আরো এক সপ্তাহ বাড়ছে লকডাউন
ঢাকা: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান কঠোর লকডাউন আরো এক সপ্তাহ বাড়তে যাচ্ছে। সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এক সভায় লকডাউন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। তবে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনুমোদন মিললে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সরকার সারাদেশে আরও এক সপ্তাহ সর্বাত্মক লকডাউন বাড়ানোর চিন্তা ভাবনা করছে।
সোমবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ১২টায় নিজ বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্স যুক্ত হয়ে এই কথা জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে সরকার ঈদের আগে লকডাউন শিথিলেরও চিন্তাভাবনা করছে।’ সারাদেশে গত ১৪ এপ্রিল শুরু হওয়া এ সর্বাত্মক লকডাউন শেষ হওয়ার কথা ছিল ২১ এপ্রিল। তার আগেই রোববার (১৮ এপ্রিল) এক ভার্চুয়াল বৈঠকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে আরও এক সপ্তাহের জন্য ‘কঠোর লকডাউন’ আরোপের সুপারিশ করে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। প্রস্তাবিত এই লকডাউন শেষ হওয়ার আগে সংক্রমণের হার বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ারও পরামর্শ দেয় এই কমিটি। কমিটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈজ্ঞানিকভাবে দুই সপ্তাহের কম লকডাউনে কার্যকর ফলাফল আশা করা যায় না।
এজন্য জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি কমপক্ষে দুই সপ্তাহের জন্য পূর্ণ লকডাউন সুপারিশ করেছিল। সরকার ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের লক ডাউন ঘোষণা করায় কমিটি সন্তোষ প্রকাশ করেছে। লকডাউনের সময় স্বাস্থ্যসেবা, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছে কমিটি। খোলা রাখা যাবে এমন জরুরি সেবার তালিকা প্রকাশ করারও অনুরোধ জানানো হয়েছে। তা না হলে বিরূপ পরিস্থিতির আশংকা রয়েছে উল্লেখ করে সম্প্রতি চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের চলাচলে বাধা ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার বিষয় সভায় তুলে ধরা হয়। কাঁচা বাজার আবারও উন্মুক্ত স্থানে বসানোরও প্রস্তাব দেয় জাতীয় কমিটি। ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, “দেশের অর্থনীতি সচল রাখার স্বার্থে শিল্প-কলকারখানা খোলা রাখার বিষয়টি কমিটি উপলব্ধি করে। তবে, বেসরকারী দপ্তর, ব্যাংক খোলা রাখা, ক্রমবর্ধমানভাবে ব্যক্তিগত গাড়ী চলাচল, ইফতার বাজারে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত ভিড় লকডাউনের সাফল্যকে অনিশ্চিত করে।” রোববার রাতে অনুষ্ঠিত ওই ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কোভিড ১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। করোনার সংক্রমণ আচমকা বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবছর ৫ এপ্রিল থেকে প্রথম দফায় সাত দিনের ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ জারি করে সরকার। এর ধারাবাহিকতা চলে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত। ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় দফা কঠোর নিষেধাজ্ঞা। এটি চলবে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত।