চামড়া ফেলে কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলেন ব্যবসায়ী
ঢাকা: খুব অল্প আয় সাইদুল ইসলামের। সংসারের চাহিদা মেটাতে কখনো পার্কে বাচ্চাদের খেলনা আবার কোনো স্কুলের সামনে ঝাল মুড়িও বিক্রি করেন তিনি। এভাবেই পুঁজি জমিয়েছিলেন এবারের ঈদের চামড়া ব্যবসা করবেন বলে। পরিবারের সবার মুখে হাসি ফোটাতে শুরুও করেছিলেন তা। ঈদের দিন থেকে শুরু করে আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনেও কেনা চামড়া সঠিক দামে বিক্রি না হাওয়ায় সেগুলো রাস্তায় ফেলে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে গেছেন তিনি।
গরুর চামড়া কিনে ব্যবসা করার মতো মূলধন না থাকায় গতকাল সোমবার ঈদের দিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে শুধু মাত্র গরুর মাথার ও ছাগলের চামড়া কিনেছিলেন সাইদুল ইসলাম। যদিও এবারের কোরবানির গরুর চামড়ার মূল্য গত কয়েকবছরের তুলনায় খুবই কম।
আজ দুপুর ১২টায় সাইন্সল্যাব মোড় এলাকায় অস্থায়ী চামড়ার হাটে গিয়ে দেখা যায়, সাইদুলের ফেলে দেওয়া চামড়াগুলো রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে সিটি করপোরশনের ময়লার গাড়ি। কিছু চামড়া পড়ে থাকলেও পরে সেগুলোও তুলে নিয়ে যায় পরিচ্ছন্নকর্মীরা।
এই দৃশ্য দেখে আফসোস করছিলেন হাটের অন্যান্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, গরিব সাইদুল হয়ত সামান্য পুঁজি হারিয়েছেন। কিন্তু দেশের মুল্যবান সম্পদ যে নষ্ট হলো সেই দায়ভার কে নেবে?
এ সময় হাটে থাকা মাসুম নামের অপর এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘আমার সামনেই ওই লোকটা চামড়া গুলো ফেলে চলে গেল। সেগুলো গতকাল কেনা হয়েছিল, আজ পচন ধরতে শুরু করেছে। এমনিতেই ছাগলের চামড়ার বাজার মুল্য কম, তার উপর বাসি হওয়ায় ক্রেতা পাননি তিনি। তা ছাড়া পুলিশ ও সিটি করপোরশনের লোকজন তো রাস্তার উপর বেশিক্ষণ চামড়া রাখাতেই দিচ্ছে না।’
চামড়া দাম কম হওয়ায় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘খালি চোখে দেখলে সব বোঝা যায় না। চামড়ার দাম কমে গেছে; ব্যাপারটা ঠিক তেমনই। যে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী চামড়া গুলো কিনে আনেন সেগুলোতে লবণ মাখাতে একটা বড় অংকের টাকা খরচ করতে হয়। লবণ মাখানো চামড়াগুলো আমরা সাভারে নিয়ে ভালো দামে বেচে দেই। আর যদি ভাল দাম না হয়, নিজেরাই প্রসেস করে রাখি।’
ওই হাটে দায়িত্ব পালন করছিলেন ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেবরাজ। তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের নির্দেশে সড়ক পরিষ্কার করা হচ্ছে। তাই এখানে সড়কে চামড়া রেখে বিক্রি করতে দেওয়া হচ্ছে না।’ সূত্র : আমাদের সময় অনলাইন