নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, তীব্র প্রতিক্রিয়া

172

ঢাকা: নোয়াখালীতে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষ এ নিয়ে মন্তব্য করেছেন। ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে রাজধানীর শাহবাগ, উত্তরাসহ কয়েকটি এলাকায়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

ধর্ষণ-নিপীড়নের ঘটনায় বিচারের দাবিতে শাহবাগে বিক্ষোভ করছে সম্মিলিত ছাত্র-জনতা। তারা সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে নানা শ্লোগান দিচ্ছেন। ‘এই ধর্ষক রাষ্ট্র, এই ধর্ষক সরকার চাই না’, ‘যে সরকার ছাত্রলীগ, যুবলীগ পালে সেই সরকার চাই না’ স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে এলাকা।

গণঅবস্থান কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর বক্তব্য রাখেন।

সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারন করে তিনি বলেন, আপনারা যদি দুর্নীতিবাজ-লুটেরাদের পক্ষ নেন তবে গণআন্দোলন করে বিদায় করা হবে। আজকে আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতায় থাকার ফলে রাষ্ট্রের প্রত্যেকটা সেক্টরে, প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানে দুর্বৃত্ত তৈরি হয়েছে।

ছাত্রলীগ ধর্ষণ করে, যুবলীগ ধর্ষণ করে, আওয়ামী লীগ টাকা পাচার করে। আমি বন্ধুদের বলবো, আমাদের দুর্বলতার কারণে লুটেরাদের, ধর্ষকদের সরকার আজ ক্ষমতায়। তিনি বলেন, আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, এখন একটা ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের প্রয়োজন।

বিক্ষোভ সমাবেশে শ্রমিক অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান বলেন, আমরা ধর্ষিত হয়েছি ২০১৮ সালের নির্বাচনেও। সে সময় সুবর্ণচরে নারী ধর্ষণের ঘটনার বিচার হয়নি। দীর্ঘদিনের বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে এই রাষ্ট্রে ধর্ষণ-শ্লীলতাহানির বিচার হয় না।

ছাত্র অধিকার পরিষদ নেতা শহীদুল হক বলেন, প্রতিবারই আমরা বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামি, তারপর টনক নড়ে। এবার নোয়াখালীর নারী ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ৩২ দিন আগের। এতদিন কিছুই হয়নি জড়িতদের। যখন বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় আসে, প্রতিবাদ শুরু হলো তখন টনক নড়ল। ধর্ষক গ্রেপ্তার হলো। এই গ্রেপ্তারদের ছবি কাদের সাথে দেখা যায়, সরকারদলীয় লোকজন, স্থানীয় এমপির সাথে। আমরা মানবিক রাষ্ট্র চাই। মা-বোনের সম্ভ্রম রক্ষায় মানবিক পুলিশ চাই। তিনি বলেন, এই ক্ষমতা বেশিদিন থাকবে না। ওয়াদা করছি, গুম-খুন-ধর্ষণের সরকারকে আমরা টেনে নামাব।

ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক রহমান বলেন, ধর্ষণের প্রোগ্রামে হামলা এর চেয়ে বড় দুঃখজনক আর হতে পারে না। আমরা ধর্ষণের প্রতিবাদ করি আর আমাদের বিভিন্ন মামলা-হামলার হুমকি দেয়। আজ নারায়ণগঞ্জে আমাদের প্রতিবাদ সমাবেশে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। যার জন্য সারা বাংলাদেশের এমন কোনো গ্রাম নেই যেখানে কোনো ধর্ষকের বিচরণ নেই।

সম্প্রতি বেশ কিছু ধর্ষণ নির্যাতনের ঘটনা দেশব্যাপী তোলপাড় তৈরি করেছে। সিলেটে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের রেশ এখনো কাটেনি। এরইমধ্যে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয় গতকাল। যদিও ঘটনাটি মাসখানেক আগের। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে ৯ আসামির বিরুদ্ধে। তাদের চার জনকে এরইমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে

Leave A Reply

Your email address will not be published.