ইসি-ঐক্যফ্রন্ট বৈঠকে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়
ঢাকা: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে ইসির বৈঠকে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে গিয়ে কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একটি প্রতিনিধি দল। এ বৈঠকে এই ঘটনা ঘটে।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে দু’পক্ষই সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনার কথা জানান। তবে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, বৈঠকে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে। বিশেষ করে সিইসি কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্নার মধ্যে একাধিক ইস্যুতে বিতর্ক হয়। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, এক পর্যায়ে সিইসি’র উদ্দেশ্যে মান্না বলেন, ‘মাইন্ড ইউর ল্যাংগুয়েজ।’
ঐক্যফ্রন্টের নেতারা কমিশনকে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচনের চেষ্টা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ওই নির্বাচনের চেষ্টা করে ফল পাওয়া যাবে না। কমিশন নিজেদের সিদ্ধান্তের পরিবর্তে অন্যের ইশারায় চালিত হয় বলেও অভিযোগ করেন তারা।
বৈঠক সূত্র জানায়, ইসি ও রাজনৈতিক দলের প্রতি মানুষের আস্থা আছে কি-নেই এ নিয়েই দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়। তবে বৈঠকের পরে ইসি সচিবকে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতাদের গলার আওয়াজ একটু চড়া হয়। এটা উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় নয়।
সূত্র জানায়, বৈঠকে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরেন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। জবাবে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মেশিনে কারসাজি করা যাবে না-এটা বিশ্বাস করতে বলছেন?
জবাবে সিইসি একটু উচ্চস্বরে বলে ওঠেন-‘আপনারা বড় বড় কথা বলেন, রাজনৈতিক দল ও তার নেতারাই একে অপরকে বিশ্বাস করে না। রাজনৈতিক দলের ওপরেই তো জনগণের আস্থা নেই।’
এক পর্যায়ে সিইসি’র উদ্দেশ্যে মান্না বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের প্রতি কোনো অনাস্থার কথা বলতে তারা এখানে আসেননি। তবে এই নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থা নেই।’
বৈঠক সূত্র জানায়, আ স ম রব নির্বাচনে ম্যাজিষ্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনা মোতায়েনের দাবি জানান। তিনি বলেন, সেনা মোতায়েন হলে মানুষ নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে আসার সুযোগ পাবে।
জবাবে কমিশনার শাহাদত হোসেন চৌধুরী বলেন, সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া অসাংবিধানিক।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বে কমিশনের অন্য চার সদস্য মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, শাহাদত হোসেন চৌধুরী ও কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আ স ম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ, বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল মালেক রতন, মোকাব্বির খান ও নঈম জাহাঙ্গীর।