মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জরুরী তলব

249

ঢাকা: দুই দেশের সীমান্তের শূন্য রেখার ১৫০ গজের মধ্যে তুমব্রু খালে মিয়ানমার অবৈধভাবে কেন পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছে, তার কারণ জানতে চেয়ে ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও’কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে তাকে তলব করার মাধ্যমে নেপিডোর কাছে এ বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে একটি কূটনৈতিক চিঠি দিয়েছে ঢাকা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মঙ্গলবার সরেজমিন উপস্থিত থেকে দেখা গেছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তলবে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও বিকেল সাড়ে ৪টায় দুই প্রতিনিধিকে সঙ্গে নিয়ে মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত হন। একাধিক কূটনৈতিক সূত্র সারাবাংলাকে জানিয়েছে, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও‘কে মঙ্গলবার ডেকে এনে জানতে চাওয়া হয়, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূন্যরেখার ১৫০ গজের মধ্যে তুমব্রু খালে মিয়ানমারের পাকা স্থাপনা নির্মাণের কারণ কী। এ সময় রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও জানান, তার জানামতে ওই স্থাপনা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূন্য রেখার ৩০০ গজের বাইরে। আর সেটা কোনো পাকা স্থাপনা নয়।

ওইখানে আগে থেকেই অস্থায়ী স্থাপনা রয়েছে। ওই অস্থায়ী স্থাপনার খুঁটিগুলো স্থায়ী করা হচ্ছে। উ লুইন ও আরও জানান, এ বিষয়ে ঢাকার উদ্বেগ নেপিডোকে জানানো হবে। এদিকে, একই বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপিকে গতকাল সোমবার (১৪ জানুয়ারি) চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও’কে মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে এনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে নেপিডোর সর্বশেষ তথ্য জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে নেপডো কাজ করছে।

খুব শিগগিরই ঢাকাকে অগ্রগতি জানান হবে। এর আগে, আরাকান আর্মি ও আরসা নিয়ে বাংলাদেশকে জড়িয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের মুখপাত্রের দেওয়া বিবৃতির কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা। মিয়ানমারকে গত ৮ জানুয়ারি কূটনৈতিক চ্যানেলে এই প্রতিবাদপত্র পাঠানো হয়। মিয়ানমার সরকারকে দেওয়া প্রতিবাদপত্রে ঢাকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আরাকান আর্মি এবং আরসার কোনো ঘাঁটি নেই।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের মুখপাত্র আরাকান আর্মি ও আরসা নিয়ে বাংলাদেশকে জড়িয়ে গণমাধ্যমে যে বিবৃতি দিয়েছে তা বাংলাদেশের নজরে এসছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের মুখপাত্রের ওই বিবৃতি মিথ্যা ও মনগড়া। এছাড়া, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে গত ৪ নভেম্বর মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি ৪১ রাউন্ড গুলি ছোড়ায় দেশটির রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও’কে গত ৭ নভেম্বর (বুধবার) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়।

 বিজিপি কেন এমন ঘটনা ঘটাল, তার ব্যাখ্যা চেয়ে রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও’কে কূটনৈতিক চিঠি দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর আগে, মিয়ানমার ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট ইউনিট (এমআইএমইউ) নামের দেশটির সরকারি একটি ওয়েবসাইটে মানচিত্রে বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিনকেও মিয়ানমারের মধ্যে চিহ্নিত করার ঘটনায় গত ৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও’কে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.