সেনাপ্রধানকে নিয়ে মিথ্যা তথ্য: জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে ঘিরে সমালোচনার ঝড়

370

ঢাকা: বর্তমান সেনাপ্রধান সম্পর্কে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর একটি বক্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন অসত্য’ বক্তব্য হিসেবে অভিহিত করেছে সেনাসদর। এক প্রতিবাদ লিপিতে এই বক্তব্যকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ মন্তব্য করে এটা সেনাবাহিনী প্রধানসহ সেনাবাহিনীর মত ‘রাষ্ট্রীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে জনসমক্ষে হীন করার অপচেষ্টা’ বলেও জানানো হয়।

মঙ্গলবার রাতে সময় টিভি’র সম্পাদকীয় টকশো’তে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় ব্যবহৃত গ্রেনেডের উৎস সম্পর্কে বলতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবে খ্যাত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

পরদিন সময় টেলিভিশন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো লিখিত বিজ্ঞপ্তিতে সেনা কর্তৃপক্ষ দাবি করে, বর্তমান সেনাপ্রধান কখনোই কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি হননি। তাতে আরও বলা হয়, বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধান তার চাকুরি জীবনে কখনোই চট্টগ্রামের জিওসি বা কমান্ড্যান্ট হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন না।

বর্তমান সেনাপ্রধান তার চাকুরি জীবনে কোথায় কোথায় বিগ্রেড কমান্ডার ও জিওসি ছিলেন তার বিবরণ দিয়ে বলা হয়, বর্ণিত সময়ে চট্টগ্রাম বা কুমিল্লা সেনানিবাসে সমরাস্ত্র বা গোলাবারুদ চুরি বা হারানোর কোন ঘটনা ঘটেনি। সুদীর্ঘ চাকুরি জীবনে জেনারেল আজিজ কখনোই কোর্ট মার্শালের সম্মুখীন হননি উল্লেখ করে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

এদিকে ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্য ২ আলোচক জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর মতো স্পর্শকাতর ইস্যুতে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে গর্হিত অপরাধ করেছেন ডা. জাফরুল্লাহ।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিন বলেন, আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সম্পর্কে বস্তুনিষ্ঠ তথ্য না জেনে এই ধরনের মন্তব্য করা একটা গর্হিত অপরাধ বলে আমি মনে করি। এতে কেবল সেনাবাহিনীরই নয়, আমাদের জাতীয় ভাবমূর্তি নষ্ট হয় বলে আমি মনে করি। এই বক্তব্যে মনে হতে পারে, আমরা কী সেনাবাহিনী রেখেছি, যে এভাবে গ্রেনেড চুরি হয়ে যায়?’

স্পর্শকাতর এমন বিষয়ে মিথ্যা তথ্য গণমাধ্যমে উপস্থাপন কোনোভাবেই কাম্য নয়। এর দায়িত্বও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকেই নিতে হবে বলে উল্লেখ করেন তারা।

দৈনিক আমাদের নতুন সময়-এর সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, উনি কিন্তু মন্তব্য না, উনি একটা তথ্য দিয়েছেন। ভুল তথ্যের উপরে করা যে কোনো বিশ্লেষণ ভুল হতে বাধ্য। এটা শুধু অনভিপ্রেত না, এটা একটা অফেন্স। এটা একটা ক্রিমিনাল অফেন্সের পর্যায়ে পড়বে- না জেনে কোনো তথ্য দেয়া।

তিনি আরও বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ যে তথ্যটি উপস্থাপন করেছিলেন তার একটা পজিশন এক্সপ্লেইন করার জন্য- এটা ছিলো ভুল। যেটা ভুল- সেটা ভুল। ডিনি বলেছেন, এটার দায়িত্ব তাকে নিতে হবে।

নূহ-উল-আলম লেনিন বলেন, যদি কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য বলতে হয় রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে, সেই তথ্যটি সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে জনসমেক্ষে সেটি বলা হলে- এই ধরনের টক-শো গুলো তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারায়।

ওই আলোচনায় তাৎক্ষণিক ভিন্ন প্রসঙ্গ চলে আসায়, ওই বক্তব্যের সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের সুযোগ ছিলো না দাবি করেন আলোচকরা। লাইভ অনুষ্ঠানে তথ্য ও মন্তব্য উত্থাপনের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করাও জরুরি বলে জানান তারা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.