রাজনীতিতে আসছেন সৈয়দ আশরাফকন্যা রীমা!

355

ঢাকা: আওয়ামী লীগের প্রয়াত প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের শূন্য আসনে (কিশোরগঞ্জ-১) তাঁর একমাত্র সন্তান সৈয়দা রীমা ইসলামকে প্রার্থী করার দাবিতে সরব কিশোরগঞ্জবাসী। তা ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ গত কয়দিন ধরেই রীমাকে প্রার্থী করার দাবি জানাচ্ছেন। কিশোরগঞ্জের মানুষ রীমা ইসলামকে সৈয়দ আশরাফের যোগ্য উত্তরসূরি বলে মনে করছে।

এদিকে, কিছুদিন আগে, লক্ষ-কোটি ভক্ত-সমর্থকদের কাঁদিয়ে চিরবিদায় নিয়েছেন বাংলাদেশের রাজনীতির প্রবাদ পুরুষ সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তার মৃত্যুতে হাহাকার শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে, জনসাধারণের হৃদয়েও পড়েছে শোকের ছায়া। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিকের মৃত্যুপরবর্তী সময়ে হঠাৎই আলোচনায় এসেছেন তার একমাত্র কন্যা সৈয়দা রীমা ইসলাম।

কয়েকদির ধরে বাবার কফিনের পাশে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদছেন এমন একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে। গত কয়েকদিন ধরেই ফেসবুকের টাইমলাইনে ঘুরছে আশরাফকন্যার আবেগছোঁয়া ছবিটি।

ছবিতে দেখা যায়, রীমা ইসলাম ও অন্যান্যরা গাড়ি থেকে সৈয়দ আশরাফের কফিনটি নামাচ্ছেন। রীমা ভেজাচোখে তাকিয়ে আছেন দূরে। বিভিন্নজন ছবিটি শেয়ার করে আশরাফকন্যাকে সমবেদনা জানাচ্ছেন।

গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে জয়ী হন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তবে একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়া হয়নি তার। অন্যদের শপথের দিনেই গত ৩ জানুয়ারি ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগে ৬৮ বছরে চিরবিদায় নেন এই আ’লীগ নেতা।

সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুর পর আলোচনায় এসেছে- কী করবেন রীমা। তার আর কোনো ভাই-বোন নেই। ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর হারিয়েছেন মা শীলা ইসলামকে। আর এবার হারালেন বাবা সৈয়দ আশরাফকে। রীমা সেখানেই এইচএসবিসি ব্যাংকে চাকরি করেন। সম্পূর্ণ একা হয়ে পড়া রীমা কি দেশেই থাকবেন নাকি ফের বিদেশ পাড়ি জমাবেন?

অনেকে মনে করেন, সৈয়দ আশরাফ চাইতেন না, তার একমাত্র সন্তান রাজনীতিতে আসুক। এ কারণেই তিনি কন্যাকে দেশে আনেননি। স্বাধীনভাবে নিজের মতো করে জীবন গঠন ও পেশা গ্রহণের সুযোগ দিয়েছেন তিনি মেয়েকে। মেয়েকে রাজনীতির সংস্পর্শে রাখার চেষ্টা করেননি কখনো।

তবে, সেই বাস্তবতা এখন আর নেই আশরাফ তনয়ার সামনে। জনতার যে উচ্ছ্বাস সৈয়দ আশরাফকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে, রীমাকে ঘিরেও কিশোরগঞ্জে একই ঢেউ উঠবে বলে মনে করেন বিশিষ্টজনেরা।

সমর্থকেরাও চাচ্ছেন রীমা ইসলামকে যেন উপ-নির্বাচনে প্রার্থী করা হয়। সামাজিক যোগযোগমাধ্যমগুলোতেও তাকে সমর্থন জানিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন অনেকেই।

রীমা ইসলাম রাজনীতিতে আসা না আসা?

পারিবারিক সূত্র জানায়, রীমা ইসলাম এখনো শোকাচ্ছন্ন। তবে বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে উচ্চশিক্ষিত-মেধাবী এই তরুণীর। ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি এখন কোনও সিদ্ধান্ত নেননি।

স্থানীয় এক আ’লীগ নেতা জানান, সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুর পর পিতৃমাতৃহীন এতিম রীমার দায়িত্ব শুধু পরিবারেরই নয়, পুরো দেশের। সব মানুষ তার পাশে আছে। তদুপরি সৈয়দ আশরাফের অবর্তমানে আওয়ামী লীগ প্রধান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখন তার মুরুব্বী ও অভিভাবক। রীমা নিশ্চয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন এবং সঠিক পদক্ষেপ নেবেন।

আওয়ামী লীগের প্রয়াত প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের শূন্য আসনে (কিশোরগঞ্জ-১) তাঁর একমাত্র সন্তান সৈয়দা রীমা ইসলামকে প্রার্থী করার দাবিতে সরব কিশোরগঞ্জবাসী। তা ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ গত কয়দিন ধরেই রীমাকে প্রার্থী করার দাবি জানাচ্ছেন। কিশোরগঞ্জের মানুষ রীমা ইসলামকে সৈয়দ আশরাফের যোগ্য উত্তরসূরি বলে মনে করছে। কিশোরগঞ্জ পৌরসভার শোলাকিয়ার আওয়ামী লীগ নেতা ফাইজুল হক গোলাপ বলেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের উচ্চশিক্ষিত কন্যা সবদিক থেকেই যোগ্য। তাকে প্রার্থী করা হলে কারও কোনো প্রশ্ন থাকবে না। হোসেনপুর উপজেলার পুমদি ইউনিয়নের গৃদান গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী নজরুল ইসলাম খায়রুল বলেন, রীমা ইসলামের মাঝেই সৈয়দ আশরাফের প্রতিচ্ছবি দেখা যায়। তাকে প্রার্থী করা হলেই সৈয়দ আশরাফের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখানো হবে। কিশোরগঞ্জের প্রবীণ সাংবাদিক সুবীর বসাক বলেন, সততা ও আদর্শের মাপকাঠিতে রীমা ইসলামই পিতার ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারবেন। সংবাদকর্মী আনোয়ারুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, রীমার প্রতি সাধারণ মানুষের আবেগ-অনুভূতি কাজ করছে। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শরীফ সাদী বলেন, বিষয়টা নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর। আমরা তাঁর দিকেই তাকিয়ে আছি। সৈয়দা রীমা ইসলাম লন্ডনের একটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রাপ্ত। বর্তমানে তিনি লন্ডনে এইচএসবিসি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে উচ্চপদে কর্মরত।

Leave A Reply

Your email address will not be published.