জাতীয় শোক দিবসে জিয়ার কবর ঢাকার কেন্দ্রস্থল থেকে সরানোর দাবি এবার ভিয়েনায়

470

ভিয়েনা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৩তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশন, ভিয়েনায় এক শোক সভার আয়োজন করা হয়। অষ্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার হউফসাইলস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস কার্যালয়ের মিলনায়তনে ১৫ আগস্ট বুধবার বিকেল ৬টায় অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রদূত মো: আবু জাফর, সঞ্চালনা করেন কাউন্সেলর ও চ্যান্সারী প্রধান রাহাত বিন জামান।

প্রবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করে প্রথমেই ‘৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্র্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রেরিত বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
মহামান্য রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করেন, রাষ্ট্রদূত মো: আবু জাফর। প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন, দূতাবাসের কাউন্সেলর ও চ্যান্সারী প্রধান রাহাত বিন জামান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন, দূতাবাসের প্রথম সচিব মিস মালিহা শাহজাহান।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সর্বইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, অস্ট্রিয়া প্রবাসী লেখক, মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক এম. নজরুল ইসলাম, অষ্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম কবির, অষ্ট্রিয়া আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রুহী দাস সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক নয়ন হোসেন। এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন, শাহ মো: ফরহাদ, আহমেদ ফিরোজ, বাউল শিল্পী আবুল কালাম, বখতিয়ার রানা, ইয়াসিম মিয়া বাবু প্রমুখ।

সভায় রাষ্ট্রদূত মো: আবু জাফর তাঁর বক্তব্যে জাতীয় শোক দিবসের এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করায় সমবেত সুধীজনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। রাষ্ট্রদূত বঙ্গবন্ধুর বর্নাঢ্য কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, ‘বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তাঁর আদর্শ সদা জীবন্ত। যা বাঙালিদের নিরন্তর জাগ্রত রেখেছে।’ তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণগুলো একসাথে করে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বইয়ের বিভিন্ন অংশ পড়ে শুনান। তিনি বলেন, ‘এই বইটি নিজেরা পড়–ন, আপনাদের সন্তানদের হাতে তুলে দিন। তাদেরকে তা পড়তে বলুন। বঙ্গবন্ধু ভাষণ থেকে অনেককিছু শিখার আছে। বইটি একজন মানুষকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়ক হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজে আপনারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে সরকারকে সহযোগিতা করুন।’

সভায় এম. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ইতোমধ্যে জাতির ইতিহাসের অনেক বিকৃতি ও কলঙ্ক দূর করেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছে। জেল হত্যার বিচার করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে চলছে। ক্যানন্টনমেন্ট থেকে অশুভ রাজনৈতির দুর্গ সরিয়েছে। এ জন্য আমরা প্রবাসীরা সরকারকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই।’
নজরুল বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগের কাছে আমাদের দাবি, আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সর্বাগ্রে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের নেতা, ইতিহাসের অন্যতম নিষ্ঠুর খলনায়ক জেনারেল জিয়ার কবর ঢাকার কেন্দ্রস্থল থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে হবে।’
খন্দকার হাফিজুর রহমান নাসিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজ তাঁর কন্যা মাননীয় প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্রæত গতিতে এগিয়ে চলছে।’
সাইফুল ইসলাম কবির বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও সংগ্রামের পতাকাবাহী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে।’
সভার শেষে ‘৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ নিহত সকল শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর শৈশব, রাজনৈতিক এবং কর্ম জীবনের উপর স্থিরচিত্র ও প্রামান্যচিত্র প্রদর্শনী ছিল। আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.