খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে যা বললেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী

285

ঢাকা: যতদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে ততদিন খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন না এমন মন্তব্য পোষণ করা ঠিক না বলে জানিয়েছেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া র্দীঘদিন জেলে থাকার জন্য তিনি নিজেই দায়ী।

সম্প্রতি দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সরাসরি টকশো অনুষ্ঠানে এসে এক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে শ ম রেজাউল করিম বলেন, তার সম্পর্কে আমার নিজস্ব ধারণা আছে, তিনি একজন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং অনেক বয়স্ক মানুষ এটা আমার কাছে সুখকর না। সুখকর অন্য রাজনৈতিকরাও সমস্ত কিছুর উর্ধ্বে থাকবেন না, দায় দ্বায়িত্বে থাকবেন না। কোনো অভিযোগ আসলে সে দায় নিবেন না সেইটা বিচারহীনতা সংস্কৃতি। সেখান থেকে আমরা বাহির হয়ে এসেছি ওখানেই আবার আনন্দ।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার জার্জমেন্টের পরে ওনারা বলেছেন সুপ্রিম কোট গেলেই হবে। কেউ কেউ তো বলছিলেন, নির্বাচন শেষে দুই জানুয়ারি জেল থেকে (বেগম খালেদা জিয়া) মুক্তি পাবে। নির্বাচনের পূর্বে সরাসরি এটা বক্তব্য ছিল।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা এখন চাইলেই সবকিছু হয় না। আইনের নিজস্ব প্রক্রিয়ায় হয়। ক্ষমতা বদলে গেলেও আইন পরিবর্তন হয় না। ক্ষমতাসীন দলের রানিং এমপি কনভিকশন হয় এটা শেখ হাসিনা সরকারের রেকর্ড। নিজের দলের লোককেও ছাড় দেওয়া হয়নি। নিজের দলের মন্ত্রীর জামাতা মৃত্যুর দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছে। নিজের দলের এমপির ভাগনি জামাই ছাত্রলীগের ছেলেদের মৃত্যু দণ্ড হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যটা খুব পরিষ্কার (whoever maybe nobody is above the law) বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বাহির হয়ে আসতে হবে। সেই জায়গাটা তিনি প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন, এজন্যই আমরা বলছি যে, আমরা ক্ষমতায় থাকি না থাকি এর সাথে বেগম খালেদা জিয়া জেল থেকে বাহির হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে জেল থেকে মুক্তি পেতে হলে আগে আইনের আশ্রয় নিতে হবে, তারপর সেখান থেকে হতে হবে। কোর্ট তার যে সাজা বাড়িয়েছেন এটার সাথে সরকারের কোনো হাত নেই। এটা দুর্নীতি দমন কমিশন, ইনডিপেনডেন্স অর্গানাইজেশন তাদের দায়ের করা মামলা এবং সাজা দিয়েছে হাইকোর্ট।

তিনি আরও বলেন, হাইকোর্টের রায়ের পর ওনারা অ্যাপিলের আবেদন করবেন। ওখানে যদি খালেদা জিয়া মুক্ত হতে পারেন তাহলে কিন্তু এসব প্রসঙ্গ আসবে। আর অ্যাপিলের ডিভিশন সরকারের নিয়ন্ত্রণে না। হাইকোর্টের ডিভিশনও কিন্তু সরকারের নিয়ন্ত্রণে না।

খালেদা জিয়া গ্রেফতারের পরে একের পর এক থানায় মামলা আসে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আ শ ম রেজাউল করিম বলেন, যে কয়েকটি মামলায় খালেদা জিয়া সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছেন। সব মামলাগুলো নিষ্পত্তি করার জন্য ওনারা সর্বোচ্চ আদালতে এসেছেন। হাইকোর্টে অ্যাপিল ডিভিশনে যে সব মামলা গেছে সেগুলো বাতিল হওয়ার মতো মামলা না হওয়ায় কোনো মামলা বাতিল হয়নি।

তিনি বলেন, সর্বোচ্চ আদালত যখন বলছে যে, এসব মামলার তথ্য, ভিত্তি প্রমাণ সবি বিদ্যমান আছে সেক্ষেত্রে আমাদের কি করার আছে। তবে কিছু কিছু মামলায় তিনি অনেক আগে থেকে আসামি ছিলেন। সেই মামলাগুলোতে তিনি হাজির হয়ে জামিন নেননি। এই কারণে যদি প্রতিটা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো তাহলে এর জন্য দায় কি ল’ইনফোর্স এজেন্সির?

দীর্ঘদিন ধরে জেলে বন্দি রাখা হয়েছে কেন? জানতে চাইলে রেজাউল করিম বলেন, বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। প্রশাসন ভেবেছে যে, হয়তো তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে মামলাগুলোতে কনটেস্ট করবেন। কিন্তু উনি তা করেন নি।

মন্ত্রী আরও বলেন, একটা পর্যায়ে তিনি যখন জেল কাস্টরিতে গেলেন, তখন কিন্তু বেরিয়ে আসার কোনো অপশন ছিল না। তার নামে অনেক ওয়ারেন্ট থাকলে জেল কর্তৃপক্ষ বেগম জিয়াকে বলতে পারবেন না যে, আপনার নামে ওয়ারেন্ট আছে আপনি বেরিয়ে যান।

Leave A Reply

Your email address will not be published.