কলম্বোতে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পালন

441

কলম্বো: যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বুধবার, ১৫ অগাস্ট ২০১৮ তারিখ সকালে কলম্বোস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে জাতীয় শোক দিবস এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাত বার্ষিকী পালিত হয়। দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে হাই কমিশন প্রাঙ্গনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে, ২০১২ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কতৃক “বাংলাদেশের বন্ধু” খেতাব প্রাপ্ত শ্রীলংকার নাগরিক জনাব ই এ বিদ্যাসেকারা, বাংলাদেশের পরিকল্পনা ও সমাজকল্যান মন্ত্রনালয় থেকে আগত কর্মকর্তাবৃন্দ, মিশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ শ্রীলঙ্কায় বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

নির্ধারিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ছিলঃ আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিতকরণ; এক মিনিট নীরবতা পালন; বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ; রাষ্ট্রীয় নেতৃবৃন্দের বাণী পাঠ; আলোচনা সভা; দোয়া/প্রার্থনা এবং বঙ্গবন্ধুর ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী।

আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিসহ মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ বঙ্গবন্ধুর জীবন ও দর্শনের ওপর আলোকপাত করেন। বক্তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে মহান নেতার অসামান্য অবদানের কথা শ্রদ্ধাভরে তুলে ধরেন। তাঁরা ১৫ অগাস্টের কালো রাতে বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যের নির্মম হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন এবং সকল শহীদের আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করেন। জনাব বিদ্যাসেকারা তার স্মৃতিচারণে ১৯৭১ সালে তার ও তার কিছু বন্ধুদের উপর বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা ও নেতৃত্ত্বের প্রভাবের কথা উল্লেখ করেন। যুদ্ধকালীন সময়ে তারা শ্রীলংকায় শ্রীলংকা-বাংলাদেশ মিত্র পরিষদ গড়ে তোলেন, এবং শ্রীলংকার বিভিন্ন শহরে ঘুরে বাংলাদেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলেন।

হাই কমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহ বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং দেশের সাধারণ মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্যে তাঁর জীবনব্যাপী সংগ্রামের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মাধ্যমে ঘাতকরা মূলতঃ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মূল্যবোধ এবং রূপকল্পকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল; কিন্ত্ত তাদের সেই হীন উদ্দেশ্য সফল হয়নি। তিনি বলেন, হত্যাকারীরা শুধু তাঁর জীবন নিতে পেরেছে, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর অসম্প্রদায়িক, সহিষ্ণু, সমতাভিত্তিক ও বহুমুখী ‘সোনার বাংলা’র স্বপ্ন কে কেড়ে নিতে পারেনি, যা এখন কোটি বাঙ্গালির অন্তরে প্রোথিত। হাই কমিশনার একই সাথে চ্যান্সারি ভবনে নব গঠিত “বঙ্গবন্ধু পাঠাগার” উদ্বোধন করেন।

দিবসটি পালনের অংশ হিসেবে হাই কমিশন কর্তৃক কলম্বোতে অবস্থিত একটি মুসলিম এবং একটি হিন্দু এতিমখানার প্রায় ৭০ (সত্তর) জন অনাথ ছেলেমেয়েদের জন্য মধ্যাহৃভোজের ব্যবস্থা করা হয়।একই সাথে মিশন কর্তৃক বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ অগাস্টের সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত এবং শান্তি কামনা করে পবিত্র কুরআন শরীফ পাঠের এবং বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.