তিন দেশ সফরে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা: টানা ১২ দিনের সরকারি সফরে আজ সকালে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফরে তিনি জাপান, সৌদি আরব ও ফিনল্যান্ডে অবস্থান করবেন।মঙ্গলবার সকাল ৯ টা ১০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে টোকিওর হানিদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়।
স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তোশিকো আবে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন। ওই দিনই হোটেল ওকুরায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি।
২৯ মে সকালে হোটেল নিউ ওতানিতে জাপানের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের সাথে গোল টেবিল বৈঠকে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যকার ব্যবসা বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা করবেন শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে ঢাকার হলি আর্টিজান হামলায় বেঁচে যাওয়া জাপানি নাগরিকদের সাথে সাক্ষাৎ করবেন তিনি।
বিকালে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের কার্যালয়ে তার সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সম্মানে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে যোগ দেবেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।
জাপান-বাংলাদেশ দ্বি-পাক্ষিক আলোচনার পরে চুক্তি স্বাক্ষর ও যৌথ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
৩০ মে ইম্পেরিয়াল হোটেলে প্রধানমন্ত্রী জাপানের মিডিয়া সংগঠন নিক্কি ডট ইঙ্ক আয়োজিত ‘দ্যা ফিউচার অব এশিয়া’ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নেবেন। এ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সাথে তিনিও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন।
সম্মেলনটির এ বছরের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘ইন সার্চ অব দ্যা নিউ গ্লোবাল অর্ডার-ওভারকামিং দ্যা ক্যাওয়াস’। বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধান, উদ্যোক্তা ও এশিয়ার ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দসহ প্রায় ৫০০ প্রতিনিধি আসন্ন সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন।
এশিয়াকে আরও গতিশীল, টেকসই এবং সমৃদ্ধ অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় নিক্কি ১৯৯৫ সাল থেকে এ বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করে আসছে।
এশিয়ার অর্থনীতিসমূহকে একীভূতকরণের প্রত্যয়ে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিকে উন্নীত করতে, বিশ্বায়নে ঐকমত্য স্থাপনে, মুক্ত বাণিজ্য ও বহুপাক্ষিক ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করে সুশাসন, উদ্ভাবনী ধারণা ও কাঠামোগত সংস্কারের বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর মধ্যে এই সম্মেলনে আলোচনা হবে।
নিক্কি আয়োজিত সম্মেলনের নৈশভোজে যোগ দেয়ার আগে জাপানি সংস্থা জাইকা সভাপতি শিনিচি কিতাওকার সাথে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব সফর:
জাপান সফর শেষ করে ওআইসির ১৪তম সম্মেলনে অংশ নিতে ৩১ মে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জেদ্দার উদ্দেশে যাত্রা করবেন প্রধানমন্ত্রী।
জাপানের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী তশিকো আবে বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানাবেন।
সৌদি আরবের স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ২৫ মিনিটে কিং আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে সন্ধ্যায় ওআইসির সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি।
আগামী ৩১ মে সৌদি আরবের মক্কায় অনুষ্ঠিতব্য ওআইসির এ সম্মেলনের শিরোনাম দেয়া হয়েছে ‘মক্কা সামিট:টুগেদার ফর দ্যা ফিউচার’।
১ জুন স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১২টায় সম্মেলনের প্রথম সেশনে এবং রাত ১টা ৩০ মিনিটে দ্বিতীয় সেশনে অংশ নেবেন শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে রাত ২টা ৩০ মিনিটে সমাপনি সেশনে অংশ নেয়ার পর সাফা প্রাসাদে নৈশভোজে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।
সন্ধ্যায় ওমরাহ পালন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
পরের দিন ২ জুন বিমানযোগে মদিনার উদ্দেশে জেদ্দা ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী এবং সেখানে হযরত মুহাম্মাদ (স.) এর রওজা মুবারকে ফাতেহা পাঠ করে আবার জেদ্দায় ফিরে আসবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর ফিনল্যান্ড সফর:
আগামী ৩ জুন হেলসিংকির উদ্দেশে জেদ্দা ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী। জার্মানির ফ্রাঙ্কফুট হয়ে স্থানীয় সময় বেলা ১টায় ফিনল্যান্ডে পৌঁছাবেন তিনি।
পরের দিন ৪ জুন ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে প্রেসিডেন্টের সাথে সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী।
পরবর্তীতে আগামী ৭ জুন স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রাজধানী হেলসিংকি ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী।
ভারতে যাত্রা বিরতি:
ফিরতি পথে ভারতের নয়া দিল্লিতে যাত্রাবিরতি দেবেন শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৫ মিনিটে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী বিমানবন্দরে অবতরণের পর ঘণ্টা তিনেক অবস্থান শেষে সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে দিল্লি ছাড়বেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর ঈদ বিদেশে:
২৮ মে ঢাকা ত্যাগ করার পরে তিন দেশ সফর শেষে আগামী ৮ জুন দেশে ফেরায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের ঈদ বিদেশেই কাটবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।