একনেকে ১৮ হাজার কোটি টাকার ৭ প্রকল্প অনুমোদন
ঢাকা: বাংলাদেশ রেলওয়ের আখাউড়া-সিলেট মিটার গেজ রেলপথকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর করার লক্ষে ১৬ হাজার ১শ ৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকার প্রকল্পসহ মোট ১৮ হাজার ১৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) নির্বাহী কমিটি।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। একনেক সভা শেষে প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি বলেন, মোট ১৮ হাজার ১৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহি কমিটি (একনেক)। এরমধ্যে নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ৬ হাজার ৬২২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে এবং ১১ হাজার ৫৬৮ কোটি ঋণ নেওয়া হবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, আখাউড়া-সিলেট ডুয়েল গেজে প্রকল্পটি ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। এটি বাস্তবায়নে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে জি টু জি’র আওতায় ১০ হাজার ৬৫৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা চীন থেকে নেওয়া হবে। প্রকল্পের আওতায় ২২৫ কিলোমিটার মিটার গেজ রেলপথ ২৩৯ দশমিক ১৪ কিলোমিটার ডুয়েল গেজে রূপান্তরিত করা হবে।
এদিকে তিনি আরও বলেন, অপর প্রধান প্রকল্পের আওতায় ৪৯টি বড়, ২৩৭টি ছোট রেলসেতু, ২২টি স্টেশনের সিগনালিং ব্যবস্থা, ১৬ হাজার ৬৯০ বর্গমিটার আবাসিক ভবন নির্মাণ, ব্যারাক ও ডরমিটরি এবং ২শ দশমিক ৩০ একর ভূমি অধিগ্রহণ রয়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার ৪৭ দশমিক ২৪ শতাংশ। এ সময়ে ৮৩ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এর আগের বছরে এই একই সময়ে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৪৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এ সময়ে ৭১ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা ব্যয় হয়।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের আগে পর্যাপ্ত উন্মুক্ত স্থান, বারান্দা এবং ভ্যান্টিলেটর সিস্টেম, ফায়ার ইস্টিংগুইশিং সিস্টেম রাখা এবং পুকুর ও জলাধার রাখার বিষয়েও নির্দেশনা দেন। এক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনেরও নির্দেশ দেন।
একনেক সভায় দেশে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ৯১৯ দশমিক ৮৫ কোটি টাকার ভারতীয় অর্থনৈতিক জোনের অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এটি বাস্তবায়নে ভারতের তৃতীয় ক্রেডিট লাইন থেকে প্রায় ৯২০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে।
এছাড়া প্রধান প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রায় ১৫২ লাখ কিউবিক মিটার ভূমি উন্নয়ন, পানি সরবরাহ ও ড্রেজিং নিশ্চিত করতে ফেনী নদী থেকে ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপ লাইন স্থাপন, ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়ক স্থাপন, একটি পাম্প স্টেশন স্থাপন, একটি জলাধার, ইন্টারনাল লিংকেজ, বহির্ড্রেন লাইন নির্মাণ, ৫ হাজার মিটার সীমানা দেয়াল নির্মাণ প্রভৃতি।
সভায় আরও ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার ও পল্লি উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা।
সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজি’র মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা বিভাগের সচিব, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।