২৬৮ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি ক্রয়াদেশ স্থগিত ও বাতিল
ঢাকা: কোভিড-১৯ এর কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে একের পর এক রফতানি অর্ডার হারাচ্ছে তৈরি পোশাক খাত। শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) তথ্য বলছে, শুক্রবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৯৬৯ কোম্পানির অধিনে থাকা কারখানাগুলোতে ২৬৮ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়েছে। এসব ক্রয়াদেশের আওতায় ছিলো ৮২ কোটি ৮৬ লাখ ৫ হাজার পিস পোশাক। ৯৬৯ প্রতিষ্ঠানের আওতায় আছে ১৯ লাখ ৭০ হাজার শ্রমিক। ক্রয়াদেশ বাতিল-স্থগিত করা ক্রেতাদের মধ্যে প্রাইমার্কের মতো বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানও আছে। আয়ারল্যান্ড ভিত্তিক প্রাইমার্কের পাশাপাশি ক্রয়াদেশ বাতিল-স্থগিত করেছে ইউরোপের ছোট-মাঝারি-বড় সব ধরনের ক্রেতারাও।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো একের পর এক লকডাউন ঘোষণা করছে। বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করছে পোশাকের ব্র্যান্ডগুলো। এ পরিস্থিতিতে ভোক্তা চাহিদায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বাজার চাহিদার এ পরিস্থিতিতে নতুন ক্রয়াদেশ দিচ্ছে না ক্রেতারা। শুধু তাই নয়, বাতিল ও স্থগিত করছে আগের দেয়া ক্রয়াদেশও, যার ফলে ব্যাপক মাত্রায় ক্রয়াদেশ হারাচ্ছে দেশের তৈরি পোশাক খাত।
করোনার প্রভাবে প্রথমে কাঁচামাল সরবরাহ সংকটে পড়তে হয়েছিল পোশাক খাতকে। কারণ দেশের তৈরি পোশাক খাতের ওভেন পণ্য তৈরির আনুমানিক শতকরা ৬০ শতাংশ কাপড় চীন থেকে আমদানি হয়। আর নিট পণ্য তৈরির আনুমানিক শতকরা ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কাঁচামাল চীন থেকে আমদানি হয়। চীনে করোনাভাইরাস হানা দেয়া দেশটি থেকে কাঁচামাল আসতে পারছিল না। কারণ করোনার প্রভাবে দেশটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ধীর গতিতে হলেও কাঁচামাল সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে পরে। কিন্তু এখন চাহিদা সংকটে পড়েছে পোশাক খাত। আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বিজেএমএই ও বিকেএমইএ’র সকল পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে বুধবার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজেরও ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের শিল্প উৎপাদন ও রফতানি বাণিজ্যে আঘাত আসতে পারে। এ আঘাত মোকাবেলায় আমরা কিছু আপৎকালীন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এ তহবিলের অর্থ দ্বারা কেবল শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাবে।