রাজশাহীতে শিলাবৃষ্টিতে বরফের আস্তরণ, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
নিউজ ডেস্ক: ফাগুনের শুরুতে হঠাৎ করে হওয়া শিলাবৃষ্টিতে রাজশাহী অঞ্চলের অনেক রাস্তা-ঘাট, ফসলি জমিসহ ঘরবাড়িতে তুষারপাত আকৃতির আস্তরণ তৈরি হয়েছে। খবর ইউএনবি’র।
শনিবার ভোরে প্রায় ৪০ মিনিটের এই শিলাবৃষ্টিতে আমের মুকুলের পাশাপাশি পেঁয়াজ, রসুন, গমসহ অন্যান্য ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
তবে ক্ষতিগ্রস্ত আম চাষীদের আশস্ত করে গবেষকরা বলছেন, মুকুল ঝরে পড়লেও উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। এ বছর আমের উৎপাদন স্বাভাবিকই হবে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, ভোরে একটানা ৩৮ মিনিটের শিলাবৃষ্টির পাশাপাশি ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এ সময় ঝড়ো হাওয়া না থকলেও বজ্রপাত হয়েছে জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, আবাহওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আবারও এমন বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা যায়, শিলাবৃষ্টির আঘাতে রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর, পবা, পুঠিয়া, চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে মুকুল ঝরে পড়েছে। বিশেষ করে পুঠিয়া উপজেলার কয়েকটি গ্রামে শিলাবৃষ্টির কারণে বরফের স্তুপ জমে যায়।
পুঠিয়ার বানেশ্বর এলাকার কৃষক আব্দুস সালাম ইসলাম জানান, এবার আমের গাছে প্রচুর মুকুল এসেছিল। কিন্তু ভোরে শিলাবৃষ্টির আঘাতে মুকুল ঝরে পড়েছে। এতে লোকসান গুণতে হবে।
চারঘাট উপজেলার হলিদাগাছি এলাকার আম ব্যবসায়ী মুকুল হোসেন জানান, আম গাছে মুকুল যে পরিমাণ এসেছিল তাতে অন্যান্য বছরের লোকসান অনেকটা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হতো। কিন্তু আজকের শিলাবৃষ্টিতে তাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। আমের উৎপাদন কেমন হবে তা নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তায়।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বলেন, শিলা এবং ভারি বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজ, রসুন, গম ও আমের মুকুলের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে তারা ইতিমধ্যে জরিপ শুরু করেছেন।
তবে রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আবদুল আলীম বলছেন, আমের মুকুল ঝরে পড়লেও চাষিদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কেননা, আম হলো বৈরি আবহাওয়ার ফসল। ঝড়, বৃষ্টির মধ্যেই আমের উৎপাদন হয়ে থাকে। এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
এখনো আমের উৎপাদন ভালো হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা আছে জানিয়ে ড. আলীম বলেন, এবার প্রচুর মুকুল এসেছিল। অতো মুকুলে শেষ পর্যন্ত আম ধরে না। আবার ধরলেও গাছে থাকে না, ঝরে পড়ে।
এবার শিলার কারণে অনেক মুকুল ঝরলেও বৃষ্টি গাছের মুকুলগুলোর জন্য ভালো হয়েছে। তাই আমের কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন পাওয়া যাবে বলেই মনে করেন এই গবেষক।