শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানালেন প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করায় সকল শ্রেণীর মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ করে শিক্ষকদের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। শিক্ষকরা সততার সাথে দায়িত্ব পালন করায় তাদের ধন্যভাদ জানান তিনি। একইসঙ্গে শিক্ষকদেরকে নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।
এর আগে বেলা ৩টা ৫ মিনিটে মঞ্চে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা মঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ‘জয় বাংলা’ ধ্বনিতে মুখর হয়ে ওঠে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। বেলা আড়াইটার দিকে সমাবেশ শুরু হয়। শুরুতেই পবিত্র কোরআন, গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক পাঠ করা হয়। প্রথম বক্তব্য দেন ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন।
শনিবার সকাল থেকে মিছিল নিয়ে রাজধানী ও এর আশপাশের জেলা থেকে সমাবেশস্থলে আসতে থাকেন নেতাকর্মীরা। বেলা ১১টার পর থেকে বাংলা একাডেমি, রমনা কালি মন্দির, টিএসসি ও চারুকলার সামনের প্রবেশ পথ উন্মুক্ত করা হয়েছে সাধারণ মানুষের প্রবেশের জন্য।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মাঠের ভেতরের পুকুরের পূর্বপাশে নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ। যার সামনের অংশ তৈরি করা হয়েছে দলীয় প্রতীক নৌকা আকৃতির। এছাড়া উদ্যানসহ আশপাশের এলাকায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসহ সরকারের উন্নয়ন ও অর্জনের তথ্যসংবলিত পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার লাগানো হয়েছে। বক্তব্যের শুরুতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার উদ্দেশে অভিনন্দনপত্র পাঠ করবেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোয়ায়েল আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতি মন্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আরম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, দীপুমনি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের নেতারা ও মন্ত্রী পরিষদের বেশিরভাগ নেতারাই মঞ্চে উপস্থিত আছেন।
এর আগে, শনিবার সকাল ৯টা থেকে ঢাকাসহ আশপাশের এলাকা থেকে জনসমাগম ঘটতে থাকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বাংলা একাডেমির বিপরীত দিকে উদ্যানের প্রবেশ পথে নেতাকর্মীদের দীর্ঘ লাইন সকাল থেকেই।
এই সমাবেশ উদযাপনে দেশ বরণ্য শিল্পীরা গানে গানে মুখরিত করে তুলেন গোটা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। শিল্পীদের সংগীতের তালে তালে গলা মেলায় নেতাকর্মীরাও।
জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ও ক্লোজআপ ওয়ান তারকা সালমা, ফকির শাহাব উদ্দিন, জানে আলম, আঁখি আলমগীর, ফাহমিদা নবী, পথিক নবী, মমতাজ, ফকির আলমগীর, ব্যান্ড সঙ্গীত জলের গান, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী রফিকুল আলম, ছাত্রলীগ নেতা জসিমসহ অন্য শিল্পীরা এসব গান পরিবেশন করেন।
গানের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৃতিত্ব ও কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়। এছাড়াও গত এক দশকে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গানের মাধ্যমে প্রচার করা হয়।
এছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের থিম সং ‘জয় বাংলা..জিতলো আবার নৌকা’ বাজিয়ে নেতাকর্মীরা সমাবেশের দিকে ধাবিত হচ্ছেন। সমাবেশকে ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে টিএসসি এলাকায় রয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। ব্যান্ড পার্টির সদস্যরা বাদ্যযন্ত্র পরিবেশনের মাধ্যমে আগত নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখছেন।
সমাবেশে নেতাকর্মীদের আসার সুবিধার্থে সকাল ১১টা থেকে শাহবাগের রূপসী বাংলা সিগন্যাল, কাটাবন মার্কেট মোড়, নীলক্ষেত মোড়, চানখাঁরপুল, জিপিও ও মৎস্য ভবন মোড় থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানমুখী সব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে দেখা যায়, লাল-সবুজের টি-শার্ট ও মাথায় ক্যাপ পরে পায়ে হেঁটে কিংবা পিকআপ ভ্যান, ট্রাক ও বাসযোগে বিভিন্ন সড়ক ধরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে আসছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
রাজধানীর আশপাশের জেলাগুলো থেকেও আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশে এসে যোগ দিচ্ছেন। তাদের মিছিল-স্লোগান ও পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারপাশ।
গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ২৫৭টি আসনে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। জোটগতভাবে তাদের আসন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮৮টি। এই বিজয় স্মরণীয় করে রাখতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ।
বৈঠাসহ ছোট বড় ৪০টিরও বেশি নৌকা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত ফেস্টুনে সাজানো হয়েছে সমাবেশ মাঠ। মূল মঞ্চটি সাজানো হয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারের মলাটের রঙে।