ভেঙে গেল আকাশবীণার দরজা

280

ঢাকা: অদক্ষ প্রকৌশলী দিয়ে কাজ করানোর ফলে বিমানের ড্রিমলাইনার আকাশবীনার দরজার অংশ বিশেষ (র‌্যাফট) ভেঙ্গে গেছে। যার ফলে ঢাকা সিঙ্গাপুরের ফ্লাইট দেড় ঘন্টা বিলম্বে ছেড়ে যায়।

এ ঘটনায় চারিদিকে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

খুলে পড়া অংশটি প্রকৌশল বিভাগে নিয়ে যাওয়ার পর তারা সিঙ্গাপুরে ফ্লাইট বিলম্বে হলেও অপারেট করার সিদ্ধান্ত দেন। এসময়, দেখতে কিছুটা দৃষ্টিকটু লাগলেও নিরাপত্তা হুমকি নেই বলে বিমানের প্রকৌশল বিভাগ থেকে নিশ্চিত করা হয়।

এভিয়েশন নিউজের একটি প্রতিবেদনে ঘটনার তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিমানের প্রকৌশল শাখার পরিচালক সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘তদন্তে এই ঘটনার সঙ্গে যাদের নাম জড়িত থাকার প্রমান পাওয়া যাবে তাদের সকলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে’। প্রসঙ্গত, এ ঘটনায় বিমানের প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমানকে তাৎক্ষনিক সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ঘটনার সময় উপস্থিত প্রকৌশল বিভাগের কর্মীদের একজন বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৮টায় ড্রিমলাইনার দিয়ে সিঙ্গাপুর ফ্লাইট করার প্রস্তুতি চলছিল। এটি বোর্র্ডিং ব্রিজে সংযুক্ত অবস্থায় বিএফসিসি থেকে যাত্রীদের জন্য ড্রিমলাইনারে খাবার তোলা হচিছল। এ সময় প্রকৌশল বিভাগের স্টাফ মোস্তাফিজুর রহমান হঠাৎ সজোরে দরজা অন করতে গিয়ে অন্য একটি বাটনে চাপ পড়ে।

এতে খুলে পড়ে র‍্যাফট নামে দরজার একটি অংশ। তাৎক্ষনিক তারা এই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য ম্যানুয়ালি জোড়াতালি দিয়ে লাগানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হওয়ায় বিষয়টি মুহুর্তেই রটে যায়’।

খুলে পড়া অংশটি প্রকৌশল বিভাগে নিয়ে যাওয়ার পর তারা সিঙ্গাপুরে ফ্লাইট বিলম্বে হলেও অপারেট করার সিদ্ধান্ত দেন। এসময়, দেখতে কিছুটা দৃষ্টিকটু লাগলেও নিরাপত্তা হুমকি নেই বলে বিমানের প্রকৌশল বিভাগ থেকে নিশ্চিত করা হয়।

এ ঘটনায় বিমানটিতে ভ্রমণ করতে আসা যাত্রীদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায়। অন্যদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘ব্যপারটি সন্দেহজনক। এই ঘটনার জন্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এবং বিমানটি ক্রয়ের সাথে যুক্ত থাকা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জবাবদিহীর আওতায় আনা উচিৎ’।

ড্রিমলাইনারটি প্রধানমন্ত্রীর খুবই পছন্দের উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘এই বিমানের জন্য বিভিন্ন যন্ত্রাংশ কেনাবেচায় কোন দূর্নীতি হয়েছে কিনা তাও তদন্ত করা উচিৎ’।

র‍্যাফট ভেঙে গেলেও উড়োজাহাজটির ফ্লাইট পরিচালনায় কোন বিঘ্ন ঘটেনি বলে জানান বিমানের জেনারেল ম্যানেজার শাকিল মেরাজ। তিনি এই বিমানের পূর্বনির্ধারিত সকল ফ্লাইট বহাল থাকবে বলেও সকলকে নিশ্চিত করেন।

তবে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ আশীষ রায় চৌধুরী বলেন, ‘এতে বিমানের যাত্রীরা আতংকে থাকবেন’।

এধরনের র‌্যাফটবিহীন এয়ারক্রাফট দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা চরম ঝুকিপুর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ফ্লাইট বহাল রাখলেও, র‌্যাফটবিহীন এই এয়ারক্রাফট চালাতে হলে প্রতি ফ্লাইটে কমপক্ষে ৫৫ জন যাত্রী কম নিতে হবে’।

Leave A Reply

Your email address will not be published.