নিউ ইর্য়কে বসবাসরত মোড়েলগন্জবাসী আহবায়ক কমিটি গঠন

1,121

নিউ ইর্য়ক থেকে বাংলা অক্ষরঃ

মোড়েলগঞ্জ উপজেলা বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। গত শুক্রবার ১০ আগষ্ট জাম্যাকার ষ্টার কাবাবে  সন্ধ্যায় ৮টায় মোড়েলগন্জ প্রবাসীদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায়  আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়  ৭  সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটিতে   গঠিত হয়েছে।

মোঃ ফারুক হোসেন তালুকদারকে  আহবায়ক ও তৈয়বুর রহমান তৈয়ব টনিকে  সদস্য সচিব করে নিউ ইর্য়কে মোড়েলগন্জ বাসীর ৭ সদস্য বিশিষ্ট  আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। আহ্বায়ক কমিটিকে ৩০ দিনের ২০১৮ মধ্যে খুলনা বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলা মোড়েলগন্জ বাসির সংগঠনের  নাম ও  পূর্ণাঙ্গ  কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। সংগঠনের  নাম ও  নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে কাজ করবে ৭ সদস্য বিশিষ্ট এই আহবায়ক কমিটি। নতুন কমিটি গঠনের আগ পর্যন্ত বর্তমান আহবায়ক কমিটি।  কার্যক্রম চালিয়ে যাবে বলে  সভায় সিন্ধান্ত হয়।

৭ সদস্য বিশিষ্ট  আহবায়ক কমিটি ঃ-১। আহবায়ক  মোঃ ফারুক হোসেন তালুকদার ১৩৪৭ ৪৮৪ ৫৮৩৪,  ২। সদস্য সচিব  তৈয়বুর রহমান তৈয়ব টনি ৯১৭ ৭০৪ ৪৫৩৯ .,সদস্য ৩। মাইনুল হাসান (মুহিত) ১৩৪৭ ৯৬১ ৬৬৭৪, ৪। লুৎফুর রহমান হিমু ১৯১৭ ৭১৭ ৩৮৮৬, ৫। সরোয়ার হোসেন ১৯২৯ ৩৫০ ৫৬১৬, ৬। গাজী ফয়জুর রহমান (সুমন), ৭। স্বপন তালুকদার ১৩৪৭ ৭৪০ ৯০৬৩। মোড়েলগন্জ বাসীকে উপরোক্ত আহবায়ক কমিটির সাথে যোগা-যোগ করার জন্যে অনুরোধ করা হইল।

ইতিহাস-খুলনা বিভাগের সর্ববৃহৎ উপজেলা মোরেলগঞ্জ। ইংরেজ মোরেল পরিবারের নামে নামকরণ হয় এ উপজেলার। জানা যায়, ইংরেজ শাসনের সুত্রপাতের পর ১৭৮১ সালে ইংরেজ সরকার কর্তিক এখানে প্রথম শাসন কেন্দ্রর স্থাপিত হয় এবং এর ম্যাজিষ্টেট ও কালেক্টর হন বিদেশি সিভিলিয়ন মি: টিলম্যান হেঙ্কেল। এরপর যশোর জেলার প্রতিষ্ঠা ঘটে। বাগেরহাট তখন মহকুমাও হয়নি। বৃহত্তর খুলনা জেলা তখন ছিল যশোর জেলার অন্তর্গত। আর এর বড় অংশ জুড়ে ছিল সুন্দরবন। সে সময় হেঙ্কেল সাহেব প্রথম সুন্দরবন আবাদের প্রচেষ্টা চালান। কিন্তু জমিদারদের সাথে বিবাদের জেরে তা আর বেশিদূর অগ্রসর হতে পারেনা। ১৮২৮ সালে সুন্দরবনের সীমানা নির্ধারনের জন্য Regulation III of 1828 আইন পাস হয়। এ আইনের আওতায় ১৮৩০ সালে সুন্দরবন জরিপ করা হয়। সে সময় মি: ডামপায়ার সুন্দরবন এলাকা জরিপ করে একে কয়েকট লটে (Lot) বিভক্ত করেন এবং পরে তা বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। ১৮৪৯ সালে মোরেল পরিবারের মিসেস মোরেল পানগুচি ও বলেশ্বর নদীর মোহনায় সুন্দরবন বন্দোবস্ত (ইজারা) নিয়ে বন আবাদ করে বসতি গড়ে নীল চাষ শুরু করেন। তারপর সেখানে তারা বহু শ্রমিক নিয়োগ করে আবাদকৃত জমির পরিমাণ বাড়াতে থাকে। মোড়েল ভাতাদের মধ্যে সবচেয়ে বৈষয়িক ও কর্মী ছিলেন রবার্ট মোরেল। তার উপর দায়িত্ব ছিল সমস্ত জমিদারদের দেখাশুনা ও পরিচালনা কারা। তিনি সুন্দরবন আবাদের জন্য বরিশাল থেকে প্রচুর শ্রমিক আনেন। জানা যায়, এসব আবাদির শ্রমিকের অনেকেই সেখানে স্থায়ীভাবে থেকে যায়। এছাড়া পারবর্তিতে দূরদুরন্ত থেকেও প্রজারা এখানে আসতে থাকে। এতে মোড়েল সাহেবদের আয় ক্রমস বাড়তে থাকে। তারা বসবাস ও নিজেদের শাসন পরিচালনার জন্য তখন বিরাট পাকা ভবন নির্মাণ করেন। এই ভবনটির অস্তিত্ব এখনও আছে যাকে স্থানীয় ভাবে কুঠীবাড়ি বলা হয়। তারা সেথানে বিরাট নারকেল সুপারির বাগনে করেন এবং বাজার বসান। ক্রমে মোরেলদের নামানুসারে এ বাজারে নাম হয়ে যায় মোরেলগঞ্জ। পরে ইংরেজ সরকার কর্তিক এ বাজারকে বন্দর হিসাবে ঘোষনা করা হয়। সে সময় বিভিন্ন পণ্য নিয়ে বিদেশি জাহাজ এসে ভিড়ত মোরেলগঞ্জ বন্দরে। পরে চর পড়ে যাওয়ায় ধিরে ধিরে এ বন্দর বন্ধ হয়ে যায়। নীল, নীলকর নিয়ে এই মোরেল পরিবারের সাথে মিশে আছে অনেক কাহিনী। এখানেই রচিত হয় ১৮৬১ সালে কৃষক বিদ্রোহের এক রক্তাক্ত অধ্যায়, যার নায়ক ছিলেন কৃষক রহিমউল্লা। মোরেল পরিবারের ম্যানেজার হেলির গুণ্ডাবাহিনীর সাথে প্রবল যুদ্ধে বীরত্বের সাথে সাথে নিহত হন তিনি। পরে অবশ্য এই রহিমুল্লাহ হত্যার জের ধরে মোরেলগঞ্জ থেকে মোরেল পরিবারের শাসন গোটাতে হয়েছিল ১৮৭৮ সালে। কিন্তু শুধু কালের স্বাক্ষী হয়ে এখনও রয়ে গেছে ‘কুঠিবাড়ি’ নামে পরিচিত তাদের নীলকুঠি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.