সুনামগঞ্জের ১১টি উপজেলা বন্যাকবলিত, চরম দুর্ভোগ

192

ঢাকা: সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সুনামগঞ্জের ১১টি উপজেলা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। সুনামগঞ্জ শহরের ৫০ ভাগ বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করে মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। খবর ইউএনবি’র।

জেলা শহরের নবীনগর, ষোলঘর, কাজির পয়েন্ট, উকিল পাড়া, বড়পাড়া, তেঘরিয়া, সাহেব বাড়ি ঘাট, বিহারি পয়েন্ট, সুলতান পুর, পূর্ব ও পশ্চিম নতুন পাড়াসহ অন্যান্য এলাকার বিভিন্ন স্থানে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।

সুনামগঞ্জ শহরের পশ্চিমবাজার, মধ্যবাজার, পূর্ববাজারে পানি প্রবেশ করে দোকান পাট বন্ধ রয়েছে। সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর সড়ক, তাহিরপুর-আনোয়ারপুর সড়ক, তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়ক, সুনামগঞ্জ-আমবাড়ি সড়ক, সুনামগঞ্জ-দোয়ারাবাজার সড়কের কোনো কোনো জায়গায় পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে, মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। ধর্মপাশার চামারদানি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

ধর্মপাশার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসীর হাসান পলাশ জানান, চামারদানি ইউনিয়নের বন্যা আক্রান্ত ৮টি পরিবারকে একটি মাদরাসায় আশ্রয় দিয়ে তাদের চাল, ডালসহ খাবার দেয়া হয়েছে।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা ও থানা এলাকাতেও পানি উঠছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সমীর বিশ্বাস। তিনি বলেন, তার বাসার নীচ তলাতেও পানি উঠেছে।

তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের সোহালা গ্রামের দক্ষিণের বেড়িবাঁধ ভেঙে বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সুরমা নদী ও অভ্যন্তরীণ নদী যাদুকাটা, চলতি নদী, খাসিয়ামারা নদী, চেলানদী, মাহারাম, রক্তি, বৌলাই ও সোমেশ্বরী নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাবিবুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৯০ মিলিমিটার, যা শুক্রবার ছিল ১৫৩ মিলিমিটার। সুরমা নদীর পানি শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। যাদুকাটা নদীর পানি ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

তিনি বলেন, ভারতের চেরাপঞ্জিতে প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে আর সেই বৃষ্টি আমাদের নদ নদীতে এসে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।  শুক্রবার ভারতের চেরাপঞ্জিতে ৭২ঘণ্টায় বৃষ্টি পাত রেকর্ড করা হয়েছে ৯০২ মিলিমিটার।

সুনামগঞ্জ পৌর মেয়র নাদের বখত বলেন, সারাদিন পৌর এলাকায় ঘুরে দেখেছি শহরের অর্ধেক বাড়ি-ঘরে ও দোকানে পানি উঠেছে।

জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আহাদ জানিয়েছেন, শনিবার বিকালে জেলা দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সংসদ সদস্য জয়া সেন গুপ্ত, শামীমা শাহরিয়ার ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জয়নুল বারী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন।

জেলা প্রশাসক জানান, প্রতিটি উপজেলায় আশ্রয় কেন্দ্র ও কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে ৪১০ মেট্রিক টন জিআর চাল ও ২৯ লাখ ৭০হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। উপজেলাগুলোয় ৪৭৫২টি পরিবারের মধ্যে শিশু খাদ্য সামগ্রী বিতরণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.