‘আগামী মাস থেকেই চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫’
ঢাকা: চাকরি প্রত্যাশীরা দীর্ঘদিন ধরে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার জোর দাবি জানিয়ে আসলেও এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। যদিও বয়স বাড়ানোর বিষয়ে সরকার ইতিবাচক। তবে সরকার দেখেশুনে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে চায়।
এদিকে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক হারুন-অর-রশিদ ও যুগ্ম-আহ্বায়ক সবুজ ভূইয়াসহ ২৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীতকরণের দাবিতে গত শুক্রবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডি কার্যালয়ে গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ৩৫ এর যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী।
পরে ‘আগামী মাস থেকে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করা হচ্ছে’ বলে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে উদ্ধৃত করে কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। যদিও পরে ওবায়দুল কাদের এমন বক্তব্য দেয়ার কথা অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারি চাকরিতে বয়স বাড়ানোর বিষয়ে নতুন কোনো খবর নেই। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো এ সংক্রান্ত ফাইল এখনও মন্ত্রণালয়ে ফেরত আসেনি।
তিনি আরও বলেন, সরকার একটু দেখেশুনে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে। এর ইম্প্যাক্টগুলো কী হতে পারে, তা হয়তো দেখছে। এ ছাড়া চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়লে অবসরের বয়স বাড়ানোর বিষয়টিও এসে যায়। তাই চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর সঙ্গে অবসরের বয়স বাড়ানোর বিষয়টিও একসঙ্গে নিয়ে আসা হতে পারে।’
ছাত্রনেতাদের সঙ্গে ওই বৈঠকে উপস্থিত জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘আমরা ইশতেহারে বয়স বৃদ্ধির কথা বলেছিলাম এটি নিয়ে আমরা কাজ করছি তোমরা অপেক্ষা কর দ্রুত সময়ের মধ্যে বয়স বৃদ্ধি করা হবে।’
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘তোমাদের বিষয়টি যৌক্তিক। আশা করি প্রধানমন্ত্রী অল্প কিছু দিনের মধ্যেই এটি বাস্তবায়ন করবেন।’
ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি দ্রুত সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়ন করা হবে। এটি নিয়ে সরকার কাজ করছে।’
গত মেয়াদের শেষ সময়ে এসে সরকারের শীর্ষপর্যায়ের নির্দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রবেশের বয়স ৩২ বছর করতে এ সংক্রান্ত ফাইল অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও পাঠানো হয়। কিন্তু এর মধ্যেই নির্বাচন এসে যাওয়ায় এ বিষয়ে আর কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
অপরদিকে শারীরিক ও মানসিক সামর্থ্যের দিকে তাকিয়ে অনেকেই আর ৫৯ বছরকে চাকরি থেকে চলে যাওয়ার বয়স মনে করছেন না। তাই প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চাকরি থেকে অবসরের বয়স বাড়ানোরও দাবি রয়েছে।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছর, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে ৩২ বছর। আর সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকরি থেকে অবসরের বয়স ৫৯ বছর। মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়স ৬০ বছর।