বাইরে টসটসে হলুদ, ভেতরে আঁটি কাঁচা!
ঢাকা: রাজধানীর বাজারে এরই মধ্যে উঠেছে টসটসে হলুদ রঙের পাকা আম। বাইরে দেখতে এসব আম বেশ লোভনীয়। অথচ একেবারে পাকা হলুদ এসব আমের ভেতরে আঁটি কাঁচা! কেমিক্যালে পাকানো হয়েছে এসব কাঁচা আম। আর নির্ধারিত সময়ের আগেই অপরিপক্ব এসব আম সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী।
রাজধানীর বাদামতলীতে আমের আড়তে কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো এমন বিপুল পরিমাণ আমের সন্ধান পেয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ রবিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বাদামতলীতে র্যাব এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যৌথভাবে অভিযান পরিচালিনা করেন। এতে নেতৃত্ব দেন র্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম। এ সময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এ সম্পর্কে নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, আমগুলোর বাইরে হলুদ টসটসে কিন্তু ভিতরে একদম অপরিপক্ব। যে আমগুলো বিক্রি করা হচ্ছিল সেগুলো বাজারে আসতে আরো ১০-১৫ অপেক্ষা করতে হতো। অথচ এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার আশায় অপরিপক্ব আম সংগ্রহ করছেন। কয়েকটি খেজুরের আড়তে গিয়ে দেখা যায় মেয়াদোত্তীর্ণ পচাঁ খেজুর পুনরায় প্যাকেট করে বিক্রি করা হচ্ছে। অভিযানে ১২ টি প্রতিষ্ঠানকে সর্বমোট ৪৫ টাকা জরিমানা এবং দুজনকে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
র্যাব সূত্র জানায়, গত প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন আড়তে বিভিন্ন জাতের পাকা আম বিক্রি হচ্ছে। অথচ কোনো জাতের আমই এখনও পরিপক্ক হয়নি। কৃষি বিভাগের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী কোনো জাতের আমই বাজারজাত করার এখনো সময় হয়নি।
অভিযানে দেখা যায়, সাতক্ষীরা, রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে বিভিন্ন জাতের অপরিপক্ষ আম ক্যালসিয়াম কার্বাইড দিয়ে পাকিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। আমগুলো বাহিরে হলুদ টসটসে কিন্তু কাটার পর দেখা যায় ভিতরে একদম অপরিপক্ষ, এমনকি আঁটি একেবারে নরম। এ অপরাধের কারণে ১০টি আমের আড়তে অভিযান চালিয়ে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা এবং তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জরিমানা করা আড়তগুলো হলো রমজান মিয়া আড়ৎ এর মালিক সাদেক হোসেনকে ১ লাখ টাকা, হাসানের আড়ৎকে ১ লাখ টাকা, মেসার্স রাইয়ান এন্টারপ্রাইজের দুলালকে দুই লাখ টাকা জরিমানা এবং একবছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড, একই প্রতিষ্ঠানের দিপক দাশকে দুই লাখ টাকা জরিমানা এবং এক বছরের কারাদন্ড, জব্বার ট্রেডার্সের মালিক আ. জব্বারকে দুই লাখ টাকা, নিপা এন্টারপ্রাইজের মালিক ইয়ামিন ব্যাপারীকে ৪ লাখ টাকা, আলভী এন্টারপ্রাইজের মালিক কামরুল ইসলামকে ৬ লাখ টাকা, শামীম ট্রেডার্সের মালিক শামীম সর্দারকে ৫ লাখ টাকা, বাদশা এন্টারপ্রাইজের মালিক শহীদুল ব্যাপারীকে এক লাখ টাকা, সবুজ এন্টারপ্রাইজের মালিক দাদন মিয়াকে তিন লাখ টাকা, খাদিজা এন্টারপ্রাইজের মালিক আলতাব ব্যাপারীকে দুই লাখ টাকাসহ মোট ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ছাড়াও মেয়াদোত্তীর্ণ পচাঁ খেজুর পূনরায় নতুন প্যাকেটে ভরে মেয়াদ বাড়িয়ে বাজারজাত করার অপরাধে আল্লাহর দান ফুড প্রডাক্টসেরকে ১০ লাখ টাকা এবং রুবিনা এন্টারপ্রাইজকে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।