২৬ মার্চের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা: মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী

262

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে যেসকল বিদেশী নাগরিক অবদান রেখেছিলেন পর্যায়ক্রমে এমন ১ হাজার ৭০০ জনকে স্বীকৃতিসহ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হবে। এরমধ্যে ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারীসহ ভারতের ২২৭ জন, পাকিস্তানের ১৭জন ব্যক্তিসহ ২১টি দেশের ৩২৯ জন বিদেশী ব্যক্তি ও ১০টি সংগঠনকে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখায় স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া আগামী ২৬ মার্চের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের বৈঠকে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে মেজর (অব.) রফিকুল ইসলামের (বীর উত্তম) ও মীর মোস্তাক আহমেদ রবির প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব তথ্য জানান।মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ২০১১ সালের ২৫ জুলাই ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে স্বাধীনতা সম্মাননা দিয়ে শুরু হয়ে এই স্বীকৃতি প্রদানের কাজ। এরপর ২০১৫ সালের ৭ জুন পর্যন্ত ৮ বারে ৩৩৯ জন বিদেশীকে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখায় স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। সম্মাননা প্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের ২১৭ জন ব্যক্তি এবং ১০টি প্রতিষ্ঠান, যুক্তরাষ্ট্রের ২৬ জন ব্যক্তি, পাকিস্তানের ১৭জন ব্যক্তি।

এসময় মন্ত্রী আরো জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখার  বিদেশী নাগরিককে যে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে তার জন্য কারো কাছ থেকে কোন  আবেদন চাওয়া হয়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মুক্ত্যিুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির মাধ্যমে বিদেশী এসব বন্ধুদের ও প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হয়।

রাজাকার, আলবদর, আলসামদের তালিকা চূড়ান্ত করতে পারিনি
এমপি শামীম ওসমানের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, এখনো আমরা রাজাকার, আলবদর ও আলসামদের তালিকা সঠিক ভাবে চূড়ান্ত করতে পারিনি। কারণ হিসেবে তিনি জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তালিকাটি সংরক্ষিত ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২০০১ সালে বিএনপি জামাতের আমলে এ তালিকা সরিয়ে ফেলে। আমরা সেগুলো আর খুঁজে না পেয়ে নতুন করে প্রতিটি উপজেলা থেকে তালিকা চেয়ে পাঠাই। অনেকে দিয়েছেন, আবার অনেক উপজেলা থেকে রাজাকার, আলবদর ও আলসামদের তালিকা এখনো আসেনি। সেকারণে তালিকা চূড়ান্ত করতে দেরি হচ্ছে। এসময় মন্ত্রী জানান, আমরা আলবদর, রাজাকার ও  আল-সামসদের তালিকা তৈরি করে তা প্রকাশ করার চেষ্টা চলছে।

২৬ মার্চের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ
মীর মোস্তাক আহমেদ রবির (সাতক্ষীরা-২) অপর প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে যাচাই-বাছাই করে তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। আগামী ২৬ মার্চের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে । এসময় মন্ত্রী জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে যাচাই বাছাই করে তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। ঐসব তালিকা পর্যালোচনা করে বিশেষ করে ভারতীয় তালিকা, বেসামরিক গেজেট, শহিদ বেসামরিক গেজেট, সশস্ত্র বাহিনী শহিদ গেজেট, শহিদ বিজিবি গেজেট, যুদ্ধাহত গেজেট, খেতাবপ্রাপ্ত গেজেট, সেনাবাহিনী গেজেট, বিমানবাহিনী গেজেট, নৌবাহিনী গেজেট, নৌ কমান্ডো গেজেট, বিজিবি গেজেট, পুলিশ বাহিনী গেজেট, আনসার বাহিনী গেজেট, স্বাধীন বাংলা বেতার শব্দ সৈনিক গেজেট,  বীরাঙ্গনা গেজেট, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গেজেট, ন্যাপ কমিউনিস্ট পার্টি ছাত্র ইউনিয়ন বিশেষ গেরিলা বাহিনী গেজেট, লাল মুক্তিবার্তা, লাল মুক্তিবার্তা স্মরণীয় যারা বরণীয় যারা, মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা (সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী), ভারতীয় তালিকা (পদ্মা), ভারতীয় তালিকা (মেঘনা), যুদ্ধাহত (বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ) গেজেট, মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা (সেক্টর), বিশ্রামগঞ্জ হাসপাতালে নিয়োজিত/ দায়িত্বপালনকারী মুক্তিযোদ্ধা  গেজেট, যুদ্ধাহত সেনা গেজেট তালিকা পর্যালোচনা করে ২০১৯ সালের ২৬ মার্চের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.