সময় এখন ‘বাংলাদেশ মডেল’ বলার: রাদওয়ান মুজিব
ঢাকা: মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে নিজেদের অবস্থান স্থায়ী করছে বাংলাদেশ; এ পরিবর্তিত অবস্থায় ‘বাংলাদেশ বিস্ময়’-এর বদলে ‘বাংলাদেশ মডেল’ বলার সময় এসে গেছে বলে জানিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।
দেশের প্রথম পলিসিভিত্তিক ম্যাগাজিন হোয়াইটবোর্ডের চতুর্থ সংখ্যার সম্পাদকীয়তে এ কথা লেখেন তিনি। এতে তিনি এও বলেন, জনকেন্দ্রিক নীতিতে গড়ে উঠেছে এ ‘বাংলাদেশ মডেল’।
রাদওয়ান মুজিব জানান, ভিশন ২০২১ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রকল্পের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ মডেল’ তৈরি হয়েছে, যেখানে জনকেন্দ্রিক এমন সব নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, যা প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের প্রতি সুবিচার নিশ্চিত করার জন্য সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে। এ সময় প্রযুক্তিগত সমতার ওপর জোর দিয়ে উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি বিষয়ে দৃষ্টিপাতের কথা বলেন তিনি। যার মাধ্যমে সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব বলে মনে করেন রাদওয়ান মুজিব।
বিশেষজ্ঞদের আলোচনা-পর্যালোচনা নিয়ে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) প্রতি সংখ্যায় হোয়াইটবোর্ড ম্যাগাজিন প্রকাশ করে। এখানে জাতীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তুলনামূলক পর্যালোচনা করা হয়। হোয়াইটবোর্ডের চতুর্থ ত্রৈমাসিক সংখ্যাটি প্রকাশ হয় গত বৃহস্পতিবার (১৭ জুন), যার মাধ্যমে ম্যাগাজিনটি এক বছর পূর্ণ করতে যাচ্ছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ কেন এবং এর প্রভাব কীভাবে দেশে আইসিটি খাতকে আরও সমৃদ্ধ করছে, তার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রাদওয়ান মুজিব বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আসলে হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার এবং যোগাযোগ প্রযুক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এরমধ্যেই রয়েছে ভিশন ২০২১-এর মূলভিত্তি, যেখানে উদ্ভাবন, স্থিতিস্থাপকতা এবং মানবসম্পদের দক্ষতায় উন্নয়ন কার্যক্রম রয়েছে। জনকেন্দ্রিক উন্নয়নের মডেল রয়েছে এই ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং ভিশন ২০২১-এ।
রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক নিজেও একজন কৌশল পরামর্শদাতা এবং যুব বিষয়ক উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ নিচ থেকে উপরে বা উপর থেকে নিচে যাওয়ার কোনো উদ্যোগ নয় বরং নিম্ন বিন্দু থেকে শীর্ষ বিন্দু পর্যন্ত সবকিছু নিয়ে করা হয়েছে। সব স্থানে একযোগে এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং দেশের সব মানুষ এর ব্যবহারিক হবে বলে চিহ্নিত করা হয়
‘পরিকল্পনাটি ছিল; অবকাঠামো সুবিধা তৈরি, সবার ব্যবহারের সম সুযোগ সৃষ্টি এবং অপেক্ষা করে দেখা, কী হয়। বাংলাদেশে বিগত দশকে যেভাবে ডিজিটালাইজেশন হয়েছে, তা প্রমাণ করে উদ্ভাবন নিয়ে নীতি নির্ধারকরা যা আশা করেছিল, শেষ পর্যন্ত তা সফল হয়েছে। এই দেশের মানুষ উৎসুক হয়েই প্রযুক্তিকে গ্রহণ করেছে এবং নিজেদের দৈনন্দিন জীবনে তা বেশ সহজে কাজে লাগিয়েছে,’ হোয়াইটবোর্ড সম্পাদকীয়তে কথাগুলো বলেন রাদওয়ান মুজিব।
বাংলাদেশের নীতি নির্ধারকদের প্রভাবিত করতে সক্ষম হোয়াইটবোর্ড এবং দেশের ভেতর ও বিদেশের গবেষকদের পাশাপাশি পশ্চিমাদেরও আকর্ষিত করেছে এ ম্যাগাজিন। ম্যাগাজিনটির চালকের আসনে থেকে তা সম্ভব করে দেখিয়েছেন রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। সেইসঙ্গে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসকেও নতুন আঙ্গিকে নতুন রূপে উপস্থাপন করেছেন তিনি, যার উদাহরণ গ্রাফিক নভেল ‘মুজিব’ এবং ডকুফিল্ম ‘হাসিনা: এ ডটারস টেল’।
হোয়াইটবোর্ডের সম্পাদক রাদওয়ান মুজিব ম্যাগাজিনটির প্রথম সংখ্যায় ঘোষণা দেন, ‘এখানে কোনো বিষয়ই বাদ যাবে না’ এবং তথ্য-প্রমাণ নির্ভর বিশ্লেষণ এবং যুক্তিভিত্তিক পর্যালোচনা ও বিতর্ক থাকবে এ ম্যাগাজিনে। তার উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনেক বিশেষজ্ঞ এ লক্ষ্য পূরণে কাজ করে যাচ্ছেন।
রাদওয়ান মুজিব জানান, এ ম্যাগাজিনের মাধ্যমে বয়োজ্যেষ্ঠদের সঙ্গে তরুণদের আলোচনার একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হবে, যেখানে দেশের নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক হবে। যেকোনো পলিসি ম্যাগাজিনের চেয়ে হোয়াইটবোর্ডের লেখকদের মধ্যে বৈচিত্র্য বেশি এ কারণেই। এখন পর্যন্ত হোয়াইটবোর্ড যে বিষয়গুলো নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে, তা হলো- মুজিববর্ষ, করোনা সম্পর্কিত প্রতিকূলতা এবং স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের পথচলার শিক্ষা।
ম্যাগাজিনটির প্রথম বছর পূর্তিতে চতুর্থ সংখ্যায় দৃষ্টি নিক্ষেপ করা হয়েছে বাংলাদেশের উদ্ভাবন এবং অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈষম্য নিয়ে।
ব্লকচেইন-এর নীতি নির্ধারণ বিষয়ক গুরু হিসেবে বিশ্বে পরিচিত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রিমেভেরা দে ফিলিপি এবং বাংলাদেশি গবেষক মোরশেদ মান্নানের লেখায় ব্লকচেইনের আইনি কাঠামো নিয়ে গভীর বিশ্লেষণ এবারের সংখ্যায়। বাংলাদেশ এ বিষয় নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো কাজই করেনি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত নীতি নির্ধারক আনির চৌধুরী ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ ২.০’ কেমন হতে পারে, সে বিষয়ে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন লিখেছেন।
উদ্যোক্তা এবং অ্যাগ্রো-স্টার্টআপ আইফার্মস-এর প্রতিষ্ঠাতা ফাহাদ ইফাত বাংলাদেশের কৃষি খাত থেকে দূরে চলে আসা নিয়ে বিস্তারিত এক প্রতিবেদন লিখেছেন।