সিঙ্গাপুর নেয়া হচ্ছে অচেতন নাসিমকে
ঢাকা: করোনা আক্রান্তের পর ব্রেন স্ট্রোক করা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। তাকে এখনও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে লাইফসাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি এখনও কোমায়। এমতাবস্থায় তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে গিয়ে চিকিৱসা দেয়ার প্রস্তুতি চলছে।নাসিমের পরিবার সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পরপর তিনবার নমুনা পরীক্ষা করে মোহাম্মদ নাসিমের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি। ডাক্তাররা বলছেন, তিনি এখন পুরোপুরি করোনামুক্ত। তবে নাসিম এখনো হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রেই (আইসিইউ) আছেন।
মোহাম্মদ নাসিমের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া বুধবার রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, মোহাম্মদ নাসিমের অবস্থা স্থিতিশীল। পরিবার চাইলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে বিদেশে নিতে পারে।
নাসিমের পরিবারের একটি সূত্র বৃহস্পতিবার সকালে জানায়, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে তাদের আছে। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ মেনে এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় খোঁজ নিতে শুরু করেছেন পরিবারের সদস্যরা।সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার কাগজপত্র পাঠিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে।তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়ার প্রস্তুতি চলছে।
দ্বিতীয় দফায় পর্যবেক্ষণের ৭২ ঘণ্টা শেষে আজ নাসিমের চিকিৎসায় নতুন সিদ্ধান্ত নেবে মেডিকেল বোর্ড।
প্রসঙ্গত, রক্তচাপজনিত সমস্যা নিয়ে ১ জুন রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। ওই দিনই তার করোনা শনাক্ত হয়। ৪ জুন তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও ৫ জুন ভোরে তিনি ব্রেণ স্ট্রোক করেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে দ্রুত অস্ত্রোপচার করে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। এরপর দুই দফায় ৭২ ঘণ্টায় করে পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত দেয় মেডিকেল বোর্ড।
এর মধ্যে গত সোম, মঙ্গল ও বুধবার নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হলে মোহাম্মদ নাসিমের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
মোহাম্মদ নাসিম বর্তমান সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি। তিনি আওয়ামী লীগের
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মুখপাত্রও তিনি।
মোহাম্মদ নাসিম জাতীয় নেতা শহীদ মনসুর আলীর ছেলে। তিনি পঞ্চমবারের মতো সংসদে সিরাজগঞ্জের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করার পর ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান নাসিম। পরের বছর মার্চে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও তাকে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নাসিম একসঙ্গে দুই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন ১৯৯৯ সালের ১০ মার্চ পর্যন্ত। পরে মন্ত্রিসভায় রদবদলে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরলেও সেবার মন্ত্রিসভায় জায়গা হয়নি নাসিমের। তবে পরের মেয়াদে ২০১৪ সালে তাকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করেন শেখ হাসিনা।
এবার মন্ত্রিসভায় না থাকলেও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করে আসছেন নাসিম।