পর সত্যি দারুণ অনুভূতি হয়েছিল।’
প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স করতে উর্মি তার স্বামীকে নিয়ে ১৮ মাস আগে অস্ট্রেলিয়ায় যান।
তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেকে মা-বাবা বাংলাদেশ থেকে দেখতে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মহামারীর কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। এত সুন্দরভাবে ওকে পৃথিবীতে আনায় কর্তৃপক্ষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’
এই হাসপাতালটিতে প্রতি বছর প্রায় ২ হাজার ৫০০ শিশুর জন্ম হয়। ২২ বছরের ক্যারিয়ারে অনেক শিশুর জন্ম দেখেছেন মিসেস আতকিন। কিন্তু নতুন ইউনিটের মতো এমন সুবিধা দেখে নিজেই এখন অবাক এই নারী চিকিৎসক।
‘স্থানীয় নারীরা বিশ্বমানের হাসপাতালে সন্তান প্রসবের সুযোগ পাচ্ছে, এটি ভাবতেই ভালো লাগছে। একজন নারীর জন্য যা যা দরকার, তার সব সুবিধা আমরা রেখেছি।’