বঙ্গবন্ধু পরিষদের জর্জিয়া শাখা গঠিত।। সভাপতি রুমী কবির, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব ভূঁইয়া

922

গত ৩০ জুলাই সোমবার দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের প্রধান শহর আটলান্টায় যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের জর্জিয়া শাখা গঠিত হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ডঃ নুরন নবীর সভাপতিত্বে ওইদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় মনসুন মাসালা রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এক সভায় ১৯ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটির ঘোষণা দেয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নবগঠিত কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আটলান্টার লেখক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক রুমী কবির এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন এএ ইউএস মর্টগেজের প্রধান নির্বাহী অফিসার ও সাংস্কৃতিক সংগঠক মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া।

কমিটির অন্যান্য কর্মকর্তাগণ হলেনঃ তিন জন সহসভাপতি যথাক্রমে মোহাম্মদ আলী হোসেন (সংগঠক ও সমাজ সেবী), ডাঃ মোজাম্মেল হক (ব্যবসায়ী) ও এম এইচ আকমল (সেতার বাদক ও নাট্য সংগঠক), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ এইচ রাসেল (সাংবাদিক ও সমাজসেবী), অর্থ সম্পাদক নজরুল ইসলাম (সংগঠক), সাংগঠনিক সম্পাদক মারুফ ভূঁইয়া (আবৃত্তি শিল্পী), সেমিনার ও গবেষণা সম্পাদক আরফীন চৌধুরী পিয়াল (নতুন প্রজন্মের লেখক), সাংস্কৃতিক সম্পাদক শামীমুল ইসলাম শামীম ( নাট্যকার ও সাংস্কৃতিক সংগঠক), জনসংযোগ সম্পাদক মাহবুব আলম সাগর (সমাজ সেবী ও সংগঠক), কার্যকরী সদস্যঃ রাশেদুল করিম রিপন (সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জর্জিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদ), মিসেস রাশেদা বেগম (সংগঠক ও সমাজ সেবী), চন্দ্র শেখর দত্ত ( সংগীত শিল্পী), মনিরুল ইসলাম (সংগঠক), রাসেল ভূঁইয়া (ব্যবসায়ী), ভাস্কর চন্দ ( আবৃত্তি শিল্পী, নাট্যকর্মী ও ব্যবসায়ী), আব্দুল আজাদ কয়েস (ব্যবসায়ী ও সংগঠক) ও সৈয়দ আহমেদ সোহেল (ব্যবসায়ী)।

এছাড়া ৯ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছেনঃ মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ মোল্লা (প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক, জর্জিয়া আওয়ামীলীগ), মুহম্মদ আজিজুর রহমান ( প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ), শাহীন হুসেইন (বঙ্গবন্ধু গবেষক ও সংগঠক), গোলাম রহমান (কবি), ডঃ শাহাব সিদ্দিকী (সংগঠক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক), সুভাষ চক্রবর্তী (সমাজসেবী), মোহাম্মদ আব্দুল হক (সংগঠক ও সমাজ সেবী), বোরহান উদ্দিন আহমেদ (সংগঠক ও সমাজসেবী) ও ডাঃ হাসান হাফিজ (চিকিৎসক)।

ডঃ নুরন নবী আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন কমিটির অনুমোদন স্বাক্ষর করার পর সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বক্তব্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনাদর্শ ও রাজনৈতিক দর্শনকে প্রবাসে ছড়িয়ে দেয়ার আহবান জানান। তিনি বঙ্গবন্ধুকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ মানব হিসেবে আখ্যায়িত করে নতুন প্রজন্মের কাছেও এই মহান নেতার নানান দিক সমুহ তুলে ধরার অনুরোধ জানান নতুন কমিটির সংগঠকদের প্রতি।

ডঃ নবী বলেন, “দুই বছর আগে একবার জর্জিয়া শাখার অনুমোদন দিয়েছিলাম। তবে সেটির কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় কিছুদিন আগে আবারও রুমীকে কমিটি পুনর্গঠন করার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। এখানকার জর্জিয়া আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আলী হোসেন দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের সাথে কাজ করার আগ্রহ জানিয়ে আসছিলেন, সেকারনে তার নামটিও নতুন কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির অনুরোধ করেছি। আজ আমার সত্যি আনন্দের দিন, জর্জিয়ায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনেকগুলো মুখ একসাথে দেখতে পাচ্ছি”।

নবনির্বাচিত সভাপতি রুমী কবির জর্জিয়ায় বঙ্গবন্ধুর অনুসারী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত সকল প্রবাসীকে বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রকার কর্মসূচীকে সফল করে তোলার আহবান জানান। তিনি জর্জিয়া আওয়ামীলীগ, যুবলীগসহ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সকল সংগঠনের সাথে সহযাত্রী হিসেবে পাশে থাকার অঙ্গিকার করেন এবং এই নবগঠিত সংগঠনের মধ্য দিয়ে জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রবাসে সেমিনার, গবেষণা ও মুক্তিযুদ্ধ তথা বাংলাদেশের ইতিহাসের তথ্য নির্ভর প্রকাশনা প্রকল্প প্রণয়নের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

রুমী তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধু পরিষদ যেহেতু কোন রাজনৈতিক সংগঠন নয়, একারনে এই সংগঠনটি রাজনৈতিক সভা বা কর্মসূচীর আয়োজন থেকে সর্বদা বিরত থাকবে”। তিনি বঙ্গবন্ধুকে সঠিকভাবে চেনা ও জানার জন্যে প্রবাসে নতুন প্রজন্মের অংশগ্রহণে চিত্তাকর্ষক কর্মসূচী গ্রহণের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদ কোন প্রতিদ্বন্দ্বী দল নয় উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সকল সংগঠনের সাথে সম্প্রীতির সম্পর্ক স্থাপনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং সংগঠনের উদ্যোগে আসন্ন শোক দিবসের কর্মসূচিতে আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দসহ অন্যান্য সংগঠন ও নেতৃবৃন্দকে আমন্ত্রণ জানানোর মধ্য দিয়ে জাতির পিতার আদর্শকে প্রবাসে ধারণ করতে ও ছড়িয়ে দিতে তাদের যাত্রা শুরু করবে বলে উল্লেখ করেন।

মাহবুবুর রহমান ভুঁইয়ার পরিচালনায় ওই সভার প্রথম পর্বে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চারণমূলক এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের কাদের বাহিনীর থার্ড-ইন-কমান্ড মুক্তিযোদ্ধা ডঃ নুরন নবী নয়মাসের রণাঙ্গনের নানা দুঃসাহসিক ঘটনার বর্ণনা করেন। এবছর বাংলা একাডেমী পদকপ্রাপ্ত ডঃ নবী তাঁর রচিত “জন্ম ঝড়ের বাংলাদেশ” গ্রন্থ থেকে যুদ্ধকালীন বেশ কয়েকটি উদ্ধৃতির উল্লেখ করে বিজয়ের লগ্নে কাদের বাহিনীর ঢাকা শহর জয়ের উত্তেজনাময় মুহূর্তগুলির সাবলীল বর্ণনা তুলে ধরেন।

এসময় মিসেস জিনাত নবীও মুক্তিযুদ্ধে শরণার্থী ক্যাম্পে তার সেবামুলক নানা অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেন।

আলোচনায় আরও অংশ নেন মোহাম্মদ আলী হোসেন, ডাঃ মোজাম্মেল হক, নজরুল ইসলাম, মারুফ ভূঁইয়া, রাসেল ভূঁইয়া, মাহবুব আলম সাগর ও আরফীন চৌধুরী পিয়াল।

স্মরণ করা যেতে পারে, ১৯৯৮ সালে আটলান্টায় সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধু পরিষদের শাখা গঠন করা হয়েছিল এবং এরপর পরবর্তী কমিটি গঠনে ২০০৪ সালে জর্জিয়া আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় মরহুম গোলাম রসুল, রুমী কবির, কাজী লাবীব, মাহবুব ভূঁইয়া ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল করিম রিপনকে সদস্য করে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কর্তৃক একটি আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই কমিটি পরে আর পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করতে সক্ষম হয়নি। অবশেষে দীর্ঘদিন পর ডঃ নুরন নবী আটলান্টায় এসে এই কমিটির অনুমোদন প্রদান করে গেলেন।

উল্লেখ্য, ডঃ নবী এর আগে ২৭ জুলাই থেকে তিনদিন ব্যাপী ফোবানা সম্মেলনে অংশ নেন এবং সেখানে তিনি ফোবানার প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক হিসেবে বিশেষ অবদানের জন্যে সম্মাননা পদক লাভ করেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.