শেষ বিকেলের চমক নতুন স্বাস্থ্য মহাপরিচালক, হতবাক নেতারা

278

ঢাকা: স্বাস্থ্য অধিদফতরের সদ্যবিদায়ী মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়ার পর থেকে নতুন মহাপরিচালক কে হচ্ছেন তা নিয়ে স্বাস্থ্য সেক্টরে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা চলছিল। সম্ভাব্য মহাপরিচালক হিসেবে যে পাঁচ-সাতজনের নাম উঠে আসে তাদের প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় তো দূরের কথা শেষজনের মধ্যেও নতুন মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ (এবিএম) খুরশীদ আলমের নামটি ছিল না!

বৃহস্পতিবার সকালে সরকারি এক আদেশ স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হলে মহাপরিচালক হিসেবে যার নামটি সর্বাধিক উচ্চারিত হয় তিনি হলেন অধিদফতরের চিকিৎসাশিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক এ এইচ এম এনায়েত হোসেন। তাকে মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছিল! বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে ব্রেকিং নিউজ হিসেবে তিনি নিয়োগ পাচ্ছেন মর্মে স্ক্রল প্রচারিত হতে থাকে।

সাধারণ চিকিৎসকরা বিশেষ করে সার্জারির চিকিৎসকরা এবিএম খুরশীদ আলম নিযুক্ত হওয়ায় একাধারে খুশি ও কিছুটা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। অত্যন্ত সৎ, যোগ্য, পড়াশুনাপাগল এই অধ্যাপক স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যেন বিতর্কিত না হন তা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরীর কাছে নতুন মহাপরিচালক নিয়োগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে ‘নো কমেন্ট’ ‘নো কমেন্ট’ বলেন। বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরে নতুন মহাপরিচালক নিয়োগ হয়েছে তাতে বিএমএর নেতা হিসেবে আমার কিছুই বলার নেই।

পরে তিনি বলেন, ব্যক্তিবিশেষের পরিবর্তনের ফলে স্বাস্থ্যখাতের অনিয়ম ও দুর্নীতির পরিবর্তন আসবে না। মূলত স্বাস্থ্যখাতের ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অনতিবিলম্বে সমাজের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে পৃথক কমিশন গঠন করে সমাজের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার প্রতিনিধি ডেকে স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে কী করা দরকার সে সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা গ্রহণ করলে তবেই স্বাস্থ্যখাতে পরিবর্তন আসবে।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান বলেন, সরকার যাকে যোগ্য মনে করেছে তাকেই স্বাস্থ্য মহাপরিচালক নিয়োগ দিয়েছে।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের বিষয়টি মাথায় রেখে নতুন মহাপরিচালক কাজ করবেন এটাই প্রত্যাশা।

নতুন স্বাস্থ্য মহাপরিচালক সম্পর্কে তার ঘনিষ্ঠজনদের কাছে জানা গেছে, তিনি ভীষণ কর্মঠ। ভোর বেলা ঘুম থেকে ওঠা, বাগানের পরিচর্যা করা, সেতার ও হারমোনিয়ামে গলা সাধা, মেডিকেলে ক্লাস নেয়া, হাসপাতালে রোগী দেখা, ছাত্র পড়ানো, বিকেলে চেম্বারে রোগী দেখা, ক্লিনিকে অপারেশনেই তার সময় কাটে।

জানা গেছে, এমবিবিএস পাসের পর ডাক্তারি না করে তিনি নির্বাচন কমিশনে ছয় মাস চাকরি করেছিলেন। পরে আবার ডাক্তারি জীবনে ফিরে আসেন। পরে কয়েকবার পরীক্ষা দিয়ে এফসিপিসি পাস করেন। পরবর্তীতে ইংল্যান্ড থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.