‘পা নাড়াচ্ছেন-চোখ খুলছেন, তবে অবস্থা এখনও ক্রিটিক্যাল’

259

ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থার এখনও তেমন উন্নতি হয়নি। তিনি পা নাড়াতে পারছেন, চোখও খুলছেন। তবে তার শারীরিক অবস্থা এখনও ‘ক্রিটিক্যাল’ বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান।

ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ সংবাদ জানাতে রবিবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে বিএসএমএমইউয়ের মিল্টন হলে এক আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

অধ্যাপক আলী আহসান বলেন, এনজিওগ্রাম করানো হলে তার তিনটি আর্টারিতে (অক্সিজেনবাহী রক্তনালী, ধমনী) ব্লক পাওয়া যায়। তার আগে থেকেই ডায়াবেটিস ছিল, সেটিও এসময় একদমই অনিয়ন্ত্রিত ছিল। এ অবস্থায় আমাদের দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নেই, তার হৃদযন্ত্রের বাম পাশের প্রধান যে ধমনী, যেটাকে আমরা এলএডি (লেফট অ্যান্টেরিয়র ডিসেন্ডিং) আর্টারি বলি, সেটা খুলে দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে পিসিআইয়ের (পারকিউটেনাস করোনারি ইন্টারভেনশন) মাধ্যমে তার ওই ধমনীতে স্টেনটিং (রিং পরানো) করা হয়।

এই চিকিৎসক বলেন, এসময় ওবায়দুল কাদের ঘণ্টা দুয়েক ভালো ছিলেন। তারপর ফের তার অবস্থার অবনতি ঘটে। ইলেকট্রোলাইন ইমব্যালেন্স (রক্তে ক্যালসিয়াম, ক্লোরাইড, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম প্রভৃতি পদার্থের মাত্রায় অসামঞ্জস্যতা) দেখা দেয়। দেখা গেল, তার রক্তচাপ ওঠানামা করছে। তখন আমরা সবাই মিলে পরামর্শ করে ঠিক করলাম, আইবিপিপি প্রতিস্থাপন করব। এই যন্ত্র প্রেশারকে মেইনটেইন করে। সেটা দেওয়ার পর তিনি স্ট্যাবল আছেন।

ওবায়দুল কাদেরের সর্বশেষ অবস্থা প্রসঙ্গে অধ্যাপক আলী আহসান বলেন, এখন তিনি অনেকটাই স্ট্যাবল। চোখ খুলছেন, কথা বলার চেষ্টা করছেন। পা নাড়াচ্ছেন। তবে তার অবস্থা ক্রিটিক্যাল। তিনি এখন যে স্ট্যাবল অবস্থায় আছেন, এ অবস্থা কিছুক্ষণ থাকলে তার পরবর্তী চিকিৎসার জন্য দুই ধরনের সিদ্ধান্ত হতে পারে— থেরাপি অথবা বাইপাস সার্জারি। তার হৃদযন্ত্রে থাকা অন্য ব্লকগুলো অপসারণ করতে হবে।

তিনি বলেন, সময়ের সঙ্গে তার শারীরিক অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমি আগেই বলেছি, ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা না গেলে কিছুই বলা যাবে না। আমি তার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি।

ওবায়দুল কাদেরকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসকরা বলেন, এ অবস্থায় তাকে দেশের বাইরে পাঠাতে গেলে তার শারীরিক অবস্থা আনস্ট্যাবল হতে পারে। তবে সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসক দল আসছে। তারা যদি মনে করে যে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাদের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম ও জনবল আছে, তাহলে তারা নিয়ে যেতে পারবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.