বঙ্গবন্ধু হত্যায় মদদদাতাদের বিচারে কমিশন গঠনের দাবি নিউইয়র্কে

287

নিউইয়র্ক থেকে : বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারি এবং মদদদাতাদের চিহ্নিত এবং বিচারের জন্যে ‘বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন’ গঠনের দাবির সাথে সহমত পোষণ করলেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা এবং বর্তমানে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়কারি আব্দুল হান্নান খান।

‘জাতীয় শোক দিবস’ তথা বঙ্গবন্ধুর শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে ১৪ অগাস্ট বুধবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার দোয়া-মাহফিল ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশের আইজিপি মর্যাদার এই তদন্ত কর্মকর্তা হান্নান খান আরো বলেন, ‘তবে আমরা চার্জশিটে খোন্দকার মোশতাক, মাহবুবুল আলম চাষীসহ বেশ ক’জনের নাম যুক্ত করেছিলাম ঘাতকদের বিশেষ সহযোগী হিসেবে। পরবর্তীতে কয়েকজনের নাম বাদ দেয়া হয়েছে মাননীয় আদালতে।’

হান্নান খান উল্লেখ করেন, দেশ ও প্রবাসে বর্তমানে একটি দাবি বেশ জোরালোভাবে উঠেছে। সেটি হচ্ছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারি ও মদদদাতাদের বিচার। এটি স্বাভাবিক। কারণ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার নেপথ্য কারিগরদের রেহাই দেয়ার অর্থ হবে বিচার অসম্পূর্ণ রাখা। ভবিষ্যতে আর কেউ যাতে এমন নিষ্ঠুর ষড়যন্ত্রের বলি না হন সেজন্যেই সবকিছু উন্মোচিত হওয়া জরুরী।

ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার অন্যতম সহ-সভাপতি মোস্তফা কামাল পাশা মানিকের সভাপতিত্বে এই আলোচনায় স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল কাদের মিয়া বলেছেন, ‘বিচারে দন্ডিত এক ঘাতক এখনও যুক্তরাষ্ট্রে এবং আরেকজন কানাডায় বাস করছে। এদু’জনকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিতে প্রবাসীদের আন্তরিক সহযোগিতার বিকল্প নেই। একইসাথে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট কালরাতে নৃশংসতার মদদদাতা হিসেবে জিয়াসহ অন্য সকলেরও মরনোত্তর বিচার করতে হবে। অন্যথায় বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার যথাযথভাবে সম্পন্ন হবে না।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কন্ঠযোদ্ধা শহীদ হাসান বলেন, ‘বাঙালি জাতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত জাতি পুরোপুরি কলংকমুক্ত হবে না।’

কন্ঠযোদ্ধা শহীদ হাসান বলেন, ‘অনেক কিছুই করা সম্ভব হচ্ছে না। সংবিধান থেকে এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। বিসমিল্লাহির রাহমানুর রাহিমও রয়েই গেছে। তাই, আমার মনে হয় বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার পরিপুর্ণভাবে সম্পন্ন করতে হবে জীবনের সর্বস্তরে বঙ্গবন্ধুর নীতি-আদর্শের বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে।’

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য দেন আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার এবং যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ, সহ-সভাপতি হারুন ভ’ইয়া।

শুরুতে বঙ্গবন্ধুসহ ঐ কালরাতে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের অপর সদস্যগণের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন ইমাম কাজী কায়্যুম। ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য শুভ রায়ের সঞ্চালনায় মঞ্চের পাশে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আকবর হায়দার কিরণ, সাংগঠনিক সম্পাদক কানু দত্ত, প্রচার সম্পাদক মো. ফারুক, নির্বাচন কমিশনার কবি মিশুক সেলিম এবং জাহেদ শরিফ, সদস্য সুজন আহমেদ প্রমুখ।

সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পনে ছিলেন সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ, সেক্রেটারি মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বারি, সহ-সভাপতি হারুন ভ’ইয়া, উপদেষ্টা কন্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায় এবং কন্ঠযোদ্ধা শহীদ হাসান, কোষাধ্যক্ষ আলিম খান, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ফাহাদ সোলায়মান, মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা এম এ আওয়াল, মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক প্রমুখ। বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণে ছিলেন সহ-সভাপতি হাজী জাফরউল্লাহ, সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মিয়া, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য আলমগীর কবির, আবুল বাশার ভ’ইয়া, এটিএম মাসুদ, নাজিমউদ্দিন, শাহাবউদ্দিন লিটন প্রমুখ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.