ডিএনসিসির ডিজিটাল পশুর হাটে সাড়া কম

308

ঢাকা: করোনাভাইরাসের মধ্যে কোরবানির পশু কেনাকাটা এখনো পুরোদমে জমে ওঠেনি। অনলাইনে পশুর পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও  ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) উদ্যোগে শুরু করা ডিজিটাল হাটে প্রতিদিনই যুক্ত হচ্ছেন বহু উদ্যোক্তা। কিন্তু এই হাটের উদ্যোক্তাদের বেঁধে দেওয়া পশুর দাম মানছেন না বিক্রেতারা। ডিএনসিসির ডিজিটাল হাটে পশুর দাম বেশি বলে মন্তব্য করেছেন ক্রেতারাও। এর বাইরে পশু কোরবানি ও মাংস প্রক্রিয়াজাত করার খরচকে ‘মাত্রাতিরিক্ত’ হিসেবে দেখছে নগরবাসী।

জানা গেছে, ডিএনসিসির ডিজিটাল হাটে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫৩টি প্রতিষ্ঠান যুক্ত হয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মে দুই হাজার ৪০৬টি গরু তুলেছেন বিক্রেতারা। গতকাল পর্যন্ত ৯০ হাজার ৮৮৬ জন অনলাইনে হাটটি ঘুরে এসেছে। প্ল্যাটফর্মটিতে যুক্ত হওয়া বিক্রেতারা বিভিন্ন রঙের ছোট, মাঝারি ও বড় আকারের গরু তুলেছেন। বেশির ভাগ গরুর দাম বেশি বলে মন্তব্য করেছেন ক্রেতারা। এর মধ্যে বিএ-১৩১৪ কোডের অস্ট্রেলীয় প্রজাতির একটি ষাঁড় তুলেছে রাসেল অ্যাগ্রো নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ১৯৫ কেজি ওজনের এই গরুর দাম হাঁকানো হয়েছে এক লাখ ১৫ হাজার টাকা। সে হিসাবে গরুটির কেজিপ্রতি দাম পড়েছে ৫৯০ টাকা। একইভাবে এনএক্স-২৯০৩ কিউ আর কোডের একটি দেশি শংকর জাতের গরু অনলাইনে তুলেছে সওদাগর ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ৬০০ কেজি ওজনের গরুটির দাম ধরা হয়েছে তিন লাখ ৪৬ হাজার ৫০০ টাকা। অর্থাৎ কেজিপ্রতি পড়েছে ৫৭৭ টাকা।

কিন্তু ই-ক্যাব বলছে, ছোট গরুর ক্ষেত্রে কেজিপ্রতি ৩৭৫, মাঝারির জন্য ৪২৫ এবং বড় গরুর কেজিপ্রতি দাম ৪৭৫ টাকা দরে বিক্রির জন্য বিক্রেতাদের বলা আছে। তবে গরুর রং এবং আকারের ওপর ভিত্তি করে অনেক সময় বেশি হতে পারে। তবে এটা অবশ্যই ব্যতিক্রম।

ই-ক্যাবের মতে, ডিজিটাল হাটে বহু বিক্রেতা গরু বিক্রির আগ্রহ দেখিয়েছেন। তবে ক্রেতা এখনো কম।

তবে অনলাইনে কেনাকাটা করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করতেও দেখা গেছে অনেককে। ডিএনসিসি ডিজিটাল হাটের বাইরেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গরু বেচাকেনা চলছে। অনলাইনে দেওয়া বর্ণনার সঙ্গে কেনার পর একই রকম পেয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।

কাফরুল এলাকার বাসিন্দা শওকত হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলে অনলাইনে অনেক গরু দেখেছে। হাটে যাওয়ার প্রতি খুব একটা আগ্রহ নেই এখন। ফলে অনলাইনে গরুর দামকে ওজন দিয়ে ভাগ করে দেখি অনেক বেশি। এই মাত্রাতিরিক্ত দামে গরু কেনা যাবে না।’

এ ব্যাপারে ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, ‘ক্রেতার সংখ্যা এখনো বাড়েনি। পশুর দাম বেশি ধরার সুযোগ নেই। আমরা দাম ঠিক করে দিয়েছি।’

মাংস প্রক্রিয়াজাত করতে অতিরিক্ত দাম : ডিএনসিসি ডিজিটাল হাট থেকে গরু কিনলে মাংস প্রক্রিয়াজাত করে বাসায় পৌঁছে দিতে গরুর দামের ২৩ শতাংশ খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াজাত করার নির্দিষ্ট স্থানে গরু পরিবহনের খরচ দিতে হবে না। তবে অন্য হাট থেকে গরু কিনে তাদের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত করতে চাইলে নিজের খরচে পরিবহন করতে হবে। প্রক্রিয়াজাত করার জন্য নির্ধারিত গরুর দামের ২৩ শতাংশ খরচ দিতে হবে। এই সুবিধা অনলাইনে নিতে পাঁচ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে বুকিং দিতে হবে। সম্ভাব্য ক্রেতারা এই খরচকে অতিরিক্ত বলে মনে করছেন। তবে উদ্যোক্তারা বলছেন, এই ২৩ শতাংশ খরচের ১৫ শতাংশ কসাই বাবদ, গরু রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ৪ শতাংশ এবং ব্যবস্থাপনা ও সার্ভিস চার্জ বাবদ ৪ শতাংশ।

ডিজিটাল হাটের হটলাইনের কর্মী মো. ইব্রাহীম বলেন, ‘২৩ শতাংশ খরচের মধ্যে পশু পরিবহন খরচ, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, আলেম দ্বারা কোরবানি এবং ফুটগ্রেড ব্যাগে করে মাংস বাসায় পৌঁছে দেওয়া হবে। তবে বাইরের অন্য কোনো জায়গা থেকে পশু কিনলে পরিবহন খরচ গ্রহীতাকে বহন করতে হবে।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.