জঙ্গি হামলার ‘হুমকি অনুভব করায়’ নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহে ডিএমপি

317

ঢাকা: জঙ্গি হামলার ‘হুমকি অনুভব করায়’ নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রমের ‘ঢিলেঢালা ভাবকে’চাঙা করতে আবার মাঠে নামছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

‘নাগরিক তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহ’ নাম দিয়ে শনিবার থেকে ২১ জুন পর্যন্ত বিশেষ এই কার্যক্রম চালাবে ডিএমপি। ৫০টি থানায় পুলিশ সদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে একটি ফরম দিয়ে আসবেন।

পূরণ করা ফরমটি পরে নির্ধারিত সময়ে সংগ্রহ করে থানায় নিয়ে তথ্যভাণ্ডারে যুক্ত করা হবে।

তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম থেকে কেউ বাদ পড়েছে কিনা তা খুঁজতে পরের সপ্তাহে একটি সার্ভেইল্যান্স টিম কাজ করবে।

শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

তিনি বলেন, “আমরা ইদানিং লক্ষ্য করছি, এখন এই কাজটি ঢিলে হয়ে গিয়েছে। অনেকেই এখন ভাড়াটিয়ার তথ্য দিচ্ছে না, নাগরিকরা তথ্য দিচ্ছে না।

“আমাদের পুলিশের মাঝেও একটা ঢিলেঢালা ভাব লক্ষ্য করেছি। যে কারণে ইদানিং আমরা আবার সেই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক অপরাধের একটি হুমকি আমরা অনুভব করছি। এই প্রেক্ষাপটেই আমরা আবার এটা শুরু করেছি।”

এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, বছিলার জঙ্গি আস্তানায় কিছুদিন আগে র‌্যাবের অভিযানের পর অনুসন্ধানে দেকা যায়,  সেখানকার বাড়িওয়ালা কোনো ভাড়াটিয়ার তথ্য দেননি। এধরণের কয়েকটি ঘটনার প্রেক্ষিতে নতুন করে তথ্য সংগ্রহ করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।

নাগরিকদের এসব তথ্য সংগ্রহ করার ফলে রূপনগরে জঙ্গি ঘটনার রহস্য যেমন উদঘাটন করা গেছে তেমনি যাত্রাবাড়ী, কাফরুল, দক্ষিণখানের খুনসহ বিভিন্ন অপরাধের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান পুলিশ কমিশনার।

নাগরিকদের এসব তথ্য নির্বাচন কমিশনের তথ্যভাণ্ডারের সাথে যুক্ত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “কেউ ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র দিলে তা আমাদের প্রযুক্তির মাধ্যমে ধরা পড়বে।”

রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে নতুন উদ্যোগে কাজ করা হবে বলে জানান পুলিশ কমিশনার।

এই কার্যক্রম পুরোপুরি সফল হলে সব ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আসবে জানিয়ে তিনি বলেন, “অনেকে পেশা, পরিচয় গোপন করে বাসা ভাড়া নেন। এই উদ্যোগের ফলে সেটা সম্ভব হবে না এবং গত তিন বছরে এর সফলতাও পাওয়া গেছে, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এসেছে।”

হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়ায় জঙ্গিরা রাজধানীতে শিকড় গাড়ার সুযোগ পায়নি বলে মনে করেন ডিএমপি কমিশনার।

নাগরিকদের সুবিধার জন্য, নিরাপত্তার জন্য উল্লেখ করে তিনি সবাইকে নাগরিককে এই তথ্য সংগ্রহ অভিযানে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

কমিশনার জানান, ২০১৫ সালের শেষের দিকে অনানুষ্ঠানিকভাবে এবং ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এর কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় জানান, এ পর্যন্ত ৬২ লাখ ৩৪ হাজার ৫৪৭ জনের নাম-ঠিকানা তথ্যভাণ্ডারে যুক্ত আছে।

এর মধ্যে বাড়িওয়ালা দুই লাখ ৪১ হাজার ৫০৭ জন, ভাড়াটিয়া ১৮ লাখ ২০ হাজার ৯৪ জন, মেস সদস্য এক লাখ ২১ হাজার ৪০ জন, পরিবারের সদস্য ৩১ লাখ ৬৬ হাজার ৮২১ জন, ব্যক্তিগত গাড়ির চালক এবং গৃহকর্মী আট লাখ ৮৩ হাজার ৯৮৪ জন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.