ট্রাম্প-বাইডেনের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস

231

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আসন্ন মার্কিন নির্বাচন নিয়ে করা সবশেষ জাতীয় জরিপে দেখা যাচ্ছে, রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন ডেমোক্র্যাট জো বাইডেন। ব্যাটলগ্রাউন্ড হিসেবে পরিচিত দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতেও বাইডেন কিছুটা এগিয়ে থাকলেও নির্বাচনে দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাসই পাওয়া যাচ্ছে।

নির্বাচনের একদিন আগেও চার ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যে প্রচারণা চালান ট্রাম্প। সমাবেশ করেছেন। বাইডেনও নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গেছেন দুটি ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যে। দোদুল্যমান এসব রাজ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ধরে রেখে দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার আশা বাঁচিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। তবে ভোটের দিন বড় দুশ্চিন্তা করোনা।

রয়টার্স/ইপসোসের সবশেষ জরিপে দেখা যাচ্ছে, জাতীয়ভাবে বাইডেনের চেয়ে এখনও অনেকটা পিছিয়ে ট্রাম্প। দুজনের পার্থক্য আট পয়েন্ট। জাতীয় জরিপে বাইডেনের প্রতি ৫১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন থাকলেও ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন রয়েছে ৪৩ শতাংশের। ব্যাটলগ্রাউন্ডগুলোতে আবার তা ভিন্ন ভিন্ন।

বেশকিছু ব্যাটলগ্রাউন্ডে বাইডেনের সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যবধান সামান্য। এসব রাজ্যে জয় ছিনিয়ে নেয়ার মাধ্যমে ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজে জয়ী হয়ে দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার আশা করছেন ট্রাম্প। জরিপেও দেখা যাচ্ছে, ফ্লোরিডা, নর্থ ক্যারোলাইনা এবং অ্যারিজোনার মতো রাজ্যগুলোতে উভয়ই জয় পেতে পারেন।

উইসকনসিন ও মিশিগানের মতো ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যগুলোতে ১০ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন বাইডেন। আরেক ব্যাটলগ্রাউন্ড পেনসিলভেনিয়ায় এ ব্যবধান সাত পয়েন্টের। সেপ্টেম্বরে রয়টার্স/ইপসোসের জরিপ শুরুর এই তিন রাজ্যে প্রতিবার এগিয়ে ছিলেন বাইডেন। এই তিন রাজ্যেই গত নির্বাচনে জয় পান ট্রাম্প।

মিশিগান এবং উইসকনসিন ছাড়াও ট্রাম্প যদি গত নির্বাচনে যেসব রাজ্যে জয় পেয়েছিলেন তার সবগুলোতে জয় পেলেও প্রেসিডেন্ট হবেন তিনি। ফলে বাইডেন এগিয়ে থাকলেও স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না যে, জয় বাইডেনের দিকে হেলে আছে। কেননা গত নির্বাচনে ২৮ লাখ ভোট বেশি পেয়েও হেরেছিলেন হিলারি ক্লিনটন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এবার এমন আটটি অঙ্গরাজ্যকে চিহ্নিত করেছেন যেগুলো ঠিক করবে ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকবেন নাকি তাকে সরিয়ে ক্ষমতায় বসবেন জো বাইডেন। রাজ্যগুলো হলো ফ্লোরিডা, পেনসিলভানিয়া, মিশিগান, উইসকনসিন, অ্যারিজোনা, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওহাইও এবং আইওয়া।

অনেকে এ ছাড়া আরও পাঁচটি রাজ্যকে আসন্ন নির্বাচনের জন্য দোদুল্যমান রাজ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে। দেশটির ৫০টি অঙ্গরাজ্যের বেশিরভাগ ডেমোক্র্যাটের ঘাঁটি অর্থাৎ ‘নীল রাজ্য’ কিংবা রিপাবলিকানদের ঘাঁটি অর্থাৎ ‘লাল রাজ্য’ হিসেবে পরিচিত হলেও দোদুল্যমান রাজ্যের ভোট যেকোনো দিকে পড়তে পারে।

১৩ রাজ্যে দুই প্রার্থীর ব্যবধান অল্প। এসব রাজ্যের ভোটাররা কাকে ভোট দেবেন তা আগে নিশ্চিত হওয়া যায় না। তাদের মন জয়ের চেষ্টায় সোমবার ট্রাম্প যাবেন নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভেনিয়া, উইসকনসিন ও মিশিগানে আর বাইডেন যাবেন পেনসিলভেনিয়া ও ওহাইওতে।

ঐতিহ্যগতভাবে মিশিগান ও উইসকনসিন ডেমোক্র্যাটদের ঘাঁটি হলেও ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই দুই রাজ্যে সামান্য ব্যবধানে জয় পান রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাইডেন এবার হারানো এসব ডেমোক্র্যাট ঘাঁটি পুনরুদ্ধারের জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। ট্রাম্প চাচ্ছেন গত নির্বাচনের মতো সাফল্য ধরে রাখতে।

মিশিগানে ইলেকটোরাল কলেজের সংখ্যা ১৬। উইসকনসিন ১০। বাইডেন যদি গত নির্বাচনে হিলারির পাওয়া সব ভোটের সঙ্গে ট্রাম্পের কাছ থেকে এই দুই রাজ্য উদ্ধারও করেন তারপরও প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য ন্যূনতম ২৭০ ভোট হবে না। তবে এর সঙ্গে পেনসিলভেনিয়া (২০) দখলে নিতে পারলে তার জয় নিশ্চিত।

২০১৬ সালে ৩০টি রাজ্য ও মেইনে একটি মিলিয়ে ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজের ৩০৬টিতে জেতেন ট্রাম্প। অবশ্য দুজন ইলেকটর ভোট না দেয়ায় ৩০৪ ভোটও ধরা হয়। অর্থাৎ ট্রাম্প যদি গতবারের চেয়ে এবার ৩৬টি ভোটও হারান তারপরও আরও চার বছরের জন্য তিনিই হবেন প্রেসিডেন্ট।

Leave A Reply

Your email address will not be published.