প্রথমবারের মতো মাস্ক পরে জনসমাবেশে ট্রাম্প

247

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মাস্ক পরবেন না, মাস্ক পরার দরকার নেই- এসব একগুঁয়েমি থেকে সরে আসলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথমবারের মতো মাস্ক পরা অবস্থায় জনসমাবেশে দেখা গেল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে।

শনিবার ওয়াশিংটনের বাইরে ওয়াল্টার রিড মিলিটারি হাসপাতালে পরিদর্শনে যান ট্রাম্প। সেখানে চিকিৎসাধীন অসুস্থ সেনা সদস্য ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ সময় মাস্ক পরা অবস্থায় দেখা যায় তাকে।

এ ব্যাপারে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, “আমি মনে করি, মাস্ক পরা অসাধারণ বিষয়। আমি কখনই মাস্কের বিরুদ্ধে ছিলাম না। তবে, আমি বিশ্বাস করি, সময় ও স্থান বিবেচনায় এটা পরা দরকার।”

অথচ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই মাস্ক পরা নিয়ে বিরুদ্ধে অবস্থান ছিল ট্রাম্পের। বেশ কয়েকবার বলেছিলেন, সবার মাস্ক পরার দরকার নেই। নিজেও মাস্ক পরতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক দলের প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন মাস্ক পরেছিলেন দেখে হাসি-তামাশাও করেছিলেন ট্রাম্প।

সেই অবস্থান থেকে সরে এসে শনিবার রিপাবলিকান দলের এই রাজনীতিক বললেন, “আমি মনে করি, আপনি যখন কোনো হাসপাতালে যাবেন বিশেষ করে এমন নির্দিষ্ট কর্মপরিবেশে যেখানে আপনাকে অনেক সৈনিক ও জনসাধারণের সঙ্গে কথা বলা লাগে, কোনো ক্ষেত্রে কেউ মাত্রই অপারেশন টেবিল থেকে ফিরেছেন তখন মাস্ক পরা খুব ভালো একটা ব্যাপার।”

মাস্ক পরার বিষয়ে ট্রাম্প যে নিজের অবস্থান থেকে সরে আসছেন তা গত সপ্তাহেই ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্ককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আভাস দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন- “আমি পুরোপুরি মাস্ক পরার পক্ষে।”

সাক্ষাৎকারে নিজের ব্যাপারে ট্রাম্প বলেছিলেন, মাস্ক পরলেও তাকে দেখতে অনেকটা লোন রেঞ্জারের মতো লাগে। লোন রেঞ্জার হচ্ছেন আমেরিকান কল্পকাহিনীর একজন নায়ক, যার মাস্ক পরা থাকে। আদিবাসী আমেরিকান বন্ধু টোনটোর সঙ্গে মিলে পশ্চিমা আমেরিকায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে লড়াই করে।

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব বাড় বাড়ন্ত থাকায় এই সংক্রমণ রোধে জনসাধারণকে মাস্ক পরে চলাফেরা করতে নির্দেশনা দেয় ইউএস সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি)। কিন্তু ওই নির্দেশনা মানবে না বলে জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।

“আমার মনে হয় না, আমি এটা করব। মাস্ক পরে আমি প্রেসেডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, স্বৈরশাসক, রাজা, রানিদের স্বাগত জানাচ্ছি -এমনটা দেখা যাবে বলে আমার মনে হয় না।”

বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে খবর, মাস্ক পরতে ও মাস্ক পরে ছবি তুলতে ট্রাম্পকে বারবার অনুরোধ করেছেন তার সহকর্মীরা।

যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাওয়ায় সবশেষ অঙ্গরাজ্য হিসেবে লুইজিয়ানায় জনসাধারণকে মাস্ক পরে চলাফেরা করতে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

জনস হোপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসেব মতে, চব্বিশ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ড ৬৬ হাজার ৫২৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাতে দেশটিতে মোট করোনারোগী দাঁড়াল ৩২ লাখ ৪২ হাজার।

নতুন করে মৃত্যুর তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও ৭৬০ জনের নাম। তাতে যুক্তরাষ্ট্রে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার।

Leave A Reply

Your email address will not be published.