টুইটার-ফেসবুকের বিরুদ্ধে নির্বাহী আদেশ দিচ্ছেন ট্রাম্প

256

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সমালোচনা মোটেই পছন্দ নয়, তার উপর এমন স্পর্ধা! খোদ প্রেসিডেন্টের বার্তার ‘সততা’ নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তোলার মতো আচরণ বরদাস্ত করতে রাজি নন ডনাল্ড ট্রাম্প৷ রাগের মাথায় তিনি রক্ষণশীল কণ্ঠ রোধ করার অপরাধে টুইটারের মতো যে কোনো ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেবার হুমকিও দিয়েছেন৷

দুটি টুইট বার্তায় ট্রাম্প এ বিষয়ে তার ক্রোধ উগরে দেন৷ ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের উপর অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে বড় মাপের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলির যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন৷ ট্রাম্পের মতে, সেক্ষেত্রে আমাদের স্বাধীনতা আর থাকবে না’৷

ঘটনার সূত্রপাত গত মঙ্গলবার৷ এ দিন টুইটার এই প্রথম প্রেসিডেন্টের এক টুইট বার্তার নীচে পাঠকদের বার্তার সততা যাচাই করার পরামর্শ দিয়েছিল৷ সেই বার্তায় ট্রাম্প ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে পোস্টাল ব্যালটের ক্ষেত্রে কারচুপি হবে বলে দাবি করেছিলেন৷

টুইটারের প্রধান জ্যাক ডরসে বুধবার বলেন, ট্রাম্পের বার্তার ফলে মানুষ ভুল পথে চালিত হতে পারেন৷ তারা মনে করতে পারেন, ভোট দেবার জন্য নিজেদের নাম নথিভুক্ত করার প্রয়োজন নেই৷

বুধবার এক মার্কিন আদালত গুগল, ফেসবুক, টুইটার ও অ্যাপল কোম্পানির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এক রক্ষণশীল গোষ্ঠী ও এক চরম দক্ষিণপন্থি ইউটিউবারের আবেদন নাকচ করে দেয়৷ সেই আবেদনেও রক্ষণশীল রাজনৈতিক কণ্ঠ রোধ করার অভিযোগ তোলা হয়৷

এমনই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার ট্রাম্প সোশাল মিডিয়া কোম্পানিগুলি সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশ জারি করতে চলেছেন বলে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ তবে এ বিষয়ে বিশদ কিছু জানা যায়নি৷

যুক্তরাষ্ট্রের সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়ন গোষ্ঠীর মতে, সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর কারণে ট্রাম্পের যে কোনো পদক্ষেপ সীমিত হতে বাধ্য৷ উল্লেখ্য, গত বছরই ট্রাম্প প্রশাসন রক্ষণশীল মতামতের ক্ষেত্রে একপেশে মনোভাব এড়াতে এক নির্বাহী আদেশ প্রস্তুত করেছিল৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটি কার্যকর হয় নি৷

ফেসবুক কোম্পানির প্রধান মার্ক সাকারবার্গ ফক্স নিউজ চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, কোনো প্রশাসনের সেন্সরশিপ নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকলে কোনো ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্ম সেন্সর করা মোটেই সঠিক ‘রিফ্লেক্স’ বা সহজাত আচরণ হতে পারে না৷ তিনি অবশ্য ট্রাম্পের বার্তা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলায় টুইটারেরও সমালোচনা করেন৷

ফেসবুক অবশ্য পোস্টাল ব্যালট নিয়ে মঙ্গলবার ট্রাম্পের দাবি সম্পর্কে সরাসরি কোনো প্রশ্ন তোলে নি৷ ফেসবুক, অ্যালফাবেট ও অ্যাপল এ বিষয়ে নীরব রয়েছে৷

সাম্প্রতিক কালে অ্যাপল, গুগল, ফেসবুক ও টুইটারের মতো কোম্পানি উভয় সংকটে পড়েছে৷ একদিকে লাগামহীন ভূয়া খবর ও মিথ্যে দাবির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবার জন্য এমন কোম্পানির উপর চাপ বাড়ছে৷ অন্যদিকে সে রকম পদক্ষেপ নিলে পক্ষপাতের অভিযোগ আনা হচ্ছে৷ সেইসঙ্গে প্রতিযোগিতার পরিবেশ দূষিত করার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল ও রাজ্য কর্তৃপক্ষ এমন কোম্পানির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা শুরু করেছে৷ মার্কিন কংগ্রেসের এক কমিটিও তদন্ত চালাচ্ছে৷ রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট দল এবং আইন মন্ত্রণালয় যোগাযোগ সংক্রান্ত একটি আইন পরিবর্তনের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে৷ তাদের মতে, ২৩০ নম্বর ধারার দৌলতে ব্যবহারকারীদের আচরণ সত্ত্বেও টেক কোম্পানিগুলি এই মুহূর্তে আইনি দায়বদ্ধতা এড়িয়ে যেতে পারছে৷ সূত্র: ডয়চে ভেলে

Leave A Reply

Your email address will not be published.