কাশ্মীর সমস্যায় ‘তৃতীয় শক্তির’ সাহায্য চায়নি মোদি, ট্রাম্পের দাবি খারিজ

303

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: তিন দিনের আমেরিকা সফরে গিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সোমবার তার সফরের প্রথম দিনেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও কাশ্মীর সমস্যায় তার সাহায্য চেয়েছেন। দু’পক্ষ রাজি থাকলে তিনিও এই বিষয়ে মধ্যস্থতা করতে রাজি। ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পরেই জবাব দিল নয়াদিল্লি। জানিয়ে দেওয়া হলো, কাশ্মীর নিয়ে অন্য কারও সাহায্য কোনও দিন মোদি চাননি। আর ভবিষ্যতেও চাইবেন না। এটা দু’দেশের মধ্যেকার ব্যাপার। এর সমাধান তখনই সম্ভব, যখন পাকিস্তান সীমান্তের ওপার থেকে জঙ্গি কার্যকলাপ বন্ধ করবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এই ধরনের কোনও সাহায্য মোদি কখনও চাননি। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাবিশ কুমার টুইট করে বলেন, আমরা শুনেছি আমেরিকার প্রধানমন্ত্রী ট্রাম্প বলেছেন ভারত ও পাকিস্তান চাইলে তিনি কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে রাজি। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করতে চাই, প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে এই ধরনের কোনও সাহায্য চাওয়া হয়নি। কাশ্মীর আমাদেরই অঙ্গ। পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই সেই সমাধান সম্ভব। সিমলা চুক্তি ও লাহোর চুক্তিতে স্পষ্ট লেখা আছে, এই দুই দেশের মধ্যেকার সব সমস্যা যৌথ আলোচনার মধ্যেই সমাধান করতে হবে।রয়টার্স জানায়; হোয়াইট হাউসে ইমরান খানকে পাশে নিয়ে ট্রাম্প বলেন, দু’সপ্তাহ আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। তখন তিনি বলেছিলেন, আপনি কি কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হতে পারবেন। তখন আমি বলেছিলাম, আমি চাই এই সমস্যার সমাধান হোক। তার জন্য যদি আমাকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে হয়, তাতে আমি রাজি। ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পরেই ইমরান বলেন, আপনি যদি এই সমস্যা দূর করতে পারেন, তাহলে কোটি কোটি মানুষ আপনাকে ধন্যবাদ জানাবে।

ট্রাম্পের এই বক্তব্য সামনে আসার পরেই রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে শুরু হয় গুঞ্জন। জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ টুইট করে বলেছেন, এ বার কি ভারত ট্রাম্পকে মিথ্যেবাদী বলবে? নাকি স্বীকার করে নেবে যে কাশ্মীর সমস্যা মেটাতে পারছেন না মোদি। তাই তৃতীয় শক্তির সাহায্য চেয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা শশী থারুর টুইট করে বলেন, আমার মনে হয় ট্রাম্প কী বলছেন, সেটা উনি নিজেই জানেন না। হয় তাকে ঠিকমতো বলে দেওয়া হয়নি, নয়তো তৃতীয় শক্তির সাহায্যের ব্যাপারে মোদি কী বলেছেন, সে ব্যাপারে ওনার জানা নেই। আমার মনে হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিৎ এ ব্যাপারে দিল্লির ভাবনাটা ঠিকমতো বুঝিয়ে দেওয়া। তারপরেই নিজেদের বক্তব্য জানায় মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।

এর আগে, অনেকবার কাশ্মীর সমস্যা মেটানোর জন্য তৃতীয় শক্তির সাহায্য চেয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু ভারতের তরফে সবসময় তা নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। মোদি বারবার বলেছেন, কাশ্মীর ভারতের। আর তাই তা ভারতের কাছেই থাকবে। বরং পাকিস্তানই জঙ্গি অনুপ্রবেশ করিয়ে কাশ্মীরে অশান্তি তৈরি করার চেষ্টা করছে। আমেরিকাও অবশ্য আগে জানিয়েছে, কাশ্মীর দুই দেশের মধ্যেকার সমস্যা। এটা নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যেই মেটানো উচিৎ। কিন্তু তারপরেও ইমরানের সফরের প্রথম দিনেই ট্রাম্পের এই বক্তব্য নিয়ে শুরু হয় জলঘোলা। যদিও তারপরেই জবাব দেয় নয়াদিল্লি। সূত্র : দ্য ওয়াল 

Leave A Reply

Your email address will not be published.