সরকারের একমাত্র লক্ষ্য স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া : প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ প্রায় ১ কোটি গ্রামীণ জনগণকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসতে ১০ জেলার ৩০০ ইউনিয়নে অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ উদ্বোধন করে বলেছেন, তাঁর সরকারের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে স্বাধীনতার সুফল এবং সেবাসমূহ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া।
১০ জেলার ৩০০ ইউনিয়নে অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে স্বাধীনতার সুফল এবং সরকারের সেবা সমূহ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া এবং এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ উদ্বোধন করেন।
ন্যাশনাল ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি ইনফ্রাক্টাচার ডেভলপমেন্ট (ইনফো-গভর্নমেন্ট থার্ড ফেস) প্রকল্পের অধীনে এটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং আইসিটি মন্ত্রণালয়ের আইসিটি বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল চীন সরকারের সহযোগিতায় ১০ জেলার ৩০০ ইউনিয়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।নীলফামারি, কুড়িগ্রাম, বগুড়া, পটুয়াখখালী, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ,রাজশাহী ও চাঁদপুর জেলার ৩০০ ইউনিয়নের প্রায় ১ কোটি জনগণ এই সুবিধা ভোগ করবে।
দেশের ২৬০০ ইউনিয়ন অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগের আওতায় আনার লক্ষ্যে ২০৩৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন।বঙ্গবন্ধু মৌলিক অধিকার খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং আবাসনসহ সরকারি সব ধরনের সেবা ধাপে ধাপে জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন। এখন আমরা তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।
তাঁর ডিজিটাল ভিশন কর্মসূচির প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর পরে আওয়ামী লীগ যখন ১৯৯৬ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত ছিল না এবং দেশে কম্পিউটারের ব্যবহার ছিল বিরল। ক্ষমতা গ্রহণের পরে জনগণের সামনে কম্পিউটার সহজলভ্য করতে কম্পিউটার ও এর যন্ত্রপাতির কর প্রত্যাহার করেছি এবং এ সময় কম্পিউটার বিষয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করি ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পরে ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করে। যাতে জনগণ কারিগরি শিক্ষায় পিছিয়ে না থাকে এবং যাতে তারা উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তার মিলিয়ে এগিয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, এই লক্ষ্য অর্জনে সরকার ভোলা জেলার প্রত্যন্ত চর কুকরিমুকরি থেকে শুরু করে গোটা দেশে ৫২০০টি ডিজিটাল সেন্টার গড়ে তুলেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকারি অফিসের ২৫,০০০ ওয়েবসাইট নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম ওয়েব পোর্টাল চালু করেছে এবং ৮,৫০০টি পোস্ট অফিসকে ডিজিটাল সেন্টারে রূপান্তরিত করেছে। পরে প্রধানমন্ত্রী নীলফামারি, কুড়িগ্রাম, বগুড়া, নেত্রকোনা এবং রাজশাহী জেলার ৫ ইউনিয়নের ছাত্র শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার সুবিধাভোগীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মত বিনিময় করেন।
ডাক টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি মন্ত্রী মুস্তাফা জব্বার এবং আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। আইসিটি বিভাগের সচিব জুয়েনা আজিজ প্রকল্পের ওপর অডিওভিজুয়াল বিবরণ উপস্থাপন করেন। অন্যান্যের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী একেএম মোজাম্মেল হক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সটিব নজিবুর রহমান অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।