‘একজন রাজনীতিবিদের বিরূপ আচরণে সরকার বিব্রত’
নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের দিকে ইঙ্গিত করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ‘রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাস চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের পর একজন রাজনীতিবিদের বিরূপ আচরণে সরকার বিব্রত।’
‘সড়ক পরিবহন খাতে দীর্ঘদিন ধরে চলমান নৈরাজ্যের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্য, সরকারের কিছু কর্মকর্তা ও শ্রমিক নেতারা দায়ী’ বলেও মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
রবিবার ( ৫ আগস্ট) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘আমরা বৃদ্ধ হয়ে গেছি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আপস করি। আজকের তরুণরা তো নানা কাজে অকাজে ব্যস্ত। কিন্তু শিশু-কিশোররা এখনো নিষ্পাপ। তাদের মধ্যে এখনো ভাল গুণ গুলো আছে বলেই তারা আজ কয়েকদিন ধরে মাঠে নেমেছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মায়ের মমতা নিয়ে তাদের সঙ্গে আন্তরিকতা দেখিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছেন। যদিও আমি সরকারের মন্ত্রী তারপরেও বলছি কয়েক যুগ ধরে এই দেশে অব্যবস্থাপনা চলছে।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপদ সড়কের দাবিটি আজ উঠছে। এটা নৈরাজ্যের মধ্যে ঢেকে গিয়েছিলো। এর সঙ্গে জড়িত আছে অনেকেই। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বলেন কি সড়কের দায়িত্বে যারা আছেন; এছাড়া আছেন শ্রমিক নেতৃবৃন্দের ব্যক্তিবর্গ; তারা নিজেদের পেশাকে ব্যবসায় পরিণত করেছেন। এক শ্রেণির শ্রমিক নেতৃত্ব নিয়মিত চাঁদাবাজি করে বেড়ায়। সমস্ত সড়কপথকে তারা চাঁদাবাজিতে পরিণত করেছিল। এইসব শ্রমিক নেতৃবৃন্দ এরাই আবার বড় বড় পদে আছেন। নিরাপদ সড়ক আমরা চাই। আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্স মানবেন না কেন! কোনো নিয়ম না মেনেই একটা ছোট ছেলেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে চালকের আসনে বসিয়ে দিয়েছে। এই যে অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে মানুষ আজ বিক্ষোভ করেছে। তাদেরকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। কিন্তু এই অব্যস্থাপনা অনেক ক্ষেত্রেই আছে। এই স্বাস্থ্য খাতেও আছে। মনে রাখতে হবে এই বাচ্চারা একদিন আপনাদের বিরুদ্ধেও নামতে পারে।’
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘আজ চট্টগ্রামে কী হচ্ছে! ওই হাসপাতাল কিন্তু আমি উদ্বোধন করেছি। একজন রাজনীতিবিদ আমাকে নিয়ে গেলো, বলল হাসপাতালটা নাকি ভাল। সেখানে একটা বাচ্চাকে হত্যা করা হলো। এটা একটা অপরাধ। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে এসেছে অবহেলার কারণে মারা গেছে ছেলেটা। একজন লাইসেন্স বিহীন বাস চালকের হাতে মারা যাওয়া এবং একজন ডাক্তারের হাতে রুগী মারা যাওয়া একই অপরাধ।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেই জন্যে বলতে চাই সাবধান হয়ে যান এখন থেকে। যারা ভাল তাদের পক্ষে থাকতে হবে। আর যদি আসে খারাপ, তারা যদি আপনাদের চিকিৎসকও হন তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। বিশেষ শ্রেণি-স্বার্থ বাদ দিতে হবে। তেমনি একজন রাজনীতিবিদ খারাপ হলেও তার বিরুদ্ধে কথা হবে। উনি এত বড় একজন রাজনীতিবিদ হয়েও মর্মান্তিক ঘটনার পরে যে আচরণ করেছেন তাতে সরকার বিপদে পড়ে গেছে। এটা হতে পারে না।’