সাবধান! ফোন নাম্বারের আগে প্লাস চিহ্ন দেখালে কল ধরবেন না!

337

অন্তত পাঁচটি দলে বিভক্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে দেশের গ্রাহকদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড) গোপন তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছিল সংঘবদ্ধ একটি প্রতারকচক্র। সম্প্রতি এমন কিছু অভিযোগের তদন্তে নেমে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে রাজধানী ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানা এলাকায় অভিযান চালান র‌্যাব-২ ও র‌্যাব-৮-এর সদস্যরা। অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্রটির ১৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।

গতকাল রবিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গ্রেপ্তাররা সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্রের সদস্য। এরা বিশেষ কৌশলে প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সময় এদের কলের ক্ষেত্রে সাধারণত নাম্বারের আগে ‘প্লাস চিহ্ন’ থাকে। ওই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশজুড়ে এমন চার-পাঁচটি গ্রুপ সক্রিয় আছে। চক্রের এসব সদস্যের বেশির ভাগ বয়সে তরুণ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নাজমুল জমাদ্দার (১৯), হাসান মীর (১৮), ইব্রাহিম মীর (১৮), তৌহিদ হাওলাদার (২৩), মোহন শিকদার (৩০), পারভেজ মীর (১৮), সোহেল মোল্যা (২৬), দেলোয়ার হোসেন (৩৫), সৈয়দ হাওলাদার (২০), রাকিব হোসেন (২৪), মোহাম্মদ আলী মিয়া (২৬), পলাশ তালুকদার (৩৪) ও ইমন (২৫)।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে ১৪ লাখ ৮৩ হাজার ৪৬২ টাকা, ৩১টি মোবাইল ফোন, দুটি ল্যাপটপ, দুটি ট্যাব, ১২০টি সিম, একটি রাউটার এবং একটি টিভি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৯ জন মাস্টারমাইন্ড। এর মধ্যে মোহন গত দুই মাসে প্রায় এক কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, করোনা পরিস্থিতির কারণে মানুষের বাইরে যাওয়া এড়াতে মোবাইল ব্যাংকিং কিংবা ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন বেড়েছে। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছে প্রতারকচক্র। বেশ কিছু অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত চালিয়ে এই চক্রের ১৩ সদস্যকে আটক করা হয়। তারা প্রত্যেকে প্রাথমিকভাবে এই অপরাধে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। একজন মাস্টারমাইন্ডের নিয়ন্ত্রণে চক্রের ৩০-৩৫ জন সদস্য কাজ করে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। সাধারণত পাঁচটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কাজটি সম্পন্ন করে চক্রটি। প্রথমত, চক্রের ‘হান্টার টিমের’ সদস্যরা মাঠপর্যায়ে গ্রাহকদের তথ্য সংগ্রহ করে। তারা বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা, মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টদের নাম্বার সংগ্রহ করে মাস্টারমাইন্ডদের সরবরাহ করে।

দ্বিতীয় ধাপে ‘স্পুফিং টিমের’ সদস্যরা কাস্টমার কেয়ার নাম্বার কিংবা ব্যাংক কর্মকর্তার নাম্বার ক্লোন করে। এর ফলে প্রতারকরা যখন গ্রাহকদের টার্গেট করে ফোন দেয়, তখন হুবহু সংশ্লিষ্ট নাম্বারটি দেখতে পায়। এতে গ্রাহকরা সহজেই বিভ্রান্ত হয়ে ফাঁদে পা দিচ্ছেন। প্রতিটি নাম্বার ‘স্পুফিং’ বা ক্লোন করতে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা পায় টিমের সদস্যরা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.