বিএনপি দলীয়ভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয়ে নারী ধর্ষণ করেছে : তথ্যমন্ত্রী

164

ঢাকা: তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নারী নির্যাতন-ধর্ষণের সাথে যারাই যুক্ত থাকুক, যে পরিচয়ই ব্যবহার করুক না কেন, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে সরকার বদ্ধপরিকর।

সোমবার (০৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তানিয়া সুলতানা হ্যাপি রচিত ‘আমি হবো আগামী দিনের শেখ হাসিনা’ শিশুতোষ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

এসময় বিএনপি’র মন্তব্য ‘সরকারের জবাবদিহিতার অভাবে দেশে খুন-ধর্ষণ বাড়ছে’ এর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী এ কথা বলেন। তথ্য সচিব কামরুন নাহার অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং গ্রন্থ রচয়িতা তানিয়া সুলতানা বই পরিচিতি বক্তব্য রাখেন।

ড. হাছান বলেন, ‘এ ধরণের অপকর্মের সাথে যারা যুক্ত, তারা দুষ্কৃতিকারী, তাদের কোনো অন্য পরিচয় থাকতে পারে না। এ ধরণের দুষ্কৃতিকারীদের কঠোর হস্তে দমন করার জন্য সরকার বদ্ধপরিকর। ইতিপূর্বে এ ধরণের ঘটনায় অনেক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়েছে।’

এ ধরণের আগেও ঘটতো, কিন্তু আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এমন ব্যাপকতা না থাকায় অনেক ঘটনাই আড়ালে থেকেছে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এখন বেশিরভাগ ঘটনা আড়ালে থাকে না, প্রায় সব ঘটনাই প্রকাশ্যে আসে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যারা নারী নির্যাতন-ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার, এই বিষয়গুলো যারা তুলে ধরছেন, তাদেরকে ধন্যবাদ। এতে করে সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরণের অপকর্ম যারা ঘটাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সহজতর হচ্ছে।

এ ধরণের ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করার কোনো অবকাশ নেই, কিন্তু এগুলোকে রাজনৈতিক রূপ দেয়ার জন্য মাঝেমধ্যেই বিএনপি’র পক্ষ থেকে অপচেষ্টা চালানো হয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই বিএনপিই দলীয়ভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশে নারী ধর্ষণ করেছে।

২০০১ সালের পর ৮ বছরের শিশুকে, অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে এমনকি নৌকায় ভোট দেয়ার অপরাধে পুরো গ্রাম অবরুদ্ধ করে সেখানকার মহিলাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনো অনেকে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। সুতরাং যারা দলীয়ভাবে এ ধরনের অপকর্ম করেছে এবং এর বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই, তাদের এ নিয়ে কথা বলার কতটুকু নৈতিক অধিকার আছে, সেটিই বড় প্রশ্ন।

মন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ বলেছেন, মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। অথচ তারা সকালে একবার, দুপুরে একবার, আবার বিকেলে আরো একবার সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে। মির্জা ফখরুল সাহেব বললেন, তার সাথে প্রতিযোগিতা দিয়ে রিজভী সাহেব বা আরো দু-একজন নেতা সকাল-বিকেল-দুপুর বিষোদগার করে আর বলেন, আমাদের কথা বলার অধিকার নেই, যা হাস্যকর।

এসময় ‘আমি হবো আগামী দিনের শেখ হাসিনা’ শিশুতোষ গ্রন্থ রচয়িতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, শিশুরাই আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ এবং আজকের এই দিনে প্রধানমন্ত্রী শিশু দিবসের উদ্বোধন করেছেন, সেদিন এ গ্রন্থের যাত্রা শুরুটি তাৎপর্যপূর্ণ।

তিনি বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি, মানুষের আত্মিক উন্নয়নসমৃদ্ধ একটি উন্নত জাতি গঠন। সেজন্য মানুষের মধ্যে মমত্ববোধ, দেশাত্মবোধ, মূল্যবোধ এগুলোর সমন্বয় ঘটাতে হয় এবং সেটি শিশু বয়সেই করতে হয়। আর সেজন্য এসকল গুণে গুণান্বিতদের জীবন কাহিনী যদি শিশুরা পড়তে পারে, জানতে পারে তাহলে উন্নত জীবন গঠনে সেটি অত্যন্ত সহায়ক হয়। আর তেমনি একজন মানুষ আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা, যিনি শৈশব থেকে সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যে তার জীবনকে আজকে বিশ্ব নেতৃত্বের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন।’

তথ্যসচিব কামরুন নাহার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়ন, অগ্রগতি ও নারী ক্ষমতায়নে পৃথিবীর সামনে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। তার জীবন ও কর্ম আমাদের শিশু-কিশোরসহ সকলের জন্য অনুসরণীয়।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.