চাল কাণ্ড, এবার ফেঁসে গেলেন ইউএনও ও ওসি
নিউজ ডেস্ক: ভোলার বোরাহানউদ্দিন উপজেলায় সরকারি চাল চুরি করায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করার পর আসামিকে ছেড়ে দেয়া হয়।
অপরাধের প্রকৃত বিচারের পথ রুদ্ধ করে তাকে নামমাত্র শাস্তি দেয়ায় ইউএনও মো. বশির উদ্দিন গাজী ও ওসি এনামুল হকের বিরুদ্ধে সুয়ামোট মামলা করেছে ভোলার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
বৃহস্পতিবার ভোলার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফরিদ আলম এ মামলা করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে জানা গেছে, ত্রাণের চাল আত্মসাৎ ও কালোবাজারে বিক্রির দায়ে ইউএনও মো. বশির গাজী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আসামি আব্দুল মান্নানের নিকট থেকে ২৫ হাজার টাকা এবং সেলামতকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে মুক্তি প্রদান করেন।
বিদ্যমান ঘটনার সংবাদে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এটা ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ ধারার (১) ও (২) ধারার অপরাধ, যা স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক বিচার্য্ এবং যার সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত। একই সঙ্গে বর্ণিত ঘটনা যদি পেনাল কোড-এর ১৮৬০-এর ৩৭৯ ধারা (যার সর্বোচ্চ সাজা ৩ বছর কারাদণ্ড) ৪০৩ ধারা যার (সর্বোচ্চ সাজা ২ বছর কারাদণ্ড) ৪১১ ধারা যার (সর্বোচ্চ সাজা ৩ বছর কারাদণ্ড) ৪১৪ ধারা (যার সর্বোচ্চ সাজা ৩ বছর কারাদণ্ড)সহ আরও অন্য ধারায় অপরাধ মর্মে গণ্য করা যায়।
ইউএনও এখতিয়ারবিহীন অর্থদণ্ড আরোপের মাধ্যমে অপরাধীকে দায়মুক্তি প্রদান করেছেন এবং রাষ্ট্রীয় আইন, ফৌজদারি বিচার কাঠামো ও বর্তমান সরকারের নীতির সুস্পষ্ট লংঘন করা হয়েছে মর্মে সংবাদ দৃষ্টে প্রতীয়মান হয়।
অপরাধের প্রকৃত বিচারের পথ রুদ্ধ করে তাকে নামমাত্র শাস্তি তথা জরিমানা করে দায়মুক্তি দেয়ায় ইউএনও’র বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুয়ামোট মামলাটি দায়ের করা হয়।
আগামী ২৮ এপ্রিল মোবাইল কোর্ট পরিচালনার যাবতীয় ডকুমেন্টস ও আইনানুগ ব্যাখ্যাসহ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফরিদ আলমের কোর্টে উপস্থাপনের জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। বোরহানউদ্দিন থানার ওসিকেও একই নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার ভোলা বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুতুবা নতুনবাজারে মো. ছেলামত নামের এক ব্যবসায়ীর দোকান হতে ৯ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধার করেন বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. বশির গাজী।
পরে মোবাইল কোর্টে ব্যবসায়ী ছেলামতকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং ছেলামত যার কাছ থেকে চাল ক্রয় করেছেন ওই ডিলার আ. মান্নানকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন ইউএনও।
বোরহানউদ্দিন থানা ওসি মু. এনামুল হক জানান, শুনেছি সুয়ামোট মামলা হয়েছে। মামলার কপি হাতে এলে বলতে পারব।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. বশির গাজী বলেন, একটি অনলাইন পত্রিকার নিউজ দেখে যাচাই-বাছাই না করে বিজ্ঞ আদালত কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা আইন-২০১২ এর ধারা অনুযায়ী জরিমানা করেছি।