৭০০ টাকার প্যান্ট ২৪০০ টাকা, কারণ জানতে চাওয়ায় ম্যাজিস্ট্রেটকে পেটালেন ব্যাবসায়ীরা

478

নিউজ ডেস্ক: দেশি পণ্যে বিদেশি স্টিকার, অস্বাভাবিক দামে পণ্য বিক্রি, বিদেশি পণ্যে ইচ্ছামতো দাম বসিয়ে বিক্রিসহ নানা অভিযোগে শহরের কোর্ট রোড এবং সেন্ট্রাল রোডের বিভিন্ন মার্কেটে অভিযান চালান মৌলভীবাজার জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ সময় বিভিন্ন দোকান মালিককে জরিমানা করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আল-আমিনকে জিম্মি করে মারধর করেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। পরে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে ভেজালবিরোধী অভিযান চালানোর সময় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালককে জিম্মি অবস্থা থেকে উদ্ধার করে।

জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুরে অভিযান চালিয়ে শহরের কোর্ট রোডের রাজমহলে ইফতার সামগ্রীতে পোকা থাকায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপর সেন্ট্রাল রোডের একটি কাপড়ের দোকানে গিয়ে বিদেশি প্যান্টের দাম ২ হাজার ৪০০ টাকা দেখে কাগজপত্র দেখতে চান ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক।

পরে কাগজপত্রে ধরা পড়ে এটি দেশি প্যান্ট এবং দাম ৭০০ টাকা। তাই ওই দোকানকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এরপর সেন্ট্রাল রোডের এমবি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের পণ্যের অতিরিক্ত দাম, নিজেদের মতো দাম নির্ধারণের অভিযোগে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এরপর বিলাস ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে গিয়ে পণ্যের অতিরিক্ত দাম, বিদেশি পণ্যের দাম নিজেদের মতো করে নির্ধারণ, দেশি পণ্যকে বিদেশি ব্র্যান্ড নাম দিয়ে বিক্রি করার অভিযোগ করলে বিলাস কর্তৃপক্ষ আপত্তি জানায়। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে আশপাশের ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে জেলা ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আল-আমিনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। সেই সঙ্গে মারধর করে পাশের একটি দোকানে নিয়ে তাকে জিম্মি করে রাখেন। এ সময় আশপাশের ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে রাস্তায় অবস্থান নেন। পরে ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আল-আমিনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে পুলিশ।

ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, যখন তখন ভোক্তা অধিকারের অভিযানের কারণে আমাদের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। আমাদের না জানিয়ে অভিযান চালানো যাবে না।

বিলাস ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের মালিক সুমন আহমদ বলেন, সারা বছর জেলা ভোক্তা অধিকার ঘুমিয়ে থাকে। কিন্তু যখন ২০ রমজান আসে, জমজমাট ব্যবসার সময় তারা অভিযান পরিচালনা করে ব্যবসায় ব্যাঘাত ঘটান।

মৌলভীবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম বলেন, ভেজালবিরোধী অভিযানে গেলে ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালককে লাঞ্ছিত করেন ব্যবসায়ীরা। সেই সঙ্গে তাকে জিম্মি করে রাখা হয়। পরে আমরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.