বাংলাদেশ-ভারতের অর্থনৈতিক সম্পর্কে নতুন মাইলফলক
ঢাকা: বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে গত সপ্তাহ থেকে রেল কন্টেইনারে বাণিজ্যিকভাবে পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে। দুই দেশের বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কে এটি নতুন গতি ও স্থিরতা নিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস Sheikh Hasina at helm, India-Bangladesh economic cooperation sets a new milestone এ শিরোনামে খবর প্রকাশ করেছে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুলাই দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল বন্দর দিয়ে স্থলপথের পাশাপাশি এই প্রথম রেলপথে ভারত থেকে ৫০টি কন্টেইনারে সাবান, শ্যাম্পু, ট্রেক্সটাইল ফেব্রিকসহ বিভিন্ন প্রকারের পণ্য আমদানি করা হয়। কন্টেইনার ট্রেনটি ভারতের পেট্রাপোল বন্দর হয়ে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। কন্টেইনারে পণ্য আমদানিকে দুই দেশের বাণিজ্যের নতুন আরেকটি সহজ পদ্ধতি উন্মোচিত হলো বলে মত প্রকাশ করেছেন এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা ও নয়াদিল্লীর কূটনীতিকদের মতে, কন্টেইনার ট্রেন বাংলাদেশে ভারতের পণ্য রফতানিতেও সহায়ক হবে তাই নয়, এতে কম খরচে বাংলাদেশের পণ্য তুলনামূলক কম খরচে ভারতে পৌঁছাবে। সাধারণত প্রচলিত উপায়ে পণ্য পরিবহনে দুর্নীতি, সীমান্তে চাঁদাবাজি, অতিরিক্ত খরচসহ নানা কারণে বিঘ্ন ঘটে। রেল কন্টেইনারে সে ঝামেলা থাকছে না। তাই রেল কন্টেইনারে দুই দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহনকে মাইলফলক হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন দুই দেশের কূটনীতিবিদরা। রেল কন্টেইনারে পণ্য পরিবহনে তা যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছাবে।
২০০৯ সালে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা ফের ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক আরও জোরদার হয়। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতার আসার পর দুই দেশের সুসম্পর্ক শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছায়। ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফর করেন মোদি। ওই সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে ছিটমহল বিনিময়ে স্থল সীমান্ত চুক্তির অনুসমর্থনের দলিল বিনিময় করে বাংলাদেশ ও ভারত। এর মাধ্যমে দশকের পর দশক অবরুদ্ধ জীবন কাটানো অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের মুক্তির পথ আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে যায়।
এছাড়া সন্ত্রাসীদের বিপক্ষে কঠোর অবস্থান নিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শান্তি আনয়নে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি সহায়তা করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব একাধিকবার নিজেদের মধ্যকার এ অংশীদারিত্বকে ‘সোনালী অধ্যায়’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
টানা তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি ছিল ৮.২ যা এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড সৃষ্টি করে। বাংলাদেশে চরম দারিদ্রে বসবাস করা মানুষের সংখ্যা ৯ শতাংশের নিচে কমিয়ে আনা হয়েছে। রেডিমেড পণ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উৎপাদন ক্ষেত্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয়, মাথাপিছু আয় আরও বৃদ্ধির বিষয়ে শেখ হাসিনা দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ। ভারতীয় এক কর্মকর্তা বলেন, লক্ষ্য স্থির রেখে স্বল্প সম্পদ দিয়েও কীভাবে জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন ঘটানো যায় তা করে এই অঞ্চল এবং সমগ্র বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। ১৯৭৪ সালে হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন। সেখান থেকে আজকের অবস্থায় এসে পৌঁছেছে বাংলাদেশ।